ঢাবিতে মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিতদের ছবি সরানো হলো শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে

ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ আগস্ট ২০২৫, ২০:৫৬

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ছাত্রশিবির আয়োজিত তিন দিনব্যাপী প্রদর্শনী থেকে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিতদের ছবি সরিয়ে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) দুপুরে ‘আমরাই ৩৬ জুলাই : আমরা থামবো না’ শীর্ষক আয়োজনে ব্যবহৃত চিত্রপ্রদর্শনীতে গোলাম আজম, মতিউর রহমান নিজামী, দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী, আলী আহসান মুজাহিদ, মীর কাশেম আলী, আব্দুল কাদের মোল্লা, কামরুজ্জামান ও সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছবি দেখে তীব্র প্রতিবাদ জানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাম ছাত্র সংগঠনগুলো।
এ সময় টিএসসি চত্বরে বিক্ষোভ শুরু করে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ ও প্রগতিশীল ছাত্রজোটের নেতাকর্মীরা। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর রফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং ছবি সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন।
প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা পরে প্রদর্শনীর বিতর্কিত অংশ থেকে এসব ছবি সরিয়ে নেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ছাত্রশিবিরের ছাত্র-আন্দোলন সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুরোধে ও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা সম্মত হয়েই ছবিগুলো সরিয়ে নিয়েছি।’
তবে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলোর অভিযোগ, ‘যুদ্ধাপরাধে দণ্ডিত ব্যক্তিদের ছবি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রস্থলে প্রদর্শন চরম অপমান ও উসকানি। এটি মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তিকে মহিমায় উপস্থাপনের কৌশল।’
প্রদর্শনীর প্রথম দিনেই এসব ছবি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। বামপন্থী নেতাকর্মীরা ছবি অপসারণের দাবি জানিয়ে সরাসরি আয়োজকদের প্রতিও প্রশ্ন তোলেন।
ছাত্রশিবিরের তিন দিনের এই আয়োজনে রয়েছে বিপ্লবী গান-কবিতা, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের স্মৃতিচারণ, মাইম, নাটক, ‘৩৬ জুলাই এক্সপ্রেস’ নামে ভ্রাম্যমাণ ট্রেন থিমে নির্মিত ডকুমেন্টারি প্রদর্শন ও ‘প্ল্যানচেট বিতর্ক’।
আয়োজকেরা জানিয়েছেন, এই আয়োজনের মাধ্যমে তারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের তাৎপর্য তুলে ধরতে এবং ছাত্ররাজনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে গণআলোচনার প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে চান।
তবে যুদ্ধাপরাধীদের ছবি প্রদর্শনের মাধ্যমে আয়োজনে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে চলছে তীব্র আলোচনা ও সমালোচনা।
এমএমআই/এমএইচএস