Logo

ক্যাম্পাস

চাকসু নির্বাচনে ১৭ আচরণবিধি, লঙ্ঘনে দণ্ড ও ২০ হাজার জরিমানা

Icon

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯:২৭

চাকসু নির্বাচনে ১৭ আচরণবিধি, লঙ্ঘনে দণ্ড ও ২০ হাজার জরিমানা

ছবি : বাংলাদেশের খবর

১৭টি পয়েন্টে শতাধিক উপপয়েন্ট জুড়ে দিয়ে আচরণবিধি দিল চাকসু নির্বাচন কমিশন। বিধি কার্যকর হবে আগামী রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) থেকে। বিধি লঙ্ঘন করলে দণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে চাকসুর আচরণবিধি নিয়ে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন- চাকসু নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন। কমিটির সদস্যসচিব শহিদ আব্দুর রব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. এ কে এম আরিফুল হক সিদ্দিকী, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৈয়ব চৌধুরি (ডিন, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ); অধ্যাপক ড. মু. আফর উল্লাহ তালুকদার (ডিন, আইন অনুষদ); অধ্যাপক ড. বেগম ইসমত আরা হক (প্রভোস্ট, শামসুন নাহার হল); অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন (পরিচালক, ছাত্র-ছাত্রী পরামর্শ ও নির্দেশনা কেন্দ্র); অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ (প্রক্টর); অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমদ ও অধ্যাপক ড. আমির মুহাম্মদ নসরুল্লাহ (লোকপ্রশাসন বিভাগ); অধ্যাপক ড. রুমানা আক্তার (সভাপতি, মনোবিজ্ঞান বিভাগ); অধ্যাপক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান চৌধুরি (ইনস্টিটিউট অব মেরিন সায়েন্সেস); সহকারী অধ্যাপক গোলাম হোসেন হাবিব (ইংরেজি বিভাগ)।

কমিশন জানিয়েছে, নির্বাচন একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতন্ত্রের চর্চা ও ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও হল সংসদসমূহের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ সমূহের নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গণতন্ত্রে বিশ্বাসী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া পুনরুজ্জীবিত ও এর ধারাবাহিকতা রক্ষার লক্ষ্যে আগামী ১২ অক্টোবর ২০২৫ চাকসু ও হল সংসদ ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে। এই নির্বাচন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চাকসুর ২০২৫-২০২৬ কার্যকালের নির্বাচন হিসেবে গণ্য হবে।

নির্বাচন কমিশন আরো জানিয়েছে, নির্বাচিত চাকসু ও হল সংসদসমূহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশকে সমুন্নত ও আরো সুসংহত করতে কাজ করবে বলে আমাদের বিশ্বাস। সুস্থ গণতন্ত্র চর্চার ঐতিহ্যবাহী লালনভূমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। আমরা মনে করি সেই ধারাবাহিকতায় যোগ্য নেতৃত্ব তৈরি করতে এ নির্বাচন ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করবে যা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন রাখতে সহায়ক হবে। সৌহাদাপূর্ণ পরিবেশ, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, ও পরমত সহিষ্ণুতা ভোটদান ও নির্বাচনকে প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে। চাকসু ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হল সংসদসমুহের নির্বাচন যাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় সে জন্য গঠিত নির্বাচন কমিশন এবং জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

১৭ আচরণ বিধি হলো-

১. শিরোনাম

(ক) এই বিধিমালা "চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন আচরণবিধিমালা ২০২৫" নামে অভিহিত হবে। (খ) এই বিধিমালা চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণার দিন হতে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার সময় পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।

২. মনোনয়নপত্র সংগ্রহ, দাখিল ও প্রার্থিতা প্রত্যাহার

(ক) মনোনয়নপত্র সংগ্রহ এবং দাখিলের সময় কোনো প্রকার মিছিল বা শোভাযাত্রা করা যাবে না। প্রার্থী পাঁচজনের বেশি সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে আসতে পারবেন না।

(খ) কোনো প্রার্থী কর্তৃক রিটার্নিং অফিসারের নিকট মনোনয়নপত্র দাখিল এবং প্রার্থীতা প্রত্যাহারের সময় অন্য কোনো প্রার্থী বা ব্যক্তি, গোষ্ঠী যা অন্য কোন সংগঠনের কেউ কোনো প্রকার বাঁধা বা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারবেন না।

