পাবিপ্রবিতে ফুটবল টুর্নামেন্টে নিন্মমানের পুরস্কার নিয়ে ক্ষোভ
পাবিপ্রবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০ নভেম্বর ২০২৫, ১৯:১৮
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) বুধবার বিকেলে আন্তঃবিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। এতে গণিত বিভাগ চ্যাম্পিয়ন এবং ইংরেজি বিভাগ রানার আপ হয়। তবে এই টুর্নামেন্টের পুরস্কার নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন খেলোয়াড়রা, তাদের অভিযোগ বিশাল বাজেটের টুর্নামেন্টে নিন্ম মানের পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে গতকাল রাত থেকে ক্যাম্পাসজুড়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
খেলোয়াড়দের অভিযোগ, ট্রফি, মেডেল ও অন্যান্য পুরস্কারে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে। ট্রফিতে থাকা বানান ভুলের মতো ঘটনা ঘটেছে।
ফাইনাল ম্যাচের পর পুরস্কার প্রদানের সময় দেখা যায়, চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলের জন্য কোনো আলাদা ব্যানার বা ডিসপ্লে বোর্ড রাখা হয়নি। ‘প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ’ এর ট্রফি হাতে নেওয়ার সাথে সাথেই এর একটি অংশ খুলে পড়ে যায়।
চ্যাম্পিয়ন দলের ভাইস-ক্যাপ্টেন ও গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী ফয়েজ বলেন, ‘এবার আমাদের যে ট্রফি ও মেডেল দেওয়া হয়েছে তা দেখে আমরা হতাশ। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ট্রফি এত নিম্নমানের হতে পারে তা না দেখলে বিশ্বাস করতাম না। গত বছরের ট্রফি ও এবারের ট্রফির মানে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। ভিসি স্যারের হাত থেকে যখন এই ট্রফি নিচ্ছিলাম, তখনই মনে হয়েছে ওনার বিব্রত লাগছিল। দিনশেষে শোকেসে রাখলেও এগুলো দেখলে ভালো অনুভূতি আসবে কিনা সন্দেহ।’
রানার্সআপ দলের অধিনায়ক ও ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী মোরসালিন রানা বলেন, ‘টুর্নামেন্টে অনেক বেশি অব্যবস্থাপনা আছে। যারা এই টুর্নামেন্টের দায়িত্বে ছিল তাদের ভিতরে অনেক ভুল আছে। এই টুর্নামেন্টের কিছু কিছু জায়গা আছে যেখানে বড় বড় প্রশ্নের জন্ম দেয়। আমি জানিনা টুর্নামেন্টের প্রথমে কোন প্রাইজ মানির ঘোষণা ছিল কি না? তবে আমি অবাক হয়েছি যে, ফাইনালে পুরস্কার বিতরণীতে কোন প্রাইজমানি রাখা হয়নি। আর রানার্সআপ বা চ্যাম্পিয়ন যে ট্রফিটা দেওয়া হয়েছে এটা আসলে একটা বিশ্ববিদ্যালয় লেভেলর ট্রফি হতে পারে না।’
এবারের সেরা গোলরক্ষক ও সেরা খেলোয়াড়সহ চারটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পাওয়া গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী নাসিম বিল্লাহ বলেন, ‘গতবারের মেডেল ও ট্রফির মান ছিল প্রিমিয়াম। কিন্তু এবার যে মেডেল দেওয়া হয়েছে তা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের টুর্নামেন্টের মানের নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের টুর্নামেন্টে আমরা ভালো মানের পুরস্কার আশা করি, যেগুলো শো-অফ করা যায়। কিন্তু এবার দেওয়া পুরস্কার শুধু প্রিন্ট করা ছবি মোমজাতীয় কিছুর ওপর লাগানো। সর্বোচ্চ তিন-চার হাজার টাকার মধ্যে এমন ট্রফি বানানো যায়। বিভিন্ন ক্লাব টুর্নামেন্টেও এর চেয়ে ভালো ট্রফি দেওয়া হয়।’
এ সময় তিনি আরো বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত পুরস্কারের ছবি ফেসবুকে দেওয়ার পর বন্ধুরা কমেন্ট করে কিংবা মেসেজ দিয়ে জিজ্ঞেস করছে—এগুলো কি টিনের নাকি কাগজে প্রিন্ট করা! এতে আমাদের যেমন খারাপ লাগছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নামও ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। এক বছর পর টুর্নামেন্ট হচ্ছে— তবুও এত অব্যবস্থাপনা কেন? বাজেট কম ছিল— এমনটাও মনে হয় না। বিষয়টি আমাদের জন্য খুবই হতাশাজনক।’
এ বিষয়ে শারীরিক শিক্ষা দপ্তরের পরিচালক মো. এনামুল হক বলেন, ‘পুরস্কার কমিটি করা হয়েছিল। নামের বানানের ক্ষেত্রে হয়তো তারা খেয়াল করেননি। ভবিষ্যতে আমরা এ বিষয়ে সতর্ক থাকব। এবার প্রতিটি টুর্নামেন্টের বাজেট কম হবে। গত বছর টুর্নামেন্টে বাজেট বেশি ছিল। এবার পুরস্কারের বাজেট কম থাকার কারণে পুরস্কারের মান খারাপ হয়েছে। চেষ্টা করব ভবিষ্যতে আরও ভালো করার।’

