পাবিপ্রবিতে ছাত্রদলের নবীন বরণ পেলেন ৪ শতাধিক শিক্ষার্থী
পাবিপ্রবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৪৪
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি) ছাত্রদলের উদ্যোগে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রায় চারশতাধিক নবীন শিক্ষার্থীকে বরণ করা হয়েছে।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) পাবনার রত্নদ্বীপ রিসোর্টে নানা আয়োজনের মাধ্যমে নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করা হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় সংসদের সহসভাপতি মাকসুদুর রহমান সুমিত। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সংসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারহান মো. আরিফুর রহমান ও কাইয়ুম উল হাসান (কাইয়ুম)।
বিকেল সাড়ে ৩টায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি মুজাহিদ হোসেন। এতে সাধারণ সম্পাদক কে এম তরিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় পবিত্র কুরআন ও গীতা পাঠের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর জাতীয় সংগীত, ছাত্রদল সংগীত ও ২৪-এর অভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে অতিথিদের ফুল দিয়ে নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করা হয়।
নবীন শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ইংরেজি বিভাগের ইয়াসিন আলী ও অর্থনীতি বিভাগের সাকিব হোসেন বক্তব্য রাখেন। এরপর একে একে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র পাবনা জেলার সাবেক সদস্য সচিব মঞ্জুরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সংসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারহান মো. আরিফুর রহমান ও কাইয়ুম উল হাসান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সংসদের সহসভাপতি মাকসুদুর রহমান সুমিত বলেন, একাত্তর পরবর্তী বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় ঘটনা হলো ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান। এই আন্দোলনে একক ছাত্রসংগঠন হিসেবে সবচেয়ে বেশি আত্মত্যাগ করেছে ছাত্রদল। ১৯৯০-এর গণঅভ্যুত্থানেও ছাত্রদল অগ্রগামী ভূমিকা পালন করেছে। নব্বইয়ের পর বাংলাদেশের ক্যাম্পাস রাজনীতি সব জায়গায় ছাত্রদল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ছাত্রদল সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে তাদের চাওয়া-পাওয়াকে প্রাধান্য দিয়ে রাজনীতি করে আসছে। ২৪-এর আন্দোলন সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে শুরু হয়েছে; পরে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেছে। এই আন্দোলনে সর্বস্তরের ছাত্ররা অংশগ্রহণ করেছে। ১৯ জুলাই যদি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা মাঠে না নামত, আন্দোলন হয়তো অন্য দিকে যেত।
তিনি আরও বলেন, দেশে দীর্ঘদিন ধরে যে ফ্যাসিবাদ চলছিল, তার কারণে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা মত প্রকাশ করতে পারেনি। দেশের কথা ভাবতে হলে শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক সচেতনতা থাকতে হবে, সেটা ছাত্রদলের মাধ্যমে হোক বা অন্য সংগঠনের মাধ্যমে। অনেকেই রাজনীতি ভালো মনে করেন না। কিন্তু আমরা সবাই রাজনীতির বাইরে নয়। যারা ছাত্র রাজনীতি করত, সাধারণ মানুষ তাদের ভিন্ন চোখে দেখত; তারা বলত, এদের দিয়ে কিছু হবে না। কিন্তু ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের পর ধারণা বদলেছে। আমাদের ক্যারিয়ার নিয়ে যেমন ভাবতে হবে, তেমনি দেশের কথাও ভাবতে হবে। বিদ্যমান রাজনৈতিক কাঠামোর মধ্যেই আমাদের রাজনৈতিক সচেতনতা বাড়াতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি মুজাহিদ হোসেন বলেন, ছাত্রদল পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কাজ করতে বদ্ধপরিকর। ক্যাম্পাসে আমাদের ভিশন হলো- গণরুম, গেস্ট রুম, টর্চারসেল বিলুপ্ত করা, সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য দূরীকরণ, মাদকমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ে তোলা। হলের খাবারের মান উন্নয়ন, প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি, মেডিকেল সেন্টার আধুনিকায়ন, মেয়েদের জন্য নিরাপদ ক্যাম্পাস, সবুজ ও পরিষ্কার ক্লিন ক্যাম্পাস, পার্ট-টাইম জবের সুযোগ, শিক্ষার্থীদের কল্যাণমূলক কাজ করা। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করতে চাই, তাদের পাশে থাকতে চাই।
আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যান্ড অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা পারফর্ম করেন।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আজিজুল হক জিহাদি, সাবেক আহ্বায়ক একরামুল হক লিমন, সাবেক সদস্যসচিব সানজিদ প্রান্ত, আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য মেহেদী হাসান মিলনসহ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
আবদুল্লাহ আল মামুন/এমবি