গ) প্রার্থীকে সশরীরে উপস্থিত হয়ে প্রার্থীতা প্রত্যাহার করতে হবে।

ঘ) ডোপ টেস্টে রিপোর্ট পজিটিভ হলে প্রার্থীর প্রার্থীতা বাতিল বলে গণ্য হবে। (রিভিউ কমিটির চূড়ান্ত মতামতের পর।

৩. নির্বাচনে যানবাহন ব্যবহার

(ক) কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তাঁর পক্ষে মনোনয়নপত্র জমাদান, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার বা নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো ধরনের যানবাহন, মোটরসাইকেল, রিকশা, ঘোড়ার গাড়ি, হাতি, ব্যান্ড পার্টি ইত্যাদি নিয়ে কোনরূপ শোভাযাত্রা, শোডাউন বা মিছিল করতে পারবে না। 

(খ) নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রে বা ভোটকেন্দ্র হতে ভোটারদের আনা-নেয়ার জন্য কোনো প্রকার যানবাহন (৩(ক) অনুচ্ছেদে উল্লিখিত) ব্যবহার করা যাবে না।

(গ) নির্বাচনের দিন শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার সুবিধার্থে শুধু চিফ রিটার্নিং অফিসার/রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক অনুমোদিত যানবাহন (স্টিকারযুক্ত গাড়ি/যানবাহন) নির্বাচনী এলাকায় চলাচল করতে পারবে।

(ঘ) স্টিকারসহ যানবাহন চলাচলের বিষয়টি প্রক্টর অফিস তত্ত্বাবধান করবে।

(৪) । নির্বাচনের দিন প্রার্থী।/ভোটার/শিক্ষার্থীরা ভোট কেন্দ্রে আসার ক্ষেত্রে বাই-সাইকেল, অটো ও রিকশা (বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে চলাচলকারী) ব্যবহার করতে পারবে।

৪. নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা

(ক) নির্বাচনী প্রচারের ক্ষেত্রে সকল প্রার্থী সমান অধিকার পাবেন।

(খ) প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার দিন থেকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার দিনের ২৪ ঘণ্টা পূর্ব পর্যন্ত প্রচার প্রচারণা করতে পারবেন। প্রতিদিন প্রচারের সময় সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে। তবে সন্ধ্যার পরে ক্যাম্পাস এলাকায় কোনো ধরনের প্রচারকার্যে মাইক ব্যবহার করা যাবে না (ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ালেখার ব্যাঘাত না ঘটার জন্য)।

(গ) চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোটার/প্রার্থী ব্যতীত অন্য কেউ কোনোভাবেই কোনো প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় প্রচার চালাতে পারবেন না।

(ঘ) নির্বাচনের জন্য সমীচীন নয় এমন যে কোন কার্যক্রম বন্ধে নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবেন। (৬) ক্লাস-পরীক্ষাসহ শিক্ষা কার্যক্রমে কোন প্রকার প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করা যাবে না সেদিকে প্রার্থী বা তার সমর্থকদের সজাগ দৃষ্টি রাখবেন।

৫. অনলাইন/সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার

(ক) অনলাইন/সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার চালানো যাবে তবে তা অবশ্যই আইনসিদ্ধ ইতিবাচক পদ্ধতিতে হতে হবে।

(খ) দেশের প্রচলিত আইনে নিষিদ্ধ কোনো কাজ করা যাবে না।।

( গ) নির্বাচনী প্রচারণায় ও প্রচারপত্রে কিংবা প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রনিক মিডিয়া, ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যক্তিগত আক্রমণ, চরিত্র হনন, গুজব, মানহানিকর আচরণ, অশালীন উক্তি ও উসকানিমূলক কোন কথা কিংবা কোন অসত্য তথ্য ছড়ানো যাবে না এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এমন কোন বক্তব্য ব্যবহার করা যাবে না।

(ঘ) এ ধরনের কোন অভিযোগ পাওয়া গেলে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক নির্বাচনের জন্য ক্ষতিকর যে কোন অনলাইন সাইট/গ্রুপ বন্ধের বিষয়ে এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবেন।

