Logo

সারাদেশ

সীমান্তে হত্যা, পতাকা বৈঠকেই সীমাবদ্ধ!

Icon

মাল্টিমিডিয়া করেসপন্ডেন্ট, লালমনিরহাট

প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১৮:২৩

সীমান্তে হত্যা, পতাকা বৈঠকেই সীমাবদ্ধ!

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সীমান্তে গুলি করে বাংলাদেশি হত্যা, ধরে নিয়ে যাওয়া, নির্যাতন এবং শূন্যরেখা বরাবর কাঁটাতারের বেড়া ও ল্যাম্পপোস্ট স্থাপনের চেষ্টা বন্ধই হচ্ছে না। গত ৮ বছরে শুধু লালমনিরহাট সীমান্তেই ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে প্রাণ হারিয়েছেন অসংখ্য বাংলাদেশি।

সীমান্ত হত্যা বন্ধে বাংলাদেশ ও ভারতের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে প্রতিশ্রুতি দিলেও কথা রাখেনি বিএসএফ। আন্তর্জাতিক সীমান্তে এমন মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটিরও বিচার হয়নি।

সীমান্ত সূত্রে জানা যায়, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় লালমনিরহাট সীমান্ত পথে গবাদিপশু পাচার, আত্মীয়র সঙ্গে দেখা বা ভালো কাজের খোঁজে দুই দেশের মানুষ সীমান্ত পারাপার করে থাকে। শূন্যরেখার কাছে কৃষিকাজ কিংবা মৎস্য আহরণের জন্যও অনেককে সীমান্ত অতিক্রম করতে হয়। 

ভুল করে কেউ ভারতীয় সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার কাছে গেলে বা অরক্ষিত সীমান্ত সামান্য অতিক্রম করলেই শুরু হয় বিএসএফের আগ্রাসী তৎপরতা। সীমান্তে চোরাচালান ও বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অভিবাসন প্রতিরোধের কারণ দেখিয়ে বিএসএফের বিতর্কিত শুট অন সাইট (দেখামাত্র গুলি) নীতি সীমান্তে বহাল রয়েছে।

গত তিনদিনে বিএসএফের নির্যাতন, হত্যা ও বাংলাদেশি ধরে নিয়ে যাওয়ার রেশ কাটতে না কাটতেই অপরদিকে পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম বিওপির সীমান্তে বিএসএফ সীমান্তের শূন্য লাইনের ৭০ গজ ভারতের পাশে মাটি খনন করছিল। তারা অত্যাধুনিক ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি খননের কাজ করে আসছিল। বিষয়টি  শনিবার দুপুরে বিজিবির নজরে আসে।  তারা বাঁধায় দিলে বিএসএফ খনন কাজ বন্ধ করেছে বলে জানা গেছে।

বিগত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতন সহ্য করতে না পেরে ভারত বাংলাদেশের ওপর যেন আরো প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে উঠেছে। হাসিনা-মোদি মিলে অন্তর্বর্তী সরকারকে শুরু থেকেই ব্যর্থ করে দেওয়ার বহু ষড়যন্ত্র করেছেন। সংখ্যালঘু নির্যাতনের কথা বলে বাংলাদেশকে নিয়ে মিথ্যা প্রচারণা থেকে শুরু করে নানাভাবে হুমকি দিয়েছে।

সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিলেও থেমে নেই বিএসএফের গুলিতে প্রাণহানির ঘটনা। পতাকা বৈঠকেই সীমাবদ্ধ সমাধানের পথ। সীমান্ত হত্যা বন্ধে ভারত বারবার আশ্বাস দিলেও সেটার বাস্তবায়ন শূন্যের কোঠায়। বিএসএফ গুলি করে বাংলাদেশি হত্যা, ধরে নিয়ে যাওয়া ও নির্যাতন এবং শূন্যরেখা বরাবর কাঁটাতারের বেড়া ও ল্যাম্পপোস্ট স্থাপনের চেষ্টা যেন বন্ধই হচ্ছে না। 

দহগ্রাম সংগ্রাম কমিটির সম্পাদক রেজানুর রহমান রেজার মতে, মাথা উঁচু করে সীমান্ত হত্যার কড়া জবাব দিতে না পারলে এ ধারা অব্যাহত থাকবে। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে ভারতকে লিখিতভাবে অভিযোগ করে অফিসিয়ালি জবাব চাইতে পারে বাংলাদেশ। যদি এতে সমাধান না হয়, তাহলে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে। দেশি ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত আইনের মাধ্যমে সীমান্ত হত্যা বন্ধে বাংলাদেশ সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘ ৬৮ বছর ধরে ঝুলে থাকা ছিটমহল সমস্যার সমাধান হওয়ার পর বিএসএফের সীমান্তে হত্যা বন্ধ হবে। কিন্তু সম্প্রতি পত্রিকার পাতা ওল্টালেই দেখা যাচ্ছে সীমান্তে বিএসএফের হাতে বাংলাদেশি নিহত হয়েছে বা বিএসএফ ধরে নিয়ে গেছে।

রাহেবুল ইসলাম টিটুল/এমআই

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর