মানিকগঞ্জে নৌপথে প্রকাশ্যে ছিনতাই-চাঁদাবাজি, আতঙ্কে নৌযানশ্রমিকরা

আফ্রিদি আহাম্মেদ, মানিকগঞ্জ
প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৫:৫৪
-680372d214abf.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
মানিকগঞ্জের শিবালয় ও দৌলতপুর উপজেলার পদ্মা-যমুনা নদীপথে প্রকাশ্যে ছিনতাই ও চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। প্রতিদিন শতাধিক বালুবোঝাই বাল্কহেড ও পণ্যবাহী নৌযান আটকিয়ে টাকা আদায় করা হচ্ছে। চাঁদা না দিলে চালকদের মারধর করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সিরাজগঞ্জসহ আশপাশের জেলা থেকে বালুবোঝাই বাল্কহেডযোগে পদ্মা ও যমুনা নদীপথে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বালু সরবরাহ করা হয়। এসব বাল্কহেড থেকে প্রতিদিন জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করছে একটি জলদস্যু চক্র। এদের বেশির ভাগই শিবালয় উপজেলার তেওতা ইউনিয়নের আলোকদিয়া এবং দৌলতপুর উপজেলার চরকাটারি ইউনিয়নের বাসিন্দা।
জানা গেছে, প্রতিদিন ৬ থেকে ৮টি ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে সংঘবদ্ধভাবে নদীতে নামে এই জলদস্যুরা। প্রতিটি নৌকায় ১০–১২ জন করে সশস্ত্র সদস্য থাকে। এদের হাতে থাকে আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র—রামদা, হাসুয়া, লাঠিসোটা। বাল্কহেড থামিয়ে তারা মোবাইল ফোন ও টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেয়।
শুকানি ও মাস্টাররা বলছেন, এ জলদস্যুদের দৌরাত্ম্যে নদীপথে চলাচল দিনদিন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে।
আজিজ পরিবহনের শুকানি হাসান বলেন, ‘আমি গত মঙ্গলবার সিরাজগঞ্জ থেকে বালুবোঝাই বাল্কহেড নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিলাম। আলোকদিয়া চরের বিদ্যুৎ পিলারের কাছে গেলে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা আমার বাল্কহেডে উঠে পড়ে। তারা ৫০০ টাকা দাবি করে। না দেওয়ায় মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয় ও হেলপারকে মারধর করে।’
রিসালাত পরিবহনের মাস্টার ইকবাল বলেন, ‘আমরা প্রতিদিনই নদীতে চলাচল করি। শিবালয় ও দৌলতপুর এলাকার কিছু জায়গা থেকে জোর করে টাকা আদায় করা হচ্ছে। টাকা না দিলে মারধর করা হয়। আমি নিজেও হামলার শিকার হয়েছি।’
পাটুরিয়া নৌ পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। কেউ অভিযোগ করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
শিবালয় থানার ওসি মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘আমি বিষয়টি অবগত আছি। অভিযানে একটি টিম পাঠানো হয়েছে। জড়িতদের ধরতে কাজ চলছে।’
স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব জলদস্যুরা দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি চালিয়ে এলেও তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ফলে নৌপথে নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন শ্রমিকরা।
এআরএস