৬. নির্বাচনী সভা, সমাবেশ ও শোভাযাত্রা।

(ক) কোনো প্রার্থী বা তাঁর পক্ষে কোনো সভা/সমাবেশ/শোভাযাত্রা করতে চাইলে দিন, সময় ও স্থান উল্লেখপূর্বক চীফ রিটার্নিং অফিসার/সংশ্লিষ্ট হলের অফিসারের নিকট হতে লিখিত অনুমতি নিতে হবে। এইরূপ অনুমতি লিখিত আবেদন প্রাপ্তির সময়ের ক্রমানুসারে প্রদান করা হবে। ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিতব্য সভার স্থান ও সময় সম্পর্কে প্রক্টরকে পূর্বেই অবহিত করতে হবে।

(খ) নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো প্রার্থী নিজের সাদাকালো ছবি ব্যতীত লিফলেট বা হ্যান্ডবিল-এ অন্য কারো ছবি বা প্রতীক ব্যবহার করতে পারবে। না।

(গ) সভা/সমাবেশ/শোভাযাত্রা করার অনুমতি অন্তত ২৪ ঘন্টা পূর্বে গ্রহণ করতে হবে।

(ঘ) একজন প্রার্থী বা একটি প্যানেলের পক্ষে প্রতিটি হলে ১টি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩টি প্রজেকশন মিটিং করতে পারবে।

(ঙ) কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে কোনো সংগঠন হলের অভান্তরে বা ক্যাম্পাসে চীফ রিটার্নিং অফিসার/রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক অনুমোদিত স্থান ব্যতীত কোনো সভা, সমাবেশ বা শোভাযাত্রা করতে পারবে না।

(চ) নির্বাচনী কার্যক্রম চলাকালে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে অবশ্যই নিজ নিজ পরিচয়পত্র বহন করতে হবে। 

(ছ) বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায় জনগণ ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে এমন সড়কে জনসভা পরসভা প্রমাবেশ

(জ) এমনকি কোনো মঞ্চ তৈরী করা যাবে না। পাঠদান ও পরীক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে এমন কোনো স্থানে (যেমন-শ্রেণিকক্ষ, পাঠকক্ষ, পরীক্ষার হল ইত্যাদি) সভা/সমাবেশ বা নির্বাচনী প্রচারণা চালানো যাবে না। শ্রেণিকক্ষের ভিতরে ও করিডোরে মিছিল করা যাবে না।

(ঝ) কোনো ধর্মীয় উপাসনালয়ে (যেমন-মসজিদ, মন্দির, গির্জা ইত্যাদি) কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচারণা চালানো যাবে না।

(ঞ) বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায় সভা, সমাবেশে ও অডিটোরিয়ামে মাইক ব্যবহার করা যাবে। তবে কোনোক্রমেই সন্ধ্যার পরে মাইক ব্যবহার করা যাবে না।

(ট) প্রতিপক্ষের সভা/সমাবেশ, শোভাযাত্রা এবং অন্যান্য প্রচারাভিযান ব্যাহত বা পন্ড হতে পারে বা গোলযোগ সৃষ্টি হতে পারে এমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবে না।

(ঠ) কোনো সভা, সমাবেশ, শোভাযাত্রা বা নির্বাচনী প্রচার কাজে বাধাদানকারী বা গোলযোগ সৃষ্টিকারীর বিরুদ্ধে রিটার্নিং অফিসার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন [১৭ (খ) অনুচ্ছেদে উল্লেখিত]।

(ড) নির্বাচনকালীন সময়ে কোনো বহিরাগত কোন আবাসিক হলে অবস্থান করতে পারবে না। যদি কেউ এই আদেশ অমান্য করে তবে তৎক্ষণাৎ তাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে সোপর্দ করা হবে।

৭. পোস্টার, লিফলেট, হ্যান্ডবিল ও দেয়াল লিখন

(ক) নির্বাচনী প্রচারণায় শুধুমাত্র সাদা-কালো পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল ব্যবহার করা যাবে। এক্ষেত্রে পোস্টারের আকার অনধিক ৬০ সে.মি. × ৪৫ সে.মি. হতে হবে।

(খ) পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল-এ কোনো প্রার্থী নিজের সাদাকালো ছবি ব্যতীত অন্য কারো ছবি বা প্রতীক ব্যবহার করতে পারবে না। 

(গ) বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও হল এলাকায় অবস্থিত কোনো প্রকার স্থাপনা, দেয়াল, যানবাহন, বেড়া, গাছ-পালা, বিদ্যুৎ ও টেলিফোনের খুটি বা অন্য কোনো দণ্ডায়মান বস্তুতে পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল লাগানো যাবে না।

