জোঁকা বিলে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ৭ অংশীদার বহিষ্কৃত

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১ এপ্রিল ২০২৫, ১৬:২৭

রাজশাহী জেলার হাট মাধনগর উপজেলার জোঁকা বিল মৎস্যচাষ প্রকল্পে প্রায় ২৬ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ক্যাশিয়ারসহ ৭ জন অংশীদারের বিরুদ্ধে। গত ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হিসাব পরীক্ষায় ২০ লাখ ৭১ হাজার ৫০০ টাকার অনিয়মের প্রমাণ মিললেও প্রকৃত আত্মসাতের পরিমাণ আরও বেশি বলে দাবি করেছেন অন্যান্য অংশীদাররা।
সোমবার (২১ এপ্রিল) প্রকল্পের এক জরুরি সভায় অভিযুক্তদের শেয়ার বাজেয়াপ্ত করে নিজ নিজ গ্রামে বণ্টনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একইসাথে তাদের বহিষ্কার করে অর্থ ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ব্যর্থ হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
সভায় অংশীদাররা বলেন, ‘টাকার পরিমাণ যতই হোক, এই অসাধুতার বিরুদ্ধে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব। যারা সহযোগিতা করেছে, তাদেরও ছাড় দেওয়া হবে না।’
প্রধান হিসাবরক্ষক সাজেদুর রহমান মিঠু জানান, প্রথমে বুঝতে পারিনি, আমাদের অজ্ঞাতে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। পরে কাগজপত্র চেক করে দেখি ৭ জন অংশীদার মিলেই প্রতারণার মাধ্যমে টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
স্থানীয় জামায়াত ও বিএনপির নেতাকর্মীরা বলেন, এই প্রকল্প এলাকার শতাধিক পরিবারের জীবিকার উৎস। আমরা চাই দোষীদের শাস্তি হোক এবং প্রকল্প যেন আগের মতো চলতে পারে।
সভা শেষে প্রকল্পের সভাপতি এফাজুর রহমান জানান, এই প্রকল্পের দায়িত্ব আমাদের সবার। কিন্তু যারা অনিয়ম করেছে, তারা মানুষের পেটে লাথি মেরেছে। তাই তাদের শেয়ার বাজেয়াপ্ত করে নিজ গ্রামে বিতরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং অর্থ ফেরতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অভিযুক্তরা হলেন :
১. জনাব আলী (পানিয়া) – সহ-সভাপতি
২. মাহাবুর রহমান (হাট মাধনগর) – সহ-সভাপতি
৩. হেলাল উদ্দিন (বাসুদেবপাড়া) – ক্যাশিয়ার
৪. জাহাঙ্গীর আলম (বাসুদেবপাড়া) – হিসাবরক্ষক
৫. আমিনুল হক (বাসুদেবপাড়া) – সদস্য
৬. আবু বক্কর ছিদ্দিক (বাসুদেবপাড়া) – সদস্য
৭. রাশেদুল ইসলাম ঝন্টু (হাট মাধনগর) – সদস্য
জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ে স্বাক্ষরিত দলিল ও হিসাব খতিয়ে দেখে ১৯ লাখ ৭৮ হাজার টাকা ফেরতের তথ্য পাওয়া গেছে।
১২৫ জন অংশীদারের মধ্যে ৮০ জন উপস্থিত থেকে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ঘোষণা দেওয়া হয়, ‘অন্যায়কারীদের ক্ষমা নেই– প্রয়োজনে আদালতের আশ্রয় নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত জাহাঙ্গীর আলম তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ পুরোটা মিথ্যা দাবি করে বাংলাদেশের খবরকে বলেন, সভাপতি কয়েকজনের কাছে টাকা রেখেছিলো। আর সেই চক্রান্ত করে তাদের ফাঁসাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের শেয়ার বাজেয়াপ্ত করার তিনি কে?
তিনি বলেন, আমি এটা কোনোভাবেই মানি না। এগুলো পাগলের কারবার।
আরও কয়েকজন অভিযুক্তকে কল দেওয়া হলেও তারা কল রিসিভ করেননি। তাই তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।
জেসি/এমএইচএস