পাওনা টাকা চাওয়ায় দোকানিকে পিটিয়ে হত্যা, লাশ নিয়ে বিক্ষোভ

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৩৫

ঝিনাইদহের সদর উপজেলার বাদপুকুরিয়া গ্রামে পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে মোহাম্মদ আলী (৫৮) নামে এক দোকানিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার পর লাশ নিয়ে সড়কে বিক্ষোভ করেছেন নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ঘটনার পরে মামলা নিতে সদর থানা পুলিশ টালবাহানা করছে।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা মহাসড়কের উত্তর নারায়ণপুরে ত্রিমোহনী মোড় সড়ক অবরোধ করে লাশ নিয়ে বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে। এ সময় সড়কের দু’পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পাওনা টাকা চাওয়ায় স্থানীয় বাদপুকুর গ্রামের মুদি দোকানি মোহাম্মদ আলীকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। নিহত মোহাম্মদ আলী সদর উপজেলার সাগান্না ইউনিয়নের বাদপুকুর গ্রামের বাসিন্দা।
এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটকরা হলেন, অভিযুক্ত আসাদুল ইসলাম (১৯), তার বাবা আশকর আলী (৬২) ও আশকর আলীর স্ত্রী আয়েশা বেগম।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, সকালে পাওনা ৮৫০ টাকা আদায়ের জন্য আসাদুল ইসলামের কাছে যান মুদি দোকানি মোহাম্মদ আলী। ওই সময় আসাদুল ইসলাম (১৯), তার বাবা আশকর আলী (৬২), আশকর আলীর স্ত্রী মিলে মোহাম্মদ আলীকে বেধড়ক মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে মোহাম্মদ আলী চিৎকার করে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ সময় স্থানীয়রা এসে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে পাঠান। হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান মোহাম্মদ আলী। ঘটনার পর নিহতের পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
মোহাম্মদ আলীর ছেলে মশিয়ার রহমান বলেন, ঘটনার পর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও সদর থানা পুলিশ হত্যা মামলা নিতে গড়িমসি করছে। দুপুর থেকে মামলা দায়েরের চেষ্টা করলেও পুলিশ নানান অজুহাত দেখিয়ে মামলা নেয়নি। যে কারণে রাতেই লাশ নিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পাওনা টাকা চাইতে গেলে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে আমার বাবাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমরা যেন মামলা না করি, তার জন্য নানারকম চাপ দেওয়া হচ্ছে। থানায় গিয়ে মামলা দায়েরের চেষ্টা করলেও পুলিশ গড়িমসি করে।
পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে থানা পুলিশ হত্যা মামলা গ্রহণ করে বলে জানিয়েছেন বিক্ষুব্ধরা।
ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন বলেন, এ ঘটনায় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। মামলা না নেওয়ার কোনো কারণ নেই। তারা মামলা নিয়ে এলে এজাহার সংশোধন করতে বলা হয়েছে। এরপর আর তারা আসেনি। তারপরও আমরা মামলা নিয়েছি।
লাশ নিয়ে সড়ক আটকে বিক্ষোভের বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া বলেন, বিক্ষোভ কেন করছে, সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মামলা না নেওয়ার মতো কিছু নেই। অবশ্যই মামলা নেবে পুলিশ। তারপরও বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।
এম বুরহান উদ্দীন/এমজে