মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া ভাতাসহ তিন দফা দাবিতে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হচ্ছেন বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। বুধবার (১৫ অক্টোবর) দুপুর ১২টার মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি না হলে তারা শাহবাগ ব্লকেড কর্মসূচি পালন করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।

এর আগে মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) রাতে হাইকোর্টের সামনে থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী। তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছি। সরকার যদি এই সহযোগিতাকে দুর্বলতা মনে করে, তাহলে এবার শিক্ষক সমাজ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বে না।’

বুধবার সকাল থেকেই শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে শিক্ষকরা জড়ো হচ্ছেন। হাতে ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ডে লেখা— ‘বেতন বৈষম্য দূর করো’, ‘শিক্ষকের মর্যাদা রক্ষা করো’, ‘ন্যায্য দাবি বাস্তবায়ন করো’। পুরো এলাকা মুখর হয়ে উঠেছে স্লোগান ও প্রতিবাদে।

শিক্ষকদের তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে— মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া ভাতা প্রদান, প্রতি মাসে ১,৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা এবং কর্মচারীদের জন্য ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতা। শিক্ষকরা বলেন, সরকারি শিক্ষকদের মতো একই যোগ্যতা ও দায়িত্ব পালন করলেও তারা ন্যায্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত। ব্যয়বহুল জীবনের সঙ্গে তাল মেলাতে না পেরে অনেক শিক্ষক মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ের উদ্দেশে লং মার্চ শুরু করলে পুলিশ মিছিলের গতিপথে বাধা দেয়। এতে উত্তেজনা দেখা দিলে শিক্ষকরা হাইকোর্টের সামনে অবস্থান নেন এবং স্লোগান দেন— ‘প্রজ্ঞাপন চাই, নইলে শাহবাগ চাই।’ অবস্থান কর্মসূচির কারণে প্রেস ক্লাব ও আশপাশের সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। রাত আটটার দিকে শিক্ষকরা শহীদ মিনারে ফিরে এসে বুধবার দুপুরের শাহবাগ অবরোধের ঘোষণা দেন।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবিগুলো নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তবে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তের সম্ভাবনা নেই। তিনি বলেন, ‘সরকার শিক্ষকদের দাবির প্রতি সহানুভূতিশীল, কিন্তু রাজস্ব কাঠামোর সীমাবদ্ধতা বিবেচনা করতে হচ্ছে।’

অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, ‘আজ দুপুরে শাহবাগ ব্লকেডের পরও যদি সরকার সাড়া না দেয়, তাহলে আমরা যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা ও আমরণ অনশনসহ আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করব। শিক্ষক সমাজ নতি স্বীকার করবে না, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকবে।’

এসআইবি/এমএইচএস