নারী নিপীড়নের প্রতিবাদে জবি ছাত্রদলের বিক্ষোভ

জবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯:৫৯

ছবি : বাংলাদেশের খবর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ছাত্রশিবিরের সভাপতির প্রার্থীতার বিরুদ্ধে রিট দায়ের করা শিক্ষার্থীকে প্রকাশ্যে গণধর্ষণের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পাশাপাশি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল নেত্রীদের ওপর হেনস্থার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া শিবিরের নেতাকর্মীদের দ্বারা সারাদেশে নারী শিক্ষার্থীদেরকে অব্যাহত সাইবার বুলিংয়ের অভিযোগও উঠেছে। এইসব ঘটনার প্রতিবাদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল বিক্ষোভ মিছিল এবং অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশে সারাদেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা
এসময় নেতাকর্মীরা বলেন, ‘যে শিবির গুপ্ত রাজনীতি করে, তারা নিজেরা ছাত্রলীগের ছায়াতলে বিগত সময়ে আশ্রয় নিয়েছিল, তারা এখন নারীদের প্রকাশ্যে গণধর্ষণের পদযাত্রা করতে চায়। শিবিরের যে কর্মী এই দুঃসাহস দেখিয়েছে তাকে অতি দ্রুত আইনের আওতায় এনে, ধর্ষণের দায়ে শাস্তি কার্যকর করতে হবে।’
শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘বাংলাদেশে যদি গণধর্ষণের পদযাত্রা হতে যায়, তাহলে দেশের প্রতিটি কোণা থেকে আওয়াজ উঠবে। বাংলাদেশ রক্তের ইতিহাসের, তেভাগা আন্দোলনের মাধ্যমে মাটির অধিকার প্রতিষ্ঠার। সামান্য সুযোগ পেয়ে কিছু কিছু শক্তি মব তৈরি করে। তারা ৭১-এ যেমন মা-বোনদের দেখিয়ে দিত! আজ তারা গণধর্ষণের পদযাত্রা করতে চায়। আমাদের গণশক্তির সামনে সেসব রাজশক্তির ধর্ষকদের পুনর্জন্ম আমরা হতে দেবো না।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিছু কিছু সংগঠন গুপ্ত রাজনীতির মাধ্যমে মব সৃষ্টি করতে চায়। ফলে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করা যায় না। আলী হোসেন নিজের ফেসবুক আইডি লক করে বুঝাতে চায়, সে শিবির কর্মী নয়। এ ধরনের গুপ্ত রাজনীতি, অস্বীকৃতির রাজনীতি কোন ক্যাম্পাসে চলবে না, জগন্নাথেও চলবে না। আপনারা প্রকাশ্যে রাজনীতি করুন, আপনাদের মধ্যে কি পরিমাণ গণধর্ষক রয়েছে তা সবাই দেখতে চায়। এই গুপ্ত রাজনীতি বন্ধ না হলে, সকলের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে, ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইনটেরিমকে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাই।’
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, ‘আমরা গত ১৭ বছর নিজেদের ব্যানারে রাজনৈতিক মিছিল করেছি। এর ফলে আমাদের শত শত নেতাকর্মী হামলা, মামলা, গুম ও খুনের শিকার হয়েছেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের তিন নেতাকর্মীদের গুম করা হয়। তাদের মধ্যে একজন এখনও নিখোঁজ। কিন্তু তারপরও ছাত্রদল অন্যকোনো আশ্রয় নেয় নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘শিবিরের অনেকে ছাত্রলীগের ছায়াতলে, ব্যানারে এমনকি পোস্টেড নেতা ছিলেন। এছাড়াও জুলাই-২৪ এর পর অনেক সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাত্রলীগের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন। তাদের অপকর্ম, অন্যায়কে প্রশ্রয় দিয়েছেন। যারা ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করতে দাবি তুলেছিলেন, তারাও এখন শিবিরের সভাপতি-সেক্রেটারি। ৭১-এ আপনারা পাকিস্তানের পক্ষে কাজ করেছেন, এখনও তাদের আদর্শ ধারণ করছেন। আপনারা কখনোই বাংলাদেশ নামক দেশ চান নি।’
হিমেল আরও বলেন, ‘২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানে সকল ছাত্র সংগঠনের ভূমিকাকে আমরা স্বীকার করি। কিন্তু ২৪ এর প্রেক্ষাপট ধরে যদি আপনারা নব্বই, একাত্তর, সত্তর, ঊনষাটসহ সকল স্বাধিকার আন্দোলনকে পিছনে ফেলতে চান, বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা তা মেনে নেবে না।’
এসময় শাখা ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
জেএন/এএ