Logo

সারাদেশ

আকাশি জাতের মরিচ চাষে বিপাকে পঞ্চগড়ের কৃষকরা

Icon

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১২ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৩২

আকাশি জাতের মরিচ চাষে বিপাকে পঞ্চগড়ের কৃষকরা

ক্ষোভে মরিচ গাছ উপড়ে ফেলছেন চাষিরা | ছবি : বাংলাদেশের খবর

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় মরিচ উৎপাদনে হঠাৎ ধস নেমেছে। বিশেষ করে আকাশি জাতের মরিচ চাষে মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন কৃষকরা। গাছ ভালো হলেও মরিচ না ধরায় অনেক কৃষক ক্ষোভে ক্ষেত থেকে গাছ উপড়ে ফেলছেন।

সরেজমিনে তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের ফুটকিবাড়ি গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, মরিচ না ধরায় কৃষক আমিনুর রহমান তার এক বিঘা জমির মরিচ গাছ তুলে ফেলছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আকাশি জাতের মরিচ লাগিয়েছি। পাশের জমির কারেন্ট জাত ভালো ফলন দিচ্ছে, কিন্তু আমার গাছে মরিচই ধরেনি। ঋণ করে ওষুধ কিনেছি, কিন্তু কিছুতেই ফল হয়নি। তাই ক্ষোভে গাছ তুলে ফেলছি।’

রবিউল ইসলাম নামের আরেক মরিচ চাষি বলেন, ‘৫০ শতক জমিতে মরিচ লাগিয়েছি। মরিচের অবস্থা খুব বেশি একটা ভালো নয়। অনেক ওষুধপাতি দিলাম। কিন্তু কোনো কাজে আসতেছে না। গাছ আছে কিন্তু মরিচ ধরতেছে না। এখন ভাবছি উপড়ে ফেলব।’

তিনি বলেন, ‘এখন যদি পাট আবাদ করি, পাটও যদি এরকম হয় তাহলে কোনদিকে যাব। খরচ তো কম হয় না, বহু টাকা খরচ করলাম। বহুত রকমের ওষুধ দিলাম; কিন্তু কোনো কাজে আসতেছে না।’ একই কথা জানান এলাকার অন্যান্য মরিচ চাষিরাও।

এদিকে কীটনাশক ব্যবসায়ী ফজলু হোসাইন বলেন, ‘এই সমস্যাটা এর আগে আমি কোনোদিন দেখিনি। যে কারণে রোগটা আমরা নির্ণয় করতে পারতেছি না। কৃষি কর্মকর্তারাও এসেছিলেন, তারাও বেশ কয়েকবার ট্রিটমেন্ট দিলেন। কিন্তু কোনো পরিবর্তন আসতেছে না। এখন বলা হচ্ছে, বৃষ্টি হলে হয়তো এর সমস্যা কাটতে পারে। কিন্তু এই অবস্থায় তো পানির কোন ভরসা পাওয়া যাচ্ছে না।’

কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয়ের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোসাদ্দেকুর রহমান হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে ফুটকিবাড়ি এলাকায় মরিচ চাষির এখানে গিয়েছিলাম। আকাশি জাতটা অনেক পুরাতন জাত। এখানে অনেক কৃষক ভাইয়েরা আকাশি জাত মরিচ চাষ করেছেন। আগাম কিছু জাত আছে যেমন এলসি কারেন্ট, পাবনাইয়া চোখমুন্দা, হটমাস্টার এগুলোর ফলন আবার ঠিক আছে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো। কিন্তু এই আকাশি জাতটার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুবই কমে গেছে। বিশেষ করে খরার কারণে উচ্চ তাপমাত্রায় কারণে এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাষিদের পরামর্শ দিচ্ছি, ক্ষেতে পানি দিতে। আল্লাহ চাহেতো বৃষ্টি হলে এই সমস্যাটা দূর হতে পারে।‘

তেঁতুলিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তামান্না ফেরদৌস বলেন, ‘এ বছর ৯২০ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে আকাশি জাতের মরিচ ফলন সবচেয়ে কম। অধিকাংশ ক্ষেতেই ডগা শুকিয়ে যাচ্ছে, ফুল ঝরে পড়ছে। অতিরিক্ত হরমোন প্রয়োগও একটি কারণ। বৃষ্টি হলে পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।’

কৃষকদের যাবতীয় সমস্যা নিরসনে মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারীরা বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।

এসকে দোয়েল/এটিআর

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর