দাখিল পরীক্ষায় ৩৪ জনের অংশগ্রহণ অনিশ্চিত
একজনের প্রবেশপত্রে আরেকজনের ছবি

নীলফামারী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৪৮

বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় পাবলিক পরীক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় এসএসসি ও দাখিল সমমান পরীক্ষা। আর পরীক্ষাকে ঘিরে পরিবারসহ শিক্ষার্থীর থাকে ব্যাপক প্রস্তুতি। টানা দুই বছর অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজেকে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করেন শিক্ষার্থীরা। কিন্তু নীলফামারীতে একটি মাদ্রাসার ৩৪ জন শিক্ষার্থীর দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, নীলফামারী সদরের কানিয়ালখাতা দ্বি-মুখী দাখিল মাদ্রাসার প্রধানের গাফিলতির কারণে ৩৪ শিক্ষার্থীর দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন- এর দায়ভার কে নেবে।
সরেজমিনে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, ভুলে ভরা প্রবেশপত্র নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ওই মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষার ৩৪ শিক্ষার্থী। তাদের প্রবেশপত্রে কারো নামের বানান ভুল, কারো জন্ম তারিখ ভুল, আবার কারো প্রবেশপত্রে দেওয়া হয়েছে অন্য আরেকজনের ছবি। এ সময় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
লিপন ইসলাম নামে এক পরীক্ষার্থী বলেন, ‘আজকে আমাদের প্রবেশপত্র দেওয়া হবে জানিয়ে মাদ্রাসায় আসতে বলা হয়। কিন্তু প্রবেশপত্র হাতে পেয়ে দেখি আমার প্রবেশপত্রে অন্য আরেকজনের ছবি লাগানো। আমার ছবি নেই। আমি এই প্রবেশপত্র দিয়ে কেমন করে, কীভাবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করব। ভেতরে প্রবেশ করা তো দূরের কথা গেটেই তো আটকে দেবে।’
একই মাদ্রাসার নুরজামান ইসলাম নামে আরেকজন বলেন, ‘জন্ম নিবন্ধনসহ সকল কাগজপত্রে আমার মায়ের নাম লেখা আছে মমেনা বেগম। কিন্তু আজকে প্রবেশপত্র হাতে পেয়ে দেখি আমার মায়ের নাম হয়েছে মমবানা বেগম। স্যারকে এসব ভুলের কথা বললে, তিনি জবাবে বলেন, ‘এগুলো কোনো ভুল হইলো’।’
নাঈম ইসলাম বলেন, ‘আমার জন্ম তারিখ ১২ আগস্ট ২০০৮ সাল। কিন্তু আমার প্রবেশপত্রে জন্মতারিখ লেখা হয়েছে ১০ আগস্ট ২০০৮ সাল। প্রত্যেকের প্রবেশপত্র ভুলে ভরা। এই বিচার কাকে দেবো আমরা। পরবর্তীতে এগুলো সংশোধন করা আমাদের জন্য অনেক কষ্টকর হবে। আমরা অতি দ্রুত প্রবেশপত্র সংশোধন চাই।’
অভিযোগের বিষয়ে কানিয়ালখাতা দ্বি-মুখী দাখিল মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট মো. সাবেদ আলী বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা নিয়মিত মাদ্রাসায় না আসায় কিছু ভুল হয়েছে। যেগুলো খুব বড় ধরনের ভুল নয়। এগুলো সংশোধন করার জন্য বোর্ডের দরজা সব সময় খোলা আছে। আমরা এসব ঝামেলা ঠিক করে নেব।’
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে ঈদুল ফিতরের আগেই প্রবেশপত্র শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। যাতে করে কোনো ভুলভ্রান্তি পরিলক্ষিত হলে সংশোধন করা যায়। পরীক্ষার প্রবেশপত্রে যে ভুলগুলো হয়েছে, এর সম্পূর্ণ দায়ভার প্রতিষ্ঠান প্রধানকেই নিতে হবে।’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, ‘এডিসিকে (শিক্ষা) প্রবেশপত্রগুলো দ্রুত সংশোধন করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছি। আশা করি, সংশোধন হয়ে যাবে।’
- তৈয়ব আলী সরকার/এমজে