৫০০ টাকার সুইচ গিয়ারেই শেষ জুবায়েদের জীবন

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১ অক্টোবর ২০২৫, ১৪:১৬

মাত্র ৫০০ টাকা দামের একটি সুইচ গিয়ারই কেড়ে নিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জুবায়েদ হোসেনের (২৫) প্রাণ। ছবি : বাংলাদেশের খবর
মাত্র ৫০০ টাকা দামের একটি সুইচ গিয়ারই কেড়ে নিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জুবায়েদ হোসেনের (২৫) প্রাণ। প্রেমের ত্রিভুজ সম্পর্কের জেরে রাজধানীর বংশাল থানা এলাকার নুর বক্স লেনে পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. মাহির রহমান (১৯), বার্জিস শাবনাম বর্ষা (১৯) ও ফারদীন আহম্মেদ আয়লান (২০)।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মাহির ও বর্ষার দেড় বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। অন্যদিকে, ভিকটিম জুবায়েদও বর্ষার বাসায় গিয়ে পড়াতেন এবং একপর্যায়ে তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। প্রায় এক বছর আগে থেকেই জুবায়েদ ও বর্ষার মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
ঘটনার প্রায় এক মাস আগে মাহির জানতে পারে যে তার প্রেমিকা বর্ষার সঙ্গে জুবায়েদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি মাহির। একের পর এক ঝগড়া ও মনোমালিন্যের পর বর্ষা নিজেই মাহিরকে জুবায়েদকে হত্যার প্ররোচনা দেয়।
তদন্তে জানা যায়, বর্ষার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মাহির প্রতিদিন জেনে নিত জুবায়েদ কখন পড়াতে আসে এবং কখন বাসা থেকে যায়। হত্যার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে মাহির তার বন্ধু ফারদীন আহম্মেদ আয়লানকে পরিকল্পনার কথা জানায়। এরপর তারা দুজন দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আগানগর বউবাজার এলাকায় গিয়ে মাত্র ৫০০ টাকায় একটি নতুন সুইচ গিয়ার ছুরি কেনে। এ ছুরিই পরে জুবায়েদের জীবনের ইতি টানে।
রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে জুবায়েদ বংশালের নুর বক্স লেনের রৌশান ভিলায় টিউশনি করাতে যান। নিচতলার সিঁড়ির নিচে ওঁত পেতে ছিল মাহির ও তার বন্ধু আয়লান।
জুবায়েদ আসতেই মাহির তার কাছে বর্ষার সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তোলে। কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে মাহির ব্যাগ থেকে সুইচ গিয়ার ছুরি বের করে জুবায়েদের গলার ডান পাশে আঘাত করে। ঘটনাস্থলেই জুবায়েদ মারা যান।
হত্যার মুহূর্তে বর্ষা ভবনের তৃতীয় তলায় দাঁড়িয়ে পুরো ঘটনাটি দেখছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ঘটনার পর থেকেই তিন আসামি পলাতক ছিলেন। তবে বংশাল থানা পুলিশের পরপর অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, গ্রেপ্তার তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।
এনএমএম/এমবি