ঘ) কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল-এর ক্ষতিসাধন করা যাবে না।

(ঙ) কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে কোনো সংগঠন, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী কোনো কালি বা চুন বা কেমিক্যাল দ্বারা দেয়াল বা যানবাহনে কোনো লিখন, মুদ্রণ, ছাপচিত্র বা চিত্রাঙ্কন করে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারবে না।

৮. আলোকসজ্জা ও স্থাপনা (স্থায়ী/অস্থায়ী)

(ক) কোনো প্রার্থী যা তার পক্ষে কোনো সংগঠন, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী গেইট, তোরণ, ঘের নির্মাণ, ক্যাম্প ও আলোকসজ্জা করতে পারবে না।

(খ) কেউ চাইলে নির্বাচনী প্রচারণার জন্য প্যান্ডেল, শামিয়ানা কিংবা মঞ্চ অস্থায়ীভাবে স্থাপন করতে পারবে।

৯. অনুদান, খাদ্য পরিবেশন ও উপঢৌকন প্রদান এবং পোশাকে প্রচারণামূলক বক্তব্য

(ক) কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে কোনো সংগঠন, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী নির্বাচনকে লক্ষ্য করে বা কেন্দ্র করে বছর ব্যাপি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোনো শিক্ষার্থী/সংগঠন/কোনো প্রতিষ্ঠানে চাঁদা, অনুদান, আর্থিক লেনদেন ইত্যাদি করতে পারবে না।

(খ) নির্বাচনী প্রচার চলাকালে ও নির্বাচনের দিন ভোটারদের কোনোরূপ পানীয় বা খাদ্য পরিবেশন করা যাবে না।

(গ) ভোটারদের কোনোরূপ উপঢৌকন বা বকশিস্ ইত্যাদি প্রদান করা যাবে না।

(ঘ) নির্বাচনী প্রচারণার জন্য কোনো প্রার্থীর ছবি বা তার পক্ষে প্রচারণামূলক কোনো বক্তব্য বা অন্য কারো ছবি বা প্রতীকের চিহ্ন সম্বলিত শার্ট, টি-শার্ট, জ্যাকেট, ফতুয়া বা কোনো ধরনের পোশাক ব্যবহার করা যাবে না।

১০. উসকানিমূলক বক্তব্য বা বিবৃতি প্রদান এবং উচ্ছৃঙ্খল আচরণ

(ক) নির্বাচনী প্রচারণাকালে ব্যক্তিগত চরিত্র বা সংগঠনকে লক্ষ্য করে আক্রমণাত্মক বক্তব্য প্রদান, গুজব হড়ানো বা কোনো ধরনের তিক্ত বা উসকানিমূলক বা মানহানিকর কিংবা লিঙ্গ, সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মানুভূতিতে আঘাত লাগে এমন কোনো বক্তব্য প্রদান করা বা গণমাধ্যম কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা যাবে না। 

(খ) এ রকম অভিযোগ উপযুক্ত তথ্য প্রমাণসহ রিটার্নিং কর্মকর্তার নিকট দাখিল করা যাবে। তিনি বিষয়টি যাচাই করবেন এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন।

(গ) উচ্ছৃঙ্খল, শৃঙ্খলা বিনষ্টকারী কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ ও শান্তি বিনষ্টকারী আচরণের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(ঘ) কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা ভোটারকে ভয়-ভীতি প্রদর্শন, বলপ্রয়োগ ও ভোটদানে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।

১১. প্রচারণার জন্য ছেলে শিক্ষার্থীদের মেয়েদের হলে এবং মেয়ে শিক্ষার্থীদের ছেলেদের হলে প্রবেশাধিকার

(ক) নির্বাচনী প্রচারণার উদ্দেশ্যে ছেলে প্রার্থী/শিক্ষার্থীরা মেয়েদের হলে ও মেয়ে প্রার্থী/শিক্ষার্থীরা ছেলেদের হলে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি নিয়ে শুধু প্রজেকশন সভায় যোগদানের উদ্দেশ্যে প্রবেশ করতে পারবে।

(খ) তবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট হলের নিয়মাবলি অনুসরণে হল রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি সাপেক্ষে ব্যতিক্রমী হতে পারে।

১২. ভোটকেন্দ্রে প্রবেশাধিকার

(ক) ভোটাররা নিজ নিজ হলের বৈধ পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করবে।

