জকসু নির্বাচন
ভোট গণনা পদ্ধতি নিয়ে জবিশিস ও ইউটিএলের পাল্টাপাল্টি মতামত
জবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯:৪০
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোট গণনা পদ্ধতি নিয়ে শিক্ষক সংগঠনগুলো পাল্টাপাল্টি মতামত জানিয়েছে। ম্যানুয়ালি ভোট গণনার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জবিশিস) আর ওএমআর (অপটিক্যাল মার্ক রিকোগনিশন) মেশিনের মাধ্যমে ভোট গণনার দাবি জানিয়েছে ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিংক (ইউটিএল)।
আজ বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ক্যাম্পাসে পৃথক সংবাদ সম্মেলনে দুই শিক্ষক সংগঠন তাদের অবস্থান তুলে ধরে।
জবিশিসের নেতারা জানান, ম্যানুয়ালি ভোট গণনা হলে স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করা সহজ হবে। তাঁদের মতে, জকসুর মতো গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে প্রযুক্তিগত জটিলতা এড়িয়ে সরাসরি ভোট গণনাই বেশি কার্যকর। অন্যদিকে ইউটিএল নেতারা বলেন, ওএমআর মেশিন ব্যবহার করলে ভোট গণনায় সময় কম লাগবে এবং মানবিক ভুলের আশঙ্কা কমবে। তাঁরা দাবি করেন, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নির্বাচন ব্যবস্থাপনাকে আরও গতিশীল ও নির্ভুল করবে।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষক সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি মো. রইছ উদ্দিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে কাঙ্ক্ষিত মান ও পর্যায়ে উন্নীত করতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত শক্তির কোনো বিকল্প নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক কল্যাণ ও গণতান্ত্রিক চর্চা বিকাশে জকসু নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচনে প্রশ্নের উদ্ভব হয়েছে। সে অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন কোনো ধরনের ত্রুটি বা বিতর্কের সুযোগ না থাকে, সে বিষয়ে সচেতন হয়ে আসন্ন জকসু নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রে ম্যানুয়ালি ভোট গণনার ব্যবস্থা গ্রহণ, সিসিটিভির আওতায় ভোটকেন্দ্র আনা, সরাসরি মনিটরের মাধ্যমে ভোট গণনা সম্প্রচার, ভোটারদের সুবিধার্থে আলাদা এন্ট্রি ও এক্সিট গেট নিশ্চিত করা এবং ক্যাম্পাস ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় অপ্রয়োজনীয় জটলা রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্ক ভূমিকা নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।
অন্য এক সংবাদ সম্মেলনে ইউটিএলের জবি ইউনিটের সভাপতি অধ্যাপক ড. আবু লায়েক বলেন, ভোট গণনায় ব্যবহৃত ওএমআর শীট তৈরি ও মেশিনের নিরপেক্ষতা নিয়ে যাতে কোনো প্রশ্ন না ওঠে, এজন্য বুয়েট বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের এক্সপার্ট ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ে একটি অফিসিয়াল এক্সপার্ট টিম গঠন করা প্রয়োজন। ওএমআর ফরম তৈরি নিয়ে যাতে কোনো ধরণের প্রশ্ন উঠতে না পারে সেজন্য স্বচ্ছতার সাথে কাজটি আঞ্জাম দিতে হবে। নির্বাচনের দিন সকালে ও ভোট শেষে অডিট ট্রায়াল বাধ্যতামূলক করা উচিত। ট্রায়ালের সময় রিটার্নিং কর্মকর্তার পাশাপাশি পর্যবেক্ষক, এজেন্ট ও সাংবাদিকদের উপস্থিতি নিশ্চিত করলে স্বচ্ছতার বিষয়ে সবার আস্থা বাড়বে।
এছাড়া ইউটিএলের নেতৃবৃন্দ ১০টি প্রস্তাবনা দিয়েছে। এগুলো হলো– ভুয়া ভোটার ও জাল ভোট রোধ; ওএমআর মেশিনের স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ; কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফল ঘোষণা: আচরণবিধি কঠোরভাবে অনুসরণ; নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা; ক্যাম্পাস নিরাপত্তা ব্যবস্থা; প্রযুক্তিনির্ভর নজরদারি; প্রচারণা ও গণআস্থা; নির্বাচনকালীন কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ ও সহায়তা কেন্দ্র; ফলাফল প্রকাশ ও পরবর্তী শৃঙ্খলা।
ভোট গণনা নিয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক কানিজ ফাতেমা কাকলি বলেন, আমাদের আগে থেকে সিদ্ধান্ত ভোট গণনা মেশিনের মাধ্যমে হবে কারণ ম্যানুয়ালি করলে অনেক সময়ের প্রয়োজন। আমরা জাকসু নির্বাচনে দেখেছি ম্যানুয়ালি ভোট গণনা করতে গিয়ে একজন শিক্ষক মারা গেছে। তাছাড়া এতো সময় কোনও শিক্ষক ভোট গণনা করবে না।
জেএন/আইএইচ

