পাবিপ্রবিতে রুম সংকট : খোলা মাঠে ইমামরা
পাবিপ্রবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০:৩৮
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) কেন্দ্রীয় মসজিদ এবং হল মসজিদসহ ইমাম, মোয়াজ্জিন ও খাদেমের সংখ্যা চার জন। এই চার জনের মধ্যে মুয়াজ্জিনের জন্য মসজিদের দোতলায় বসার এবং বিশ্রামের জন্য একটি রুম বরাদ্দ থাকলেও বাকীদের জন্য কোন রুম নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যখন অফিস করেন নির্দিষ্ট কোনো রুমে তখন এই তিন ব্যক্তিকে রুম সংকটের অভাবে ঘুরতে হয় মাঠে মাঠে। দিনে পাঁচবার মসজিদে আজান আর নামাজ পড়াতে হলেও এই তিন ব্যক্তির বসার কিংবা বিশ্রামের নির্দিষ্ট কোনো জায়গা নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কেন্দ্রীয় মসজিদের দোতলায় দুটি রুম আছে। এর একটাতে ইমাম থাকতেন আরেকটাতে মুয়াজ্জিন থাকতেন। গত বছরের অক্টোবরে ইমাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডরমেটরিতে রুম পাওয়ার পর মসজিদ কমিটি রুমটি ইমামের কাছ থেকে নিয়ে নেন। ফলে এক বছর ধরে মসজিদের ইমাম রুম হারা। ইমামকে নামাজ পড়িয়ে হয়তো ডরমেটরিতে চলে যেতে হয় নাহলে বাইরে বাইরে ঘুরতে হয়। রুমটিকে মসজিদের অফিস কক্ষ বানানোর কথা থাকলেও সেটি এখন মসজিদের স্টোর রুম হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। কেন্দ্রীয় মসজিদের খাদেমের বসার কোন নির্দিষ্ট জায়গা নেই। সকালে মসজিদে আসেন, সারাদিন মসজিদে কাটিয়ে রাতে বাসায় চলে যান।
অন্যদিকে স্বাধীনতা হলের মসজিদের জন্য একজন নিয়োগপ্রাপ্ত ইমাম থাকলেও হলে ইমামের বসা কিংবা বিশ্রামের জন্য নির্দিষ্ট কোন জায়গা নেই। তাকে নামাজ পড়ানো শেষ করে হয় বাসায় চলে যেতে হয় নাহলে বাইরে বাইরে ঘুরতে হয়। তবে স্বাধীনতা হলের এ-ব্লকের দোতলায় ইমামের জন্য একটা রুম তৈরি করা হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আপত্তিতে সেই রুমটি হল প্রশাসন ইমামকে দেয়নি বলে জানা গেছে।
মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিনদের এমন অবস্থা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। ইলেকট্রিক্যাল ইলেকট্রনিক অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইসিই) বিভাগের ছাত্র গোলাম নসরুল্লাহ বলেন, ‘একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নির্দিষ্ট একটা অফিস আছে সেখানে মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিনদের কোনো অফিস নেই। ওনারা নামাজ শেষ করে কোথায় বসবেন, কোথায় বিশ্রাম সেটা নিয়ে প্রশাসনের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই।’
স্বাধীনতা হলের ইমাম হাফেজ মূফতি মাওলানা শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমি আজ তিন বছর ধরে প্রশাসনকে একটা রুমের আবেদন করে আসছি। কিন্তু সেই রুম আজ পর্যন্ত পাইনি। আমাদের অন্য সহকর্মীরা যখন ফ্যানের নিচে বসে অফিস করেন তখন আমরা মাঠে মাঠে ঘুরি। কারণ আমাদের বসার নির্দিষ্ট কোনো অফিস নেই, রুম নেই।’
কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম মূফতি মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমি বলেন, ‘নামাজ শেষ করে দিনে পাঁচবার ডরমেটরির পাঁচ তলায় ওঠানামা কষ্টকর। আমাদের নির্দিষ্ট কোনো রুম থাকলে আমরা নামাজের আগে পরে ওখানেই বসে পড়াশোনা এবং বিশ্রাম নিতে পারতাম’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘মসজিদের উপরে যে রুমে ইমাম সাহেব ছিলেন সেটাকে আমরা মসজিদের অফিস করতে বলেছি। কেন্দ্রীয় মসজিদ এবং হল মসজিদের ইমামদের জন্য রুমটি অফিস হিসেবে ব্যবহার করা হবে।’
আবদুল্লাহ আল মামুন/এসএসকে/

