গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণ-র্যাগিং : স্থায়ী বহিষ্কার ৫, বিভিন্ন শাস্তিতে ১৭ শিক্ষার্থী
গণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫:২৩
গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণের ঘটনায় চার শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কার এবং র্যাগিংয়ের দায়ে আরও দুই শিক্ষার্থীসহ পাঁচজনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া র্যাগিংয়ে জড়িত পাঁচজনকে এক সেমিস্টার (ছয় মাস) বহিষ্কার ও ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার দায়ে ১২ শিক্ষার্থীকে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. ওহিদুল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ধর্ষণের অভিযোগে স্থায়ীভাবে বহিষ্কৃত চার শিক্ষার্থী হলেন- আইন বিভাগের ৩২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী দেলোয়ার ভূঁইয়া, তাজুল ইসলাম তাজ, শ্রাবণ সাহা ও ২৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী অন্তু দেওয়ান।
র্যাগিংয়ের অভিযোগে স্থায়ী বহিষ্কৃত দুইজন হলেন- আইন বিভাগের ২৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী অন্তু দেওয়ান ও তরিকুল ইসলাম।
এক সেমিস্টার বহিষ্কৃত পাঁচ শিক্ষার্থী হলেন- আইন বিভাগের ৩২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম, নাইম, মেহেদী হাসান, সাজ্জাদ বাবর ও ২৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান।
র্যাগিংয়ের সময় উপস্থিত থাকায় ১২ শিক্ষার্থীকে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। তারা হলেন- আসিফ রহমান লাবিব, লতিফুল হক লোবান, সামিউল ইসলাম, আলিমুল ইসলাম নাহিদ, মোহাম্মদ ওয়ালিদ প্রধান, আসাদুর, শ্রাবণ সাহা, দেলোয়ার ভূঁইয়া, ইমামুল মোরসালিন, কাজল, খন্দকার জিহাদ হাসান ও আইয়াজ হক।
গত ২৪ নভেম্বর রাতে আশুলিয়ার নলাম এলাকায় একটি মেসে শের আলী (৩৩ ব্যাচ) নামে আইন বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে ডেকে নিয়ে র্যাগিং ও শারীরিক-মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে সহপাঠীদের বিরুদ্ধে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৬ নভেম্বর আটজনকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়।
এছাড়া ২ ডিসেম্বর রাতে এক নারী শিক্ষার্থী গণধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা করেন। ওই ঘটনায় আইন বিভাগের চার শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে পাঠানো হয়।
এসব ঘটনার পর টান টান উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ক্যাম্পাসে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। সকালে ধর্ষণে অভিযুক্ত চারজনকে সাময়িক বহিষ্কার করলেও তা যথেষ্ট নয় বলে আন্দোলন চালিয়ে যান তারা। একপর্যায়ে অভিযুক্তদের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার অভিযোগে আইন বিভাগের শিক্ষক লিমন হোসেনকে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও আইন বিভাগের সভাপতি রফিকুল আলম, অধ্যাপক নিলুফার সুলতানা ও লিমন হোসেনের পদত্যাগ দাবি করা হয়।
একপর্যায়ে দুপুর ২টার দিকে এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শিক্ষক ও শিক্ষার্থী, গণ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (গকসু) নেতৃবৃন্দ, গণ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (গবিসাস) নেতৃবৃন্দসহ জরুরি সভা করা হয়। দীর্ঘ বৈঠক শেষে রাত ৮টার দিকে অভিযুক্তদের বিভিন্ন মেয়াদের শাস্তি ঘোষণা করা হয়।
গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. ওহিদুল্লাহ বলেন, অভিযোগ ও তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে জড়িতদের শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
শরিফুল ইসলাম রিফাত/এমবি

