হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে উত্তাল শাহবাগ
বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬:২৭
ছবি : সংগৃহীত
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি হত্যার বিচারের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে শাহবাগ। হাদির জানজা ও দাফন শেষ করে মিছিল নিয়ে ছাত্র-জনতা শাহবাগে আসতে শুরু করে।
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টা থেকে সমবেত হয়ে আন্দোলন শুরু করে ছাত্র-জনতা।
এ সময় তাদের নানা ধরনের স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
এর আগে শনিবার বেলা সোয়া ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত করা হয়।
তার আগে দুপুর আড়াইটায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় শরিফ ওসমান হাদির নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় মানুষের ঢল নামে, যা খামারবাড়ি থেকে আসাদ গেট পর্যন্ত পুরো এলাকাকে জনসমুদ্রে পরিণত করে।
জানাজায় অংশ নেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যবৃন্দ, তিন বাহিনীর প্রধান এবং বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা। জানাজায় ইমামতি করেন তার বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিক।
জানাজা শুরুর আগে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ওসমান হাদিকে বিদায় দিতে কেউ আসেনি। তিনি আমাদের ও বাংলাদেশিদের বুকের ভেতর আছেন এবং বাংলাদেশ যতদিন থাকবে, ততদিন তিনি সবার হৃদয়ে থাকবেন।’
শনিবার সকাল থেকেই মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। সকাল ১০টায় সাধারণ মানুষকে দক্ষিণ প্লাজায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে আটটি আর্চওয়ে গেট দিয়ে হাজার হাজার মানুষ সুশৃঙ্খলভাবে জানাজায় শরিক হন। রাজধানী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ এই প্রয়াত নেতার শেষ বিদায়ে অংশ নিতে ছুটে আসেন।
জানাজার আগে এক আবেগঘন বক্তব্যে শরিফ ওসমান হাদির বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিক প্রশাসনের প্রতি প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, ‘সাত-আটদিন পেরিয়ে গেলেও আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের কেন ধরা সম্ভব হলো না? প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে তারা কীভাবে পালিয়ে গেল?’ তিনি দ্রুততম সময়ে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানান।
সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট থেকে মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। বেলা সোয়া ১১টার দিকে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হওয়ার পর মরদেহ পুনরায় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে গোসলের জন্য নেওয়া হয়। সেখান থেকে সহযোদ্ধাদের মিছিলে মরদেহ সংসদ ভবনে আনা হয়।
শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে আজ শনিবার দেশব্যাপী একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে দেশের সব সরকারি, বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়েছে।
গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণাকালে মোটরসাইকেল আরোহী দুর্বৃত্তের গুলিতে মাথায় গুরুতর আঘাত পান শরিফ ওসমান হাদি। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুর নেওয়া হলে ১৮ ডিসেম্বর সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
এমএইচএস

