৩৯ দিন পর খুলছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মূল ফটক। তবে পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক নয়। ইশরাক হোসেনের সমর্থকরা জানিয়েছেন, প্রশাসক ও প্রকৌশলীদের কক্ষে তালা থাকবে। 

রোববার (২২ জুন) দিনের শেষ দিকে নগর ভবনের সামনে আন্দোলনরতরা এ ঘোষণা দেন। 

তারা জানান, ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে গড়ে ওঠা আন্দোলন শর্তসাপেক্ষে চলবে এবং প্রয়োজনীয় নাগরিক সেবা চালু রাখলেও, কোনো দালাল বা দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে ঢুকতে দেওয়া হবে না।

আন্দোলনকারীরা বলছেন, ইশরাক হোসেনের শপথ না করিয়ে সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব। তাকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে। 

এছাড়া নগরবাসীর দুশ্চিন্তা কমাতে নাগরিক সেবা চালু করলেও, যারা অতীতে ফ্যাসিবাদী শক্তির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন তারা।

এর আগে, গেজেট হলেও শপথ গ্রহণ করতে না পারার ক্ষোভে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন ও তার কর্মীদের আন্দোলনের তোপে এখনো অচলাবস্থা বিরাজ করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। গত ৩৯ দিন ধরে তালাবদ্ধ নগরভবনে বন্ধ রয়েছে নাগরিক সেবা। একই ধারাবাহিকতায় আজ  ১১ টা থেকে ফের বিক্ষোভ শুরু করে ইশরাক সমর্থকরা। তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ইশরাক হোসেনকে মেয়রের শপথ পড়ানো না হলে নগর ভবনের তালা খুলবে না।

তালাবদ্ধ নগর ভবনের মূল ফটকের সামনে মঞ্চও তৈরি করেছে তারা। সেখানে প্রতিবাদী স্লোগানে মুখর ইশরাক সমর্থকরা বলছেন, উপদেষ্টা আসিফের ষড়যন্ত্রে শপথ আটকে আছে, আইনি বাধা না থাকলেও ইশরাককে মেয়রের দায়িত্ব দিচ্ছে না স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।

ক্ষোভ ও হতাশা জানিয়ে সেবাবঞ্চিত যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দা কামাল হোসেন বাংলাদেশের খবরকে বলেন, একমাস ধরে হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে সিটি করপোরেশন ঘুরছি। নগর ভবনে তালা, কেউ কিছু জানে না। হোল্ডিং ট্যাক্সের আপডেট কাগজ দেখাতে না পারায় তিনি সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অন্যান্য কাজও করাতে পারছেন না। মানিকনগরের বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম নামের একজন বলেন, রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের বলি হচ্ছে জনগণ। সেবা আটকে রেখে কোন ধরনের আন্দোলন চলছে?  

সংবিধান বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার রওনক রহমান এই ইস্যুতে গণমাধ্যমকে বলেন, যদি আদালত রায় দেয়, নির্বাচন কমিশন গেজেট করে, তবে শপথে বাধা দেয়া বেআইনি। এমন পরিস্থিতি গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় অনাকাঙ্ক্ষিত।  

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওইসময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণা করে ইসি। একই বছরের ৩ মার্চ অনিয়মের অভিযোগ তুলে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন বিএনপির প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। চলতি বছরের ২৭ মার্চ আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ট্রাইব্যুনাল ওই নির্বাচনের ফল বাতিল করে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করেন। ২৭ এপ্রিল নির্বাচন কমিশন ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে। ১৪ মে তার শপথ ঠেকাতে হাইকোর্টে রিট হয়, তবে হাইকোর্ট পরবর্তীতে সেই রিটও খারিজ করে দেয়।