(খ) নির্বাচনী কর্মকর্তা-কর্মচারী, প্রার্থী, পোলিং এজেন্ট, রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক অনুমোদিত ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কেউ ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে। পারবে না। ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা তাদের নির্ধারিত স্থানে অবস্থান করবেন।

(গ) চিফ রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক ইস্যুকৃত পরিচয় পত্র দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট হলের রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি সাপেক্ষে গণমাধ্যমকর্মীরা ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন এবং ছবি তুলতে পারবেন। তবে ভোটকেন্দ্রের বুথসমূহে প্রবেশ করতে পারবেন না। উল্লিখিত সকলকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে পূর্বেই পরিচয়পত্র সংগ্রহ করতে হবে।

(ঘ) ভোটকেন্দ্রের অভ্যন্তরে বুথ ছাড়া অন্যান্য স্থানে লাইভ সম্প্রচার চালানো যাবে। উল্লেখ্য এক সাথে একই সময় টিভি চ্যানেলের দুইজন এবং সংবাদমাধ্যমকর্মীদের একজন ভোট কেন্দ্রে প্রবেশের অনুমতি পাবেন।

(ঙ) ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের পর মোবাইল ফোন ও ইলেকট্রনিক যোগাযোগের সকল মাধ্যম বন্ধ সংশ্লিষ্ট স্থানে ইলেকট্রনিক ডিভাইস জমা রাখতে হবে। বুথের অভ্যন্তরে কোনোভাবেই এ ধরনের কোন ডিভাইস ব্যবহার করা যাবে না বা কোন প্রকার ছবি তোলা যাবে না।

১৩. ভোটকেন্দ্রে অবস্থান

(ক) ভোটাররা নিজ নিজ হলের বৈধ পরিচয়পত্র প্রদর্শন করে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করবে।

(খ) ভোটদানের পর ভোটারদের অবিলম্বে ভোট কেন্দ্র ত্যাগ করতে হবে।

(গ) ভোটদানের উদ্দেশ্যে ভোটের লাইন ব্যতীত ভোট কেন্দ্রের অভ্যন্তরে জটলা তৈরী করা যাবে না এবং দীর্ঘ সময় অবস্থান থাকতে পারবে না।

(ঘ) ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের পর মোবাইল ফোন ও ইলেকট্রনিক যোগাযোগের সকল মাধ্যম বন্ধ রাখতে হবে। বুথের অভ্যন্তরে কোনভাবেই এ ধরনের কোন ডিভাইস ব্যবহার করা যাবে না বা কোনো প্রকার ছবি তোলা ও ভিডিও করা যাবে না।

১৪. বহিরাগত প্রবেশ

(ক) নির্বাচনের দিনে ভোটার এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারি ও অনুমতিপ্রাপ্ত ব্যক্তি ব্যতীত ক্যাম্পাসে অন্য সকলের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে।

১৫. ভোটার স্লিপ প্রদান।

(ক) কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কেউ নির্বাচনের দিন ভোটার স্লিপ প্রদান করতে পারবে।

(খ) তবে শর্ত থাকে যে ভোট কেন্দ্রের ১০০ মিটারের মধ্যে কোনোভাবেই ভোটার স্লিপ বিতরণ করা যাবে না।

১৬. বিস্ফোরক, দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র বহন:

(ক) নির্বাচনী প্রচারণা ও নির্বাচন চলাকালে বিস্ফোরক, দেশীয় অস্ত্র (যেমন: লাঠি-সোটা, রড, হকিস্টিক, ছুরি-কাঁচি ইত্যাদি) ও আগ্নেয়াস্ত্র বহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। 

(খ) আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য বা অনুমোদিত ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কেউ দেশীয় অস্ত্র বা অন্য কোন আগ্নেয়াস্ত্র বহন করতে পারবে না।

১৭. নির্বাচনী আচরণবিধিমালা লঙ্ঘন

(ক) নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করলে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তি ও তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার প্রয়োজনবোধে স্বপ্রণোদিতভাবে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থাও গ্রহণ করতে পারবে।

(খ) কোন প্রার্থী বা তাঁর পক্ষে কেউ নির্বাচনী আচরণ বিধি ভঙ্গ করলে সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা জরিমানা, প্রার্থীতা বাতিল অথবা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার অথবা রাষ্ট্রীয়/বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী অন্য যে কোনো দণ্ডে দণ্ডিত হবে।

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর