বিশ্ব পর্যটন দিবসে চাই নিরাপদ ভ্রমণ ও সরকারের সহযোগিতা

বিজনেস ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩:১৪

আজ বিশ্ব পর্যটন দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য- পর্যটন ও শান্তি’। দিনটিকে সামনে রেখে দেশের পর্যটন সম্ভাবনা, চ্যালেঞ্জ ও করণীয় নিয়ে কথা বলেছেন পর্যটন শিল্পের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে সম্পৃক্ত ইমাম উদ্দিন আহমেদ সাদী।
সাদী দীর্ঘ ক্যারিয়ারে কাজ করেছেন হসপিটালিটি, হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট ম্যানেজমেন্ট খাতে। একসময় পাঁচ তারকা হোটেল সিগাল-এ কাজ করার পর বর্তমানে তিনি সিনিয়র ক্লাস্টার জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ডেরা রিসোর্টে।
সাদীর মতে, বাংলাদেশ প্রকৃতিগতভাবে এক অপার সম্ভাবনাময় দেশ। বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার, সবুজ পাহাড়-অরণ্য, সুন্দরবন, প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা- সব মিলিয়ে বাংলাদেশ পর্যটকদের জন্য অনন্য আকর্ষণ হতে পারত। কিন্তু সঠিক পরিকল্পনার অভাব, দক্ষ নেতৃত্বের ঘাটতি ও অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে পর্যটন খাত প্রত্যাশিত জায়গায় পৌঁছাতে পারেনি।
তিনি বলেন, আমরা যদি সঠিক পরিকল্পনা করি এবং তার সঠিক বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে পারি, বিদেশি পর্যটকরা বাংলাদেশে আসবে, তাদের জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা যাবে। পাশাপাশি, ইতিবাচক সংবাদ প্রচার ও দেশের উল্লেখযোগ্য পর্যটন কেন্দ্রগুলোকে বিশ্বদরবারে তুলে ধরলে এই শিল্প ঘুরে দাঁড়াবে। এতে বিপুল কর্মসংস্থান তৈরি হবে।
ইমাম উদ্দিন আহমেদ সাদী তার অভিজ্ঞতার আলোকে বলেন, পর্যটকদের প্রথম চাহিদা হলো নিরাপদ ও ঝামেলামুক্ত ভ্রমণ। এই দিক থেকে ডেরা রিসোর্ট একটি আলাদা নাম তৈরি করেছে।
ডেরা রিসোর্ট সম্পর্কে সাদী বলেন, আমাদের কক্সবাজারে যে রিসোর্টটি আছে সেটা ইনানী সমুদ্র সৈকতের হেলিপ্যাড সংলগ্ন স্থানে নির্মিত। বিশ্বমানের এই বিলাসবহুল রিসোর্ট থেকে অতিথিরা সরাসরি সৈকতের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন। দম্পতি, পরিবার ও করপোরেট আউটিংয়ের জন্য রয়েছে বিশেষ সুবিধা।
এছাড়াও ডেরা রিসোর্ট মানিকগঞ্জ ঢাকা থেকে মাত্র ১ ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত এই ফাইভ-স্টার রিসোর্টটি প্রকৃতির কোলঘেঁষা। এখানে আছে অ্যাডভেঞ্চার ক্যাম্প, গল্ফ কোর্স, সুইমিং পুল, অর্গানিক থাই স্পা, ছোট চিড়িয়াখানা, মাছ ধরা, নৌকা চালানো, সাইক্লিংসহ নানান বিনোদন সুবিধা।
ডেরার বিশেষ সেবা ও সুবিধাসমূহের মধ্যে আছে ওয়েলকাম ড্রিংকস ও বুফে ব্রেকফাস্ট, এয়ার কন্ডিশন ও গিজারের সুবিধা, আনলিমিটেড ওয়াই-ফাই, ইন-রুম কফি, চা ও মিনারেল ওয়াটার, সমুদ্র-মুখী সুইমিং পুল, মুখরোচক খাবারের নিজস্ব রেস্টুরেন্ট ও ২৪ ঘণ্টা রুম সার্ভিস।
এসব সুবিধার কারণে ডেরা ইতোমধ্যে পর্যটকদের বিশ্বাস, আস্থা ও ভরসার প্রতীকে পরিণত হয়েছে।
সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সাদী বলেন, সরকারি সহায়তা ছাড়া এ শিল্পকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। কক্সবাজারকে আমরা বলি দেশের পর্যটন রাজধানী। কিন্তু এখনও অনেক সমস্যায় ভুগছে এই খাত। ভ্রমণবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা, দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করা এবং সঠিক মার্কেটিং কৌশল নেওয়া জরুরি। সরকার যদি পর্যটনের উন্নয়নে আরও আন্তরিক হয়, তবে বাংলাদেশ বিশ্ব মানচিত্রে একটি শক্তিশালী পর্যটন গন্তব্য হিসেবে জায়গা করে নেবে।
বিশ্ব পর্যটন দিবসে এটাই প্রত্যাশা- নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করে, সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পকে টেকসই উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।
এমডিএ/টিএইচএম