জাকসু নির্বাচনে জনের প্রার্থীতা বাতিল, আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি

জাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭:৫০
-68bec2f3aa4ed.jpg)
অমর্ত্য রায় জন। ছবি : সংগৃহীত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেলের প্রার্থী অমর্ত্য রায় জনের প্রার্থীতা বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন।
এ বিষয়ে সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছে। অন্যদিকে অমর্ত্য রায় জন এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী অমর্ত্য রায় জন ২০২১ সালের স্নাতক (সম্মান) চূড়ান্ত পরীক্ষায় দুটি কোর্সে অকৃতকার্য হন। পরবর্তী ব্যাচের সঙ্গে মানোন্নয়ন পরীক্ষায় অংশ নিয়েও উত্তীর্ণ হতে পারেননি। ২০২৫ সালে দ্বিতীয়বার মানোন্নয়ন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একটি কোর্সে কৃতকার্য হলেও আরেকটিতে অকৃতকার্য থাকেন।
পরীক্ষা অধ্যাদেশ ২০০৩ অনুযায়ী একই কোর্সে একজন শিক্ষার্থী কেবল একবার মানোন্নয়ন পরীক্ষা দিতে পারবেন। অমর্ত্য রায় জন দুইবার মানোন্নয়ন পরীক্ষায় অংশ নেওয়ায় এটি বিধিবহির্ভূত। যদিও শিক্ষা পর্ষদ মানবিক বিবেচনায় দ্বিতীয়বারের পরীক্ষাকে ‘বিশেষ পরীক্ষা’ হিসেবে গণ্য করার সুপারিশ করে এবং সিন্ডিকেট তা অনুমোদন দেয়।
প্রশাসনের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি অনিয়মিত শিক্ষার্থী হিসেবে পরিগণিত হওয়ায় জাকসুর গঠনতন্ত্রের ৪ ও ৮ ধারার আলোকে তাকে ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। ফলে তাঁর নাম ভোটার ও প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়।
অমর্ত্য রায় জনকে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছিল। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে তার পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। আশুলিয়া থানার একটি মামলায় তিনি অব্যাহতি পাওয়ার পর সিন্ডিকেট বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে। এ বছরের ১ সেপ্টেম্বর একাডেমিক কাউন্সিল বিশেষ বিবেচনায় তাকে স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার অনুমতি দেয়।
অমর্ত্য রায় জন প্রার্থীতা বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন। রোববার তার পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও জাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে একটি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়।
নোটিশে বলা হয়, অমর্ত্য রায় জন বিশ্ববিদ্যালয়ের সক্রিয় ছাত্রনেতা এবং বিগত স্বৈরাচারী সরকারের সময়ে ক্যাম্পাসে বিভিন্ন আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন। শিক্ষকদের চাপের মুখে তাকে বহিষ্কার করা হলেও পরে আদালতের নির্দেশে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পান এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নেয়।
নোটিশে আরও উল্লেখ করা হয়, যাচাই–বাছাই শেষে ২৯ আগস্ট প্রকাশিত চূড়ান্ত প্রার্থীতালিকায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত থাকলেও ৬ সেপ্টেম্বর হঠাৎ প্রার্থীতা বাতিল করা হয়। এ সিদ্ধান্তকে ‘অবৈধ, স্বেচ্ছাচারী এবং মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে।
অমর্ত্য রায়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী ১১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় জাকসু নির্বাচনে তাকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না দিলে হাইকোর্টে রিট করা হবে এবং এর দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে।
এআরএস