Logo

ক্যাম্পাস

ঢাবিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

Icon

ঢাবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৭ জুলাই ২০২৫, ১৯:৩৯

ঢাবিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) প্রথমবারের মত জুলাই গণঅভ্যুত্থানবিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত। রোববার (২৭ জুলাই) দিনব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে দেশ-বিদেশের ১৩টি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও সিভিল সোসাইটি সংগঠন অংশগ্রহণ করে।

ঢাকাভিত্তিক গবেষণা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটেড থট (আরআইটি) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ যৌথভাবে সম্মেলনটির আয়োজন করে। এ ছাড়া সহআয়োজক হিসেবে অংশ নেয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব রেজিনা (কানাডা), নানিয়াং টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটি (সিঙ্গাপুর), কেন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটি (যুক্তরাষ্ট্র), দ্য ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল অ্যান্ড ডিপ্লোমেসি, বাংলাদেশ ২.০ ইনিশিয়েটিভ (যুক্তরাজ্য), সোচ্চার (যুক্তরাষ্ট্র), ইনসাফ (বাংলাদেশ), সেন্টার ফর পলিসি অ্যান্ড সোশ্যাল রিসার্চ (তুরস্ক), সেন্টার ফর পলিসি অ্যানালিসিস অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি (বাংলাদেশ) এবং জাগরণ ফাউন্ডেশন (যুক্তরাজ্য)।

সম্মেলনের শুরুতে পবিত্র ধর্মগ্রন্থগুলো থেকে পাঠ করা হয়। এরপর জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ জাহিদুজ্জামান তানভীনের মা বিলকিস জামান ও বাবা শামসুজ্জামান বক্তব্য প্রদান করেন। 

ঢাবির প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ সভাপতিত্বে সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও সম্মেলনটির আহ্বায়ক ড. মো. শরীফুল ইসলাম। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয় এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। আরও উপস্থিত ছিলেন দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান, আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্টের অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিবিদ জন এফ. ডেনিলোইজ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, আমরা আজ যে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী শাসনের পতন দেখেছি, সেটার নিষ্ঠুরতা আমাদের বিবেককে সামগ্রিকভাবে ক্ষতবিক্ষত করেছে। এই শাসনব্যবস্থা রাষ্ট্রকে জনগণের বিরুদ্ধে অস্ত্রে পরিণত করেছিল। শুধু তাই নয় র‌্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে সন্ত্রাসের হাতিয়ার বানানো হয়েছিল। গুম-খুন হয়ে উঠেছিল নিত্যদিনের ঘটনা। কবি, শিক্ষক, সাংবাদিক ও ছাত্রনেতাদেরকে অপরাধী হিসেবে জেলে ভরা হয়েছিল। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মুক্ত চিন্তায় বাধা দেওয়া হতো।

জুলাই বিপ্লবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান স্মরণ করে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবারও সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়েছে। এর শ্রেণিকক্ষগুলো হয়ে উঠেছিল রণকৌশলের কেন্দ্র, ছাত্ররা হয়ে উঠেছিল বিবেকের যোদ্ধা। আমরা বিদেশি গবেষক, অধ্যাপক ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর কাছে কৃতজ্ঞ। যারা বিপজ্জনক সময়েও বাংলাদেশের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন। এ সময় তিনি পাঠ্যক্রমে জুলাই ইতিহাসকে সত্যনিষ্ঠভাবে অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লব ছিল জাতির গণজাগরণের একটি অমোঘ মুহূর্ত। এটি কেবল ছাত্রদের প্রতিবাদ ছিল না বরং পুরো জাতির বিবেকের পুনর্জাগরণ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল সেই জাগরণের প্রেরণা, কেন্দ্রবিন্দু এবং নেতৃত্বদাতা। আমাদের শ্রেণিকক্ষ হয়ে উঠেছিল রণকৌশলের মঞ্চ, ক্যাম্পাস পরিণত হয়েছিল ন্যায় ও গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামের দুর্গে।

তিনি আরও বলেন, এই সম্মেলন ইতিহাস রক্ষার দায়িত্ব যেমন পালন করছে, তেমনি ভবিষ্যতের বাংলাদেশ গঠনে এক গবেষণাধর্মী ভিত্তিও স্থাপন করছে।

উল্লেখ্য, জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে উপজীব্য করে সোমবার (২৮ জুলাই) বিকেল ৩টায় জীববিজ্ঞান অনুষদের কামাল আহমেদ লেকচার গ্যালারিতে সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে।

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর