ফ্যাসিবাদ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে স্থগিত চারুকলার ‘শরৎ উৎসব’

ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০২৫, ২১:৩৩

ছবি : সংগৃহীত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় আয়োজিত সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী ‘শরৎ উৎসব’ স্থগিত করা হয়েছে। আয়োজকদের একজনের বিরুদ্ধে ফ্যাসিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ এবং সম্ভাব্য গন্ডগোলের আশঙ্কায় অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে অনুষদ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আজহারুল ইসলামের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানানো হয়।
ঢাবির চারুকলা অনুষদের ডিন বলেন, ‘অনুষ্ঠানটি স্থগিত করা হয়েছে, বাতিল নয়। অনেকে ফোন করে আপত্তি জানিয়েছেন এবং গন্ডগোলের ইঙ্গিত দিয়েছেন। তাই এসব বিবেচনায় সাময়িকভাবে আমরা অনুষ্ঠান স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামীকাল (শনিবার ১১ অক্টোবর) আয়োজকদের সঙ্গে বৈঠক করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী গত ১৯ বছর ধরে ঢাবির চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় ‘শরৎ উৎসব’ উদযাপন করে আসছে। এ বছরও অনুষদের অনুমতি নিয়ে ১০ অক্টোবর বকুলতলায় উৎসব আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। তবে আয়োজকদের একজন ফ্যাসিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় ফ্যাসিবাদবিরোধী লেখক, সাংবাদিক ও শিল্পী-সমাজের পক্ষ থেকে উৎসবটি বন্ধের আবেদন আসে। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানোর লক্ষ্যে অনুষ্ঠানটি আপাতত স্থগিত করা হয়। আগামীকাল শনিবার অনুষদের শিক্ষক ও সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে অভিযোগ ও পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে উৎসবের পরবর্তী আয়োজন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
অন্যদিকে আয়োজকদের একজন এবং সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী (সুইট) অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ‘আমাকে ফ্যাসিবাদের দোসর বলা হয়েছে, অথচ আওয়ামী লীগের নাম গন্ধেও কোনোদিন ছিলাম না। আমরা ১৯ বছর ধরে এই প্রকৃতির বন্দনার অনুষ্ঠান করে আসছি, এর সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক সংগঠনের সম্পর্ক নেই। হঠাৎ করে অনুষ্ঠান স্থগিত হওয়ায় আমি বিস্মিত ও আতঙ্কিত।’
তিনি আরও জানান, ছোট পরিসরে গেন্ডারিয়ার কচিকাঁচার মেলার মাঠে শরৎ উৎসব আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং শনিবার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
উল্লেখ্য, ১৯ বছর ধরে ঢাবির চারুকলার বকুলতলায় শরৎ আগমনের গান, নৃত্য ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর এই ‘শরৎ উৎসব’ উদযাপন হতো। তবে এবারই প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠান স্থগিত হওয়ায় শিল্পী ও সংস্কৃতি-কর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।