বিদ্যুৎ বিলের কাগজে হাসিনার উন্নয়নের স্লোগান, গ্রাহকদের ক্ষোভ

ফেনী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৩৪

ফেনীর পরশুরামে ‘শেখ হাসিনার উদ্যোগ, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’ স্লোগান সংবলিত বিদ্যুৎ বিলের কপি ৩০ হাজার গ্রাহকের মধ্যে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। অনেক গ্রাহক ক্ষোভ প্রকাশ করছেন পরশুরাম পল্লি বিদ্যুৎ সাব জোনাল অফিসের ওপর।
তবে এ বিষয়ে জানার জন্য সাব জোনাল অফিসের কর্মকর্তা (ডিজিএম) সনৎকুমার ঘোষ বলেন, ‘আগের অনেক বিদ্যুৎ বিল রয়ে গেছে। এটা আসলে ভুল হয়েছে। ভুলে গ্রাহকের কাছে পৌঁছে গেছে। এটা আমি দেখব।’
শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর ৮ মাস রাষ্ট্রীয়সহ বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান থেকে তার নাম মুছে গেলেও পরশুরাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি পরশুরাম সাব জোনাল অফিসের বিলের কপিতে রয়ে গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, শেখ হাসিনার ভুয়া উন্নয়নের প্রচার এখনো অব্যাহত। এর একমাত্র কারণ ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের দোসর নিয়োগ। তারাই আওয়ামী লীগ নিয়ে মায়াকান্না করছে। সুযোগ পেলে আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করে।
সরেজমিনে ঘুরে জানা গেছে, পরশুরাম উপজেলায় পল্লি বিদ্যুতের ৩০ হাজার গ্রাহক রয়েছেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর থেকে সারা দেশে শেখ হাসিনা এবং তার দলের ফলকসহ টাঙানো ছবি সরিয়ে ফেলা হয়। কিন্তু এখনো বাদ হয়নি পরশুরাম উপজেলা সাব জোনাল অফিসের বিদ্যুৎ বিলে শেখ হাসিনা উন্নয়নের স্লোগান। ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসের বিলের কাগজেও তা দৃশ্যমান রয়েছে।
এ নিয়ে পল্লি বিদ্যুৎ সমিতির গ্রাহক, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা, বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলে চলছে ক্ষোভ ও আলোচনা-সমালোচনা। যেকোনো সময় এ নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবদুল হালিম মানিক বলেন, খুনি হাসিনার পতনের ৮ মাস পর উন্নয়নের স্লোগান বিদ্যুৎ বিলে প্রচার চলছে। যা খুবই দুঃখজনক। গত পনেরো বছর আমরা যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি, গত ৮ মাসে আওয়ামী লীগের কিছুই হয়নি। যারা হাসিনার উন্নয়ন নিয়ে ব্যস্ত, তাদের আইনের আওতায় আনা হোক। গত পনেরো বছরের মতো এখনো বিভিন্ন দপ্তরে দায়িত্বহীনতা নিয়ে কাজ চলছে। স্বৈরাচারের বিদায় হয়েছে। কিন্তু স্বৈরাচারের দোসরদের বিদায় হয়নি।
রায়হান নামে এক গ্রাহক বলেন, ‘সব জায়গা থেকে ফ্যাসিস্ট হাসিনার নাম বাদ দিলেও বিদ্যুৎ বিলের কাগজে আওয়ামী লীগের উন্নয়নের স্লোগান বাদ যায়নি। এখনো প্রচার চলছে। এটা দ্রুত সমাধান করা দরকার।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বক্স মাহমুদ ইউনিয়নের নরনিয়া গ্রামে এক শিক্ষক বলেন, গত পনেরো বছর আওয়ামী লীগের যন্ত্রণায় ঠেকা যায়নি। শিক্ষাঙ্গন পর্যন্ত বাদ যায়নি তাদের প্রচার থেকে। এখনো তাদের ভুয়া উন্নয়নের প্রচার চলে। কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। একজন ফ্যাসিবাদী ব্যক্তির নাম কেন থাকবে? এই দেশ কারো বাপের নয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, ‘পল্লি বিদ্যুতের ডিজিএমকে বিষয়টি জানান। আমি দেখব।’
এমরান পাটোয়ারী/এমজে