Logo

ক্যাম্পাস

নাকসু গঠনতন্ত্রে শিক্ষার্থীদের সংশোধনী প্রস্তাব

Icon

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:২৪

নাকসু গঠনতন্ত্রে শিক্ষার্থীদের সংশোধনী প্রস্তাব

ছবি : সংগৃহীত

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (নাকসু) গঠনতন্ত্রে সংশোধনী প্রস্তাব জমা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলমের কাছে স্মারকলিপিসহ এই সংশোধনী জমা দেয়া হয়। তবে এই সংশোধনী ঘিরেই ক্যাম্পাসে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে।

প্রশাসন প্রদত্ত খসড়া গঠনতন্ত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি এবং মনোনীত অধ্যাপককে কোশাধ্যক্ষ হিসেবে রাখা হয়। বাকি ২১টি পদে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়।

এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ তোলেন, সভাপতির পদে উপাচার্যের অতিরিক্ত ক্ষমতা থাকায় ছাত্র প্রতিনিধিদের স্বাধীন ভূমিকা ব্যাহত হবে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বরাবর স্মারকলিপি দিয়ে সংশোধনী প্রস্তাব জমা দেন। এতে দাবি করা হয়, ভিপি ও সাধারণ সম্পাদককে সিন্ডিকেট, একাডেমিক কাউন্সিল এবং নিয়োগ বোর্ডে সদস্য করা হোক, অন্য পদগুলো প্রশাসনিক বিভিন্ন কমিটিতে যুক্ত করা হোক, নির্বাচনে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক কমিটি গঠন করা হোক এবং ভোটার ও প্রার্থিতা নির্ধারণে প্রশাসনের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক।

তবে সংশোধনীর ২(খ) ধারা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা তৈরি হয়েছে। ওই ধারায় বলা হয়েছে, স্নাতক সম্পন্ন করা শিক্ষার্থীরা কোনও কোর্সে ভর্তি না থাকলেও ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পাবেন। এর শর্ত অনুযায়ী, তাদের প্রতি বছর ছাত্র সংসদ ফি দিতে হবে, সর্বোচ্চ দুইবার প্রার্থী হওয়ার সুযোগ থাকবে, তবে আবাসিক সুবিধা পাবেন না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থীরা এ ধারাকে ‘অযৌক্তিক’ বলে মন্তব্য করেছেন। তাদের দাবি, এর ফলে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা জোর করে ক্যাম্পাসে প্রভাব বিস্তার করতে পারবেন এবং প্রকৃত শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হবেন।

হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যপদ্ধতি বিভাগের শিক্ষার্থী নুর আলম নাহিদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘যারা সংশোধনী লিখেছে তারা বর্তমান শিক্ষার্থী নন, অথচ নিজেদের সাধারণ শিক্ষার্থী পরিচয়ে চাপিয়ে দিচ্ছেন। এতে প্রকৃত ছাত্রদের ক্ষতি হচ্ছে।’

এ ছাড়াও অনেক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেছেন, এমফিল শিক্ষার্থীদের প্রার্থীতা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাদের মতে, প্রস্তাবিত সংশোধনী ছাত্র সংসদকে কার্যকর করার পরিবর্তে আরও বিভ্রান্তি তৈরি করছে।

অন্যদিকে ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থী ঐশ্বর্য সরকার বলেন, ‘প্রথম থেকেই সভাপতির ক্ষমতা কমানো ও সিন্ডিকেটে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি রাখার দাবি জানাচ্ছি। কিন্তু প্রশাসন প্রদত্ত খসড়ায় শিক্ষার্থীদের স্বার্থ উপেক্ষা করা হয়েছে। এতে ছাত্র সংসদ প্রশাসনের লেজুড়বৃত্তিক সংগঠনে পরিণত হবে।’

আইন ও বিচার বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী জেনাস ভৌমিক বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিপি-জিএস সিন্ডিকেটে প্রশ্ন করতে পারে এবং তাদের জন্য তহবিলও থাকে। কিন্তু এখানে কোষাধ্যক্ষ চাইলে ভিপি-জিএস ছাড়াই টাকা তুলতে পারবেন উপাচার্যের সঙ্গে। এতে ছাত্র সংসদ কার্যকর হবে না।’

খসড়া ও সংশোধনী প্রকাশের পর থেকেই ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে। ফলে নাকসুর ভবিষ্যৎ কাঠামো নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রদত্ত ছাত্র সংসদ গঠনের রোডম্যাপে জানানো হয় ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে খসড়া গঠনতন্ত্র ইউজিসিতে পাঠিয়ে আইন প্রণয়ন ও অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হবে। কিন্তু চলমান বিতর্কে ছাত্র সংসদ গঠন নিয়ে দীর্ঘসূত্রিতা বাড়ছে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা। 

  • মো. সাইফুল ইসলাম/এমআই

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

নির্বাচন

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর