বাকৃবির গবেষণায় দেশীয় প্রযুক্তিতে পরিবেশবান্ধব ছত্রাকনাশক উদ্ভাবনের দাবি

বাকৃবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ আগস্ট ২০২৫, ১৪:৩৮
-688dce6d01523.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) গবেষকরা দেশীয় প্রযুক্তি ও স্থানীয় অণুজীব ব্যবহার করে পরিবেশবান্ধব ও উৎপাদন‑বর্ধক একটি ছত্রাকনাশক উদ্ভাবনের দাবি করেছেন।
মাটিতে ব্যবহারের জন্য উপযোগী ‘পি.জি. ট্রাইকোডার্মা’ নামের এই ছত্রাকনাশকটি মাটি ও পানিতে ব্যবহারযোগ্য এবং মানব, প্রাণী ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর না বলে দাবি করেছেন তারা।
বাকৃবির উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহান মঞ্জিলের নেতৃত্বে গবেষক দলটি দেশীয় ট্রাইকোডার্মা এসপেরেলাম আইসোলেট ও বায়োফর্মুলেশনের মাধ্যমে ছত্রাকনাশকটির উন্নয়ন করেছে।
কৃষি রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. কে. এম. মহিউদ্দিন গুণগত মান বৃদ্ধির কাজ করেন এবং পরিবেশীয় মূল্যায়ন দায়িত্বে ছিলেন ফার্মস্ট্রাকচার ও এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আলী আশরাফ।
গবেষণায় দেখা গেছে, পি.জি. ট্রাইকোডার্মা ফসলের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, শিকড়ের পুষ্টি গ্রহণ ও বৃদ্ধিতে সহায়তা করে, এবং টমেটো, বেগুন, পালং, পানে ও চা গাছে ফলন ২০–১০০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করে। নিয়মিত ব্যবহারে রাসায়নিক সার ব্যবহার কমিয়ে ২০–২৫ শতাংশ হলেও অধিক ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
নিরাপদ খাদ্য ও পরিবেশ নিশ্চিতকরণে এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। গবেষণাটি বাকৃবির মাইক্রোবায়োলজি ও বায়োকন্ট্রোল ল্যাবে সম্পন্ন হয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে NCBI Gene Bank-এ (অ্যাকসেশন নম্বর OR125623) নথিভুক্ত হয়েছে।
মৌলভীবাজারের ফুলতলা টি এস্টেটের সহকারী ম্যানেজার শিহাব উদ্দিন জানান, ‘পি.জি. ট্রাইকোডার্মা ব্যবহার করে পূর্বের তুলনায় দ্বিগুণ ফলন পেয়েছি এবং রাসায়নিক সার ব্যবহার সার্ভ করা গেছে।’
আর নরসিংদীর পান চাষি শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, ‘গোড়াপচা রোগ নিয়ন্ত্রণে এটি কার্যকর, খরচও প্রায় অর্ধেক হয়েছে।’
বাকৃবির গবেষকবৃন্দ বলেন, প্রযুক্তিটি বর্তমানে পরীক্ষামূলক উৎপাদন পর্যায়ে রয়েছে এবং বাণিজ্যিক নিবন্ধনের প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে। দেশীয় কাঁচামাল ব্যবহার ও কম খরচে এটি কৃষকদের কাছে পৌঁছে দেবে। আরও গবেষণা ও বরাদ্দ পেলে তারা ভবিষ্যতে জৈব ইনসেক্টিসাইড ও বহুমুখী কার্যক্ষম জৈব বালাইনাশক তৈরির লক্ষ্য নিয়েছেন।
এআরএস