Logo

ক্যাম্পাস

বুদ্ধিজীবী দিবসে আলোকচিত্র প্রদর্শনীসহ নানা আয়োজন জাবি ছাত্রদলের

Icon

জাবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১:১৬

বুদ্ধিজীবী দিবসে আলোকচিত্র প্রদর্শনীসহ নানা আয়োজন জাবি ছাত্রদলের

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আলোকচিত্র প্রদর্শনীসহ নানা আয়োজন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুর ১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) আলোকচিত্র প্রদর্শনী শুরু করেন তারা। যা ওইদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত চলছিল।  

আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের পরিচিতি, তাদের উপর নির্মম অত্যাচার-নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের চিত্র,  তৎকালীন পত্রিকার কাটিং, মুক্তিযুদ্ধকালীন গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তের ছবি প্রদর্শন করা হয়। এদের মধ্যে বুদ্ধিজীবী গোবিন্দ চন্দ্র দেব, মুনীর চৌধুরী, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, আনোয়ার পাশা, জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, সিরাজুল হক, সেলিনা পারভীনসহ শতাধিক শহীদ বুদ্ধিজীবীর ছবি প্রদর্শন করা হয়েছে।

ভিন্নধর্মী এ আয়োজনের বিষয়ে আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজক ও জাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মোহাম্মদ রুবেল বলেন, ‘১৪ই ডিসেম্বর বাঙালী জাতির ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ সময়ে পূর্ণাঙ্গ বিজয়ের মাত্র দুই দিন আগে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনি দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করে।  মহান মুক্তিযুদ্ধে পরাজয় সুনিশ্চিত জেনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার জন্য এ ঘৃণ্য চক্রান্ত করেছিল। তারা তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার আল-বদর, আল-শামস বাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় শিক্ষক, সাংবাদিক, বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, আইনজীবীসহ বহু মানুষকে পাখির মতো হত্যা করে। স্বাধীনতার ঘোষক মুক্তিযোদ্ধা ও তৎকালীন মেজর জিয়াউর রহমানের আহ্বানে অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষা, আত্মদান ও দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৫ বছর পরও একাত্তরের স্বাধীনতা বিরোধীরা আজও দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে যাচ্ছে। আমরা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আজকের এদিনে স্বাধীনতা সংগ্রামে শহীদ সকল বুদ্ধিজীবীকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। আমরা ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ সন্তান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের কখনো ভুলবো না। দেশের সকল প্রজন্মের কাছে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগের গল্প পৌঁছানোর ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা থেকে আমাদের এ আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন। পাশাপাশি আমরা যেসকল কুচক্রী মহল দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে তাদের প্রতিহত করতে ছাত্র-জনতাকে সজাগ থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।’

এর আগে, ওইদিন (১৪ ডিসেম্বর) প্রথম প্রহরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদিতে মোমবাতি প্রজ্বলনের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তারা। সেসময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশক্তির নেতাকর্মীরাও শ্রদ্ধা জানায়।

এদিকে, ওইদিন রাত ৭ টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকায় মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘আবার তোরা মানুষ হ’ এবং  ‘আগুনের পরশমণি’ প্রদর্শনের আয়োজন করেছে শাখা ছাত্রদল। যা রাত ১০ টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তবে দিবসটিকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোন উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি।

এ বিষয়ে জাবির জনসংযোগ কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মহিউদ্দিন বলেন, ‘প্রশাসনের পক্ষ থেকে মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে কোন কর্মসূচি পালন করা হয়নি।’

প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি ঘাতকেরা এদেশের ১১১১ জন বুদ্ধিজীবীকে নির্মমভাবে হত্যা করে। যাদের মধ্যে ৯৯১ জন শিক্ষাবিদ, ১৩ জন সাংবাদিক, ৪৯ জন চিকিৎসক, ৪২ জন আইনজীবী ও ১৬ জন বরেণ্য বুদ্ধিজীবী ছিলেন। প্রতিবছর তাদের স্মরণে এ দিনটিকে ‘জাতীয় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়ে থাকে।

আমানউল্লাহ খান/এসএসকে/

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর