
এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার দ্বিতীয় দিন ছিল মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল)। অনেকে বাবা-মাকে নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে গেলেও তৃশার গল্পটা ছিল ভিন্ন। বাবার লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন খাদিজা আক্তার তৃশা।
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার ভীমখালী ইউনিয়নের ছোট ঘাগটিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওই গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে তৃশা এ বছর জামালগঞ্জ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও এসএসসি পরিক্ষার্থী।
জানা যায়, আব্দুর রাজ্জাক সোমবার রাতে শ্বাসকষ্ট ও কিডনি রোগে নিজ বাড়িতে মারা যান। নিহত আব্দুর রাজ্জাকের ২ মেয়ে ও ১ ছেলে সন্তান রয়েছে। তৃশা তার দ্বিতীয় সন্তান। মৃত্যুকালে আব্দুর রাজ্জাকের বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় তার জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন হয়।
খাদিজা আক্তার তৃশা বলেন, বাবার স্বপ্ন ছিল আমি যেন লেখাপড়া শিখে একজন আদর্শ শিক্ষক হই। কিন্তু হঠাৎ করেই বাবা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। বাবা মারা যাওয়ায় পরীক্ষা দেওয়ার মানসিকতা ছিল না। কিন্তু বাবার স্বপ্নের কথা মনে করে অনেক কষ্টে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছি। আল্লাহর রহমতে পরীক্ষা ভালো হয়েছে। আপনারা সবাই আমার বাবা ও আমার জন্য দোয়া করবেন।
জামালগঞ্জ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিধান ভূষন চক্রবর্ত্তী বলেন, মেয়েটি আমার স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। সে খুব মেধাবী ও বিনয়ী। হঠাৎ করে তার বাবার মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে আমরা অত্যন্ত কষ্ট পেয়েছি। তৃশাকে আমরা শিক্ষকরা মানসিকভাবে সাপোর্ট দিয়েছি। সে যেন সুন্দরভাবে পরীক্ষা দিতে পারে, সে জন্য সার্বিক সহযোগিতা করেছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুশফিকীন নূর বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। তৃশা যাতে সবগুলো পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ভালো ফলাফল করতে পারে, সে জন্য উপজেলা প্রশাসনপর পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা থাকবে।
আব্দুল হালিম/এমজে