অযৌক্তিক অন্তর্ভুক্তকরণের বিরুদ্ধে ঢাবিতে বিক্ষোভ

ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৫, ১৮:৫২
---2025-08-13T184757-689c8a83e4d24.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
পিএসসি কর্তৃক বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে ম্যানেজমেন্ট বিভাগে অন্যান্য বিভাগের অযৌক্তিক অন্তর্ভুক্তকরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৩ আগস্ট) বেলা ১১টায় বিজনেস ফ্যাকাল্টি থেকে মিছিল নিয়ে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জড়ো হয় তারা।
এসময় ‘বিভাগ যার, ক্যাডার তার’ স্বতন্ত্র শিক্ষা ক্যাডার, আমাদের অধিকার ‘জুলাইয়ের চেতনা, স্বজনপ্রীতি মানি না’, ‘পিএসসির প্রহসন মানিনা মানবো না’, ‘দফা এক দাবি এক, স্বতন্ত্র ক্যাডার চাই।’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. সাইফুল্লাহ বলেন, ‘সূচনালগ্ন থেকেই ব্যবস্থাপনা বিভাগে স্বতন্ত্র শিক্ষা ক্যাডার চালু আছে। একজন ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থীই ব্যবস্থাপনা বিষয়ের উপর পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান রাখে। ব্যবস্থাপনা বিভাগের নিজস্ব একটা স্বকীয়তা আছে।
পিএসসি ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষকদের সাথে আলোচনা না করেই স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা আজকের মানববন্ধনে দাবি জানিয়েছিল অতিদ্রুত প্রহসনের সিদ্ধান্ত বাতিল করে ব্যবস্থাপনা বিভাগ কে স্বতন্ত্র শিক্ষা ক্যাডারে পুনর্বহাল করা।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আফসানা শারমীন আঁখি বলেন, ‘অনেক শিক্ষার্থী ব্যবস্থাপনা বিভাগে ভর্তি হয় এটা জেনে যে এই বিভাগে শিক্ষা ক্যাডার আছে। একজন শিক্ষার্থী তার অনার্স মাস্টার্স ব্যবস্থাপনা বিভাগে সম্পন্ন করে সে শিক্ষা ক্যাডারে চাকরি নিয়ে শিক্ষার্থীদের সেরাটা দিতে পারে, যা অন্য ডিপার্টমেন্ট থেকে আসা কেউ পারবেনা। পিএসসি একটি হাস্যকর সিদ্ধান্ত নিয়েছে যা ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাথে প্রহসন। আমরা এই প্রহসনের বিরুদ্ধে আজ আমাদের বিভাগের সকল শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকরা মিলে মানববন্ধন করেছি।আমরা চাই অতিদ্রুত পিএসসি তাদের এই বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে।’
ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাহমিনা খানম বলেন, ‘৫৪ বছর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস ফ্যাকাল্টি যাত্রা শুরু করেছিল দুইটি মৌলিক বিষয় ব্যবস্থাপনা এবং হিসাব বিজ্ঞান নিয়ে। সেই দুটি বিষয় ছাড়াও যুগের প্রয়োজনে আরও দুটি মৌলিক বিষয় এই ফ্যাকাল্টিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আমরা জানি যুগের প্রয়োজনে নতুন বিষয় সংযুক্ত করতে হয়। তার মানে কি এটাই যে ব্যবস্থাপনা তার সক্রিয়তা হারিয়ে ফেলেছে? তার মানে কি এটাই যে ব্যবস্থাপনা মৌলিক বিষয় নয়? আমার প্রশ্ন তারা কোন স্টেক হোল্ডারের সাথে কথা বলেছে? তারা কার সাথে কথা বলে এই বিষয়গুলো যুক্ত করেছে? তাদের এই ঘটকারি সিদ্ধান্তে কেনো দায়বদ্ধ থাকবে না তাদের জবাব দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘তারা কোন কাগজের ভিত্তিতে এটা করলেন তাদের জবাব দিতে হবে। তারা এখনো পর্যন্ত কোনো কাগজ দেখাতে পারেন নাই। আমরা পিএসসির কাছে জানতে চাই তারা আমাদের দাবি মানবে কি মানবে না!৷ যদি তারা দাবি না মানে তাহলে যেখানে যেখানে আমাদের যাওয়া প্রয়োজন, যা যা করার প্রয়োজন তাই তাই আমরা করবো। যারা আমাদের আজ রাস্তায় নামতে বাধ্য করেছেন তাদের কাছে সব জবাব চাইব। পিএসসি আমাদের শিক্ষার্থীদের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণ করছে।’
একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. কাজী মইনুদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘পিএসসি এক সপ্তাহের ব্যবধানে নোটিশ পরিবর্তন করে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এটি আমাদের ভাবাতে বাধ্য করছে। এখানে কোন দলের আধিপত্য কাজ করছে বলে মনে করি। পিএসসিকে এই হটকারীমূলক সিদ্ধান্ত এখনই স্থগিত করতে হবে। প্রশাসন যদি এটাকে সুন্দরভাবে সমাধান করেন তাহলে আমরা আমাদের ক্লাসে ফিরে যাব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কোন অশ্লীলতামূলক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে আসিনি এখানে। তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে হবে না হলে আমরা কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবো। এটা শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের দাবি নয় এটা বাংলাদেশের সকল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীদের দাবি। ম্যানেজমেন্ট বিভাগের কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অবশ্যই এই বিভাগের শিক্ষকদের সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
- এমএমআই/এমআই