দুর্যোগ ঝুঁকিতে ঢাকা: নিরাপত্তার সন্ধানে এক অনিশ্চিত নগরী
ক্যাম্পাস ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০২৫, ২২:০৫
সাম্প্রতিক ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে কয়েক সেকেন্ডের কাঁপুনিই অস্থির করে দিল রাজধানী। হঠাৎ কম্পনে ভবন দুলে ওঠে, দেয়ালে ফাটল দেখা দেয়, আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে নেমে আসে। প্রাণহানি ও আহতের খবর ছড়িয়ে পড়তেই অসহায়তা আরও গভীর হয়। টেকটোনিক প্লেটের আকস্মিক সঞ্চালন যে এমন বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে, তা নতুন নয়; তবে প্রস্তুতিহীনতাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। বিশ্বের তৃতীয় জনবহুল এই শহরে মাঝারি মাত্রার কম্পনেই দুর্বলতা স্পষ্ট হয়ে গেছে। ভূমিকম্পের সেই আতঙ্কময় মুহূর্ত ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী মুজাহিদ আল রিফাতের বর্ণনায় তুলে ধরা হলো।
সোফায় বসে থাকতে হঠাৎ তীব্র কম্পন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই সিঁড়ির দিকে দৌড়। পথে প্রচণ্ড ভাঙার শব্দ মুহূর্তেই শহরটা যেন অচেনা। নিচে নেমে দেখি মানুষে মানুষে ভর্তি আঙিনা; সবার মুখে একই আতঙ্ক, একই অসহায়তা। চারদিকে উঁচু দালানের দেয়ালঘেরা দৃশ্য মনে করিয়ে দিল ঢাকায় নিরাপদ জায়গা বলতে আসলে কোথাও নেই।
বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ এই শহরে বড় দুর্যোগ মোকাবিলায় নেই পর্যাপ্ত ‘সেফ জোন’। খেলার মাঠ ও উন্মুক্ত স্থানের সংখ্যা সীমিত, যানজটের কারণে জরুরি সেবা পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব। মাঝারি মাত্রার কম্পনেই দেয়াল ফেটে যায়— তবুও আমাদের প্রস্তুতি ক্ষণস্থায়ী। কিছুদিন সচেতনতা, তারপর আবার আত্মতুষ্টি আর ‘হবে না’ মানসিকতা।
এ অনিশ্চয়তা থেকে বের হতে এখনই প্রয়োজন কঠোর বিল্ডিং কোড প্রয়োগ, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন শনাক্ত, প্রতিটি ওয়ার্ডে নির্ধারিত আশ্রয়স্থল সংরক্ষণ এবং নিয়মিত দুর্যোগ মহড়া।
মনে রাখতে হবে ভাগ্য নয়, পূর্বপ্রস্তুতিই দুর্যোগের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় নিরাপত্তা। ঢাকা নিরাপদ হওয়া শুধু চাওয়া নয়, এ শহরের প্রতিটি মানুষের অধিকার।
লেখক: মুজাহিদ আল রিফাত
শিক্ষার্থী, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

