শাপলার চেতনা আগামীর বাংলাদেশের মাইলফলক : মামুনুল হক

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৩১ আগস্ট ২০২৫, ০৯:০৫
-68b3bbef1031f.png)
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর ও শাপলা স্মৃতি সংসদের সভাপতি মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, ‘শাপলা চত্বরের রক্তের স্রোতেই চব্বিশের চেতনার ধারা শুরু হয়েছে। জুলাই ঘোষণাপত্রে শাপলার কথা না আসার দায় যেমন ড. ইউনুস সাহেবকে নিতে হবে, তেমনি পুরো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও নিতে হবে।’
গতকাল ৩০ আগস্ট শনিবার বিকেল ৪টায় রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে শাপলা স্মৃতি সংসদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় “শাপলা কেন্দ্রীক বিভিন্ন কাজে অংশীজনের সম্মাননা ও সম্মিলনী–২০২৫”। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মামুনুল হক। উদ্বোধনী বক্তব্য দেন নির্বাহী সভাপতি মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী।
মাওলানা মামুনুল হক আরও বলেন, ‘শাপলার চেতনাকে আগামীর বাংলাদেশের মাইলফলক হিসাবে প্রতিষ্ঠা করার জন্যই শাপলা স্মৃতি সংসদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শাপলার শহীদ পরিবারের অভিভাবকত্ব গ্রহণের জন্য গঠিত হয়েছে শাপলা শহীদ গার্ডিয়ান্স ফোরাম। আগামীর বাংলাদেশে জুলাইকে মূল্যায়ন করা মানেই শাপলাকেও মূল্যায়ন করা।’
অনুষ্ঠানে আলোচকবৃন্দরা বলেন, ‘শাপলা চত্বরের গণহত্যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। এক যুগ ধরে এই ইতিহাস আড়াল করার চেষ্টা হলেও শহীদদের রক্ত সেই স্মৃতি চিরজীবন্ত করে রেখেছে।’ বক্তাদের মতে, শাপলা স্মৃতি সংসদ প্রজন্মের সামনে এই সত্য তুলে ধরতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুল হামিদ (পীর সাহেব মধুপুর) বলেন, ‘শাপলার শহীদরা আমাদের ঈমানি শক্তির প্রতীক। তাদের আত্মত্যাগ ধারণ করেই ইসলামী আন্দোলন এগিয়ে যাবে।’
জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল হালিম বলেন, ‘গত ১৫ বছরে আলেম সমাজকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করা হলেও এখন পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয়েছে।’
এনসিপির আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, “‘শাপলার ঘটনা বাংলাদেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব টিকিয়ে রাখার ঘটনা। ’৭২-এর পর থেকে দেশের চালক পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু দেশের কোনো পরিবর্তন হয়নি। সংবিধান পরিবর্তন না হলে আবারো শাপলা ফিরে আসবে, আবারো ১৮ ফিরে আসবে, আবারো ২৪ ফিরে আসবে।’
বিএনপির সমাজকল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন বলেন, ‘ইসলামের তাহযিব ও তামাদ্দুন রক্ষায় আপনাদের বজ্রকণ্ঠ যতদিন থাকবে, ততদিন এদেশে ইনসাফ থাকবে।’
অনুষ্ঠানে ২০১৩ সালের শাপলা গণহত্যার সময় বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচার, হতাহতদের চিকিৎসা সেবা, আইনি সহায়তা ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করার স্বীকৃতিস্বরূপ প্রতিষ্ঠান ক্যাটাগরিতে সম্মাননা পেয়েছে আলজাজিরা, দৈনিক আমার দেশ, দিগন্ত টেলিভিশন, ইসলামিক টেলিভিশন, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, মানবাধিকার সংগঠন অধিকার ও হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগর (২০১৩ সালের কমিটি)।
এছাড়াও গণমাধ্যম, আইন ও মানবাধিকার, চিকিৎসা সেবা, সাহিত্য-সংস্কৃতি এবং পুনর্বাসন সহায়তা খাতে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২১ জনকে ব্যক্তি পর্যায়ে সম্মাননা ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
সংশ্লিষ্টদের হাতে ক্রেস্ট ও সম্মাননা তুলে দেন শাপলা চত্বরে শহীদ হওয়া জনাব মতিউর রহমান, শহীদ মুক্তার মিয়া ও শহীদ ইউনুছ আলীর গর্বিত পিতাগণ।
অনুষ্ঠানে বিএনপি, হেফাজতে ইসলাম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, খেলাফত মজলিসসহ বিভিন্ন দলের নেতা ও বিশিষ্টজনেরা অংশ নেন।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, দৈনিক আমার দেশ-এর ম্যানেজিং এডিটর জাহিদ চৌধুরী, বিএনপির সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট জয়নুল আবেদীন মিসবাহ, চট্টগ্রাম কোর্টের অতিরিক্ত পিপি রিয়াদ উদ্দীন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী, হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা বশিরউল্লাহ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক হাসান ইনাম, লেখক গবেষক মাওলানা মনযুর আহমদ, মাওলানা আলী হাসান তৈয়্যব, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের প্রচার সম্পাদক মাওলানা হাসান জুনাইদ, যুব মজলিস সভাপতি জাহিদুজ্জামান, মাওলানা মুর্শিদুল আলম সিদ্দীকি, মাওলানা সাইফুল ইসলাম, মাওলানা জাকির হোসাইন, মাওলানা আফসার মাহমুদ, ফাতেহ সোলায়মান, সাখাওয়াত হোসাইন, মুফতি সাঈদ আহমদ, মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম, ইবরাহীম জামিল, মাওলানা আব্দুল হক শামীম প্রমুখ।
ডিআর/আইএইচ