Logo

ক্যাম্পাস

ডিআইইউ শিক্ষার্থী নিশীতার আত্নহত্যা : নেপথ্য কী?

Icon

ডিআইইউ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৯ জুলাই ২০২৫, ২০:৫৭

ডিআইইউ শিক্ষার্থী নিশীতার আত্নহত্যা : নেপথ্য কী?

নিশীতা আক্তার। ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী নিশীতা আক্তার (২৩) রাজধানীর বাড্ডায় নিজ বাসায় আত্মহত্যা করেছেন। শুক্রবার (১৮ জুলাই) সকালে বাড্ডার ছাপড়া মসজিদের পাশের একটি ভাড়া বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। 

ঘটনাস্থল থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে, যেখানে লেখা ছিল, ‘বাবা আমাকে মাফ করো। আমার কাছে একজন কিছু টাকা পায়—তাকে টাকা দিয়ে দিও।’

নিশীতা ডিআইইউ’র ইংরেজি বিভাগের ডে শিফটের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি নেত্রকোনা জেলায়।

নিশীতার ছোট ভাই আরমান ভূঁইয়ার ভাষ্য, ওইদিন সকালে তিনি আপুর অনুরোধে ওষুধ আনতে ফার্মেসিতে যান। ফিরে এসে ঘরের দরজা বন্ধ পান এবং ডাকাডাকির পরও সাড়া না পেয়ে বাবাকে ডেকে আনেন। চাবি দিয়ে দরজা খোলার পর দেখা যায়, নিশীতা সিলিং ফ্যানে ঝুলছেন।

নিষ্প্রাণ অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে ফরাজি হাসপাতাল এবং পরে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের সহপাঠী ফারজানা আক্তার জানান, সম্প্রতি নিশীতা চাকরি শুরু করায় ক্লাসে কম আসছিলেন, তবে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিলেন। তিনি বলেন, ‘সদা হাস্যোজ্জ্বল নিশীতার এমন মৃত্যু মেনে নেওয়া কঠিন। পুলিশ সুইসাইড নোট পেয়েছে, ধারণা করা হচ্ছে ব্যক্তিগত হতাশা থেকেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।’

নিশীতার পরিবার জানায়, তিনি কয়েকদিন ধরে শারীরিক অসুস্থতা ও মানসিক অস্থিরতায় ভুগছিলেন। মায়ের মৃত্যুর পর থেকে মাঝে মাঝে ‘আম্মুর কাছে চলে যাব’—এই ধরনের কথা বলতেন বলে জানান ছোট ভাই আরমান।

ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আরিফ আহম্মেদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েও একজন পেশাদার কাউন্সেলর থাকা জরুরি, যেন তারা নিজেদের সমস্যা ভাগ করে নিতে পারে। ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার দিকেও গুরুত্ব দেওয়া দরকার।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ঘটনাটি মাত্রই জেনেছি। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা দেওয়ার জন্য একজন চিকিৎসক রয়েছেন। শিক্ষার্থীদের উচিত তাদের সমস্যা শিক্ষক বা কাউন্সেলরের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া। আমরা এ বিষয়ে আরও কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

ভাটারা থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা রাকিব বলেন, ‘মরদেহ উদ্ধার করে আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের আবেদনের ভিত্তিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা দায়ের করা হয়েছে।’

নিশীতার মৃত্যুর ঘটনায় পরিবার, সহপাঠী ও বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য ও সহায়তা কাঠামো নিয়ে প্রশ্ন উঠছে সংশ্লিষ্ট মহলে।

এমএইচএস

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

আত্মহত্যা

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর