গকসু নির্বাচন : পর্যবেক্ষক, সাংবাদিক ছাড়াই ’বদ্ধভাবে’ ভোটগণনা

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১:৩১
---2025-09-25T212954-68d5606c91ac4.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
গণ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (গকসু) নির্বাচনের ভোটগণনা নিয়ে প্রার্থী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তারা অভিযোগ করেছেন, ভোটগণনা প্রক্রিয়া অস্বচ্ছভাবে পরিচালিত হচ্ছে। গণনার স্থলে কোনো প্রার্থীর এজেন্ট, প্রার্থী বা সাংবাদিককে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এতে ভোটগণনার স্বচ্ছতা ও ন্যায্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু শিক্ষার্থী ভোটে শিক্ষক পর্যবেক্ষকদের পক্ষপাতিত্বের সম্ভাবনাও শঙ্কা করছেন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ১৯টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি কেন্দ্রে ছয়জন শিক্ষক দায়িত্ব পালন করছেন। এর মধ্যে চারজন পোলিং এজেন্ট, একজন গণনা পর্যবেক্ষক ও একজন প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্বে ছিলেন। তবে কেন্দ্রে কোনো প্রার্থীর এজেন্ট, প্রার্থী বা সাংবাদিককে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর ভোটগণনা শুরু হলে প্রার্থী ও শিক্ষার্থীরা বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। একপর্যায়ে কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ পাঁচজন সাংবাদিককে কেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেন। তবে তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।
ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে চাইলে বাধার শিকার হওয়া বণিক বার্তার সাংবাদিক মেহেদী মামুন বলেন, ‘আমরা ভোটগ্রহণ দেখতে পেরেছি। কিন্তু ভোটগণনা চলাকালে কোনো পোলিং এজেন্টকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। কেন্দ্রের বাইরে সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষেধ ছিল। একাধিকবার অনুরোধ করেও প্রবেশ করতে পারিনি। শুধুমাত্র কেন্দ্রের বাইরে থেকে ব্যালট বক্স দেখতে পেরেছি।’
গণ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক তাহমিদ হাসান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে কোনো সাংবাদিককে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। পরবর্তীতে ভোটার ও প্রার্থীর চাপের কারণে গবিসাসের পাঁচজন সাংবাদিককে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে তারা করিডোরে অবস্থান করেছেন এবং সেখান থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছেন। ছবি তোলার অনুমতি দেওয়া হয়নি। ভোটগণনা সরাসরি দেখা যায়নি।’
গকসু ভিপি প্রার্থী শেখ খোদার নুর ইসলাম বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল, ভোটগ্রহণ চলাকালে কোনো পোলিং এজেন্ট দেওয়া যাবে না। আমরা তা মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু ভোটগণনা শুরু হলে সেখানে যাদের উপস্থিত থাকা সম্ভব, তাদের অন্তত ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া যেত। শিক্ষকরা ভোটগণনা করছেন, আমরা নিশ্চিত নই, আমাদের ভোট সঠিকভাবে গণনা হচ্ছে কিনা। অতীতের ঘটনায় শিক্ষকদের পক্ষপাতিত্বের অভিযোগও রয়েছে। এটি আমাদের আস্থা নষ্ট করছে।’
নির্বাচন কমিশনের মুখপাত্র ড. ফুয়াদ হোসেন বলেন, ‘প্রতিটি কেন্দ্রে ছয়জন শিক্ষক দায়িত্বে রয়েছেন। তারা ফলাফল গণনা করে সাক্ষরিত ফরম কন্ট্রোল রুমে জমা দেবেন। সব ভোটের ফলাফল কন্ট্রোল রুমে পৌঁছালে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করা হবে। এখন পর্যন্ত চারটি কেন্দ্রের ফলাফল পাওয়া গেছে। ভোটকেন্দ্রে মোট ৫০ জন পর্যবেক্ষক দায়িত্ব পালন করেছেন।’
গকসু নির্বাচন কমিশনার ডা. মো. জামিলুর রহমান বলেন, ‘কেন্দ্রে ছয়জন শিক্ষক থাকবেন। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে কোনো এজেন্ট থাকবে না, এ বিষয়ে পূর্বেই আলোচনা হয়েছে। ভোট কারচুপির কোনো সুযোগ নেই। যদি কোনো অভিযোগ আসে, আমরা যথাযথ জবাব দেব।’