কেরানীগঞ্জে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ, থানায় মামলা

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫৩

ছবি : বাংলাদেশের খবর
ঢাকার কেরানীগঞ্জে বিএনপির এক নেতার বিরুদ্ধে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদা দাবি, দোকান দখল, লুটপাট ও মারধরের অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্ত কানন শিকদার শুভাঢ্যা ১নং ইউনিট বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
ঢাকার কেরানীগঞ্জে বিএনপির নেতার বিরুদ্ধে এক ব্যবসায়ীর কাছে ‘প্রথমে ২০ লাখ, পরে দিতে কালক্ষেপণ করায় সাত দিনের মধ্যে কোটি টাকা দাবি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল, ভাঙচুর, লুটপাট ও মারধরের’ অভিযোগে থানায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী।
মামলায় বিএনপি নেতা কানন শিকদারসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অভিযুক্ত কানন শিকদার শুভাঢ্যা ১নং ইউনিট বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টস পল্লীর ব্যবসায়ী মো. সজিব বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলাটি (মামলা নং-৪০) দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে জানা যায়, কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টস পল্লীর নুরুন্নাহার মার্কেটের আন্ডারগ্রাউন্ডের ‘প্যান্ট ক্লাব’ নামক একটি তৈরি পোশাকের দোকানের স্বত্বাধিকারী মো. সজিব নতুন আরেকটি দোকান নিয়ে ডেকোরেশন করার সময় কানন শিকদার তার কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী সজিব কেরানীগঞ্জ গার্মেন্টস ব্যবসায়ী দোকান-মালিক সমবায় সমিতির নিকট অভিযোগ করেন। কানন শিকদার ক্ষিপ্ত হয়ে দোকান ঘরটি দখল করে নিয়ে এবার এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে সাত দিনের সময় বেঁধে দিয়ে যান।
পরবর্তীতে চাঁদা না পেয়ে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি কানন শিকদার ও তার সহযোগী লিখন, আবু বক্কর, ফয়সাল, আলাউদ্দিনসহ ২০-২৫ জন নিয়ে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী সজিব ও তার বড় ভাই রাজীবকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দোকানে ঢুকে বেধড়ক মারধর করে। এ সময় তারা তাদের গলায় থাকা দুটি স্বর্ণের চেইন, একটি ওয়ানপ্লাস মোবাইল ও ক্যাশ বাক্সে থাকা দেড় লাখ টাকা নিয়ে যায়।
হামলার ঘটনার একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ তাৎক্ষণিকভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ অনলাইন বিভিন্ন মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। হামলার সময় হকিস্টিক, কিল-ঘুষিতে সজিবের সামনের দুটি দাঁত ভেঙে যায়। তার বড় ভাই রাজীবকে হকিস্টিক ও রড দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করা হয়। পরবর্তীতে তাদের উদ্ধার করে সজিবকে প্রাথমিক চিকিৎসা এবং বড় ভাই রাজীবকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মো. সজিব জানান, কানন শিকদারের সঙ্গে আমার কোনো ব্যবসায়িক বা পারিবারিক বিরোধ নেই। কী কারণে সে হঠাৎ চাঁদা দাবি করে এবং আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করে তা বুঝতে পারছি না। হামলার ঘটনার পর থেকে জীবনের নিরাপত্তার ভয়ে আছি। আমার বড় ভাই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছেন না।
এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত কানন শিকদার বলেন, আমি সজিবের বড় ভাই রাজীবের কাছে ব্যবসায়িকভাবে টাকা পাওনা আছি। সেই টাকা চেয়েছি, কোনো চাঁদা চাইনি। পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে তাদের দোকানের সামনে একদিন ঝগড়াঝাঁটি হয়েছিল। তবে এ ঘটনায় চাঁদাবাজির মামলা করে থাকলে এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা, আমি কোনো চাঁদা চাইনি। তিনি আরও বলেন, পুলিশ আমার কী করবে, তারা না জেনে কীভাবে মামলা নিল?
কানন শিকদার বলেন, ‘আমার বড় ভাই এসপি, আরেক বড় ভাই ডিসি—তাদের দিয়েই সব শেষ করব।’
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মাজহারুল ইসলাম বলেন, থানায় মামলা রেকর্ড করার পর আসামি গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এরশাদ হোসেন/এমবি