Logo

সারাদেশ

মুন্সীগঞ্জ সিভিল সার্জনের বিরুদ্ধে ১৪ লাখ টাকার অডিট আপত্তি

বদলি ঠেকাতে রিট, নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

Icon

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:১৫

মুন্সীগঞ্জ সিভিল সার্জনের বিরুদ্ধে ১৪ লাখ টাকার অডিট আপত্তি

মুন্সীগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মঞ্জুরুল আলমের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের চূড়ান্ত অডিট প্রতিবেদনে ১৪ লাখ ৩৪ হাজার ৮৪৩ টাকার অনিয়ম ধরা পড়েছে। ওই সময় তিনি মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন।

স্বাস্থ্য অডিট অধিদপ্তরের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, অডিট আপত্তির অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা এবং সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন। অডিটের ১৯৩ ও ১৯৪ নম্বর পর্যবেক্ষণে যথাক্রমে ৬ লাখ ১০ হাজার ৩৪৩ টাকা ও ৮ লাখ ২৪ হাজার ৫০০ টাকার অনিয়মের কথা উল্লেখ করা হয়।

বর্তমানে হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ডা. আহমেদ কবির বলেন, ‘এই আপত্তির নিষ্পত্তি না হলে অভিযুক্ত কর্মকর্তার পেনশন থেকে অর্থ কর্তন হতে পারে।’

বদলি ঠেকাতে রিট

২০২৪ সালের ৭ জুলাই ডা. মঞ্জুরুল আলমকে মুন্সীগঞ্জ থেকে খুলনা বিভাগের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) পদে বদলি করা হয়। তার স্থলে নড়াইলের সিভিল সার্জন ডা. সাজেদা খানমকে মুন্সীগঞ্জে বদলি করা হয়। তবে ডা. সাজেদা যোগদানের জন্য তারিখ নেওয়ার পর জানতে পারেন, মঞ্জুরুল আলম হাইকোর্টে রিট করে বদলি স্থগিত করে ফেলেছেন।

রিটের বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. মঞ্জুরুল আলম বলেন, ‘অফিসে গিয়ে বদলি আটকাতে গেলে দেরি হয়ে যেত। চাকরির মেয়াদ অল্প থাকায় আমি আদালতের শরণাপন্ন হই।’

অন্যদিকে, ডা. সাজেদা খানম জানান, স্বামীর মৃত্যুর পর মানবিক বিবেচনায় তাকে ঢাকার আশপাশে বদলির আবেদন মঞ্জুর করা হয়। অথচ মুন্সীগঞ্জে যোগদানের আগেই রিটের কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। পরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তাকে ফরিদপুরে বদলি করে।

নিয়মবহির্ভূত নিয়োগের অভিযোগ

পিআরএল-এ থাকা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর গাজী মো. আমীনকে নিয়মবহির্ভূতভাবে জেলা স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক ও হিসাবরক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে ডা. মঞ্জুরুল আলম বলেন, ‘এ ধরনের কোনো নিয়োগ আমি দিইনি। কাগজ থাকলে তা ভুয়া হতে পারে।’

তবে গাজী মো. আমীন সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেছেন, সিভিল সার্জন তাকে ওই দায়িত্ব দিয়েছেন।

সিভিল সার্জন অফিসের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, নিয়োগ কমিটিতে না থেকেও গাজী আমীন প্রার্থী যাচাই-বাছাইসহ প্রায় সব কাজ পরিচালনা করছেন।

নিয়োগ বাণিজ্যের গুঞ্জন

আগামী মে মাসে মুন্সীগঞ্জ স্বাস্থ্য বিভাগে ১৪২টি পদে নিয়োগ হওয়ার কথা রয়েছে। অথচ আগামী ১১ জুলাই সিভিল সার্জন ডা. মঞ্জুরুল আলমের পিআরএল-এ যাওয়ার কথা রয়েছে। এ অবস্থায় দ্রুত নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে তিনি ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি নিয়োগ কমিটির একজন সদস্য মাত্র, সব কাজ আমি করি না।’ কিন্তু বাস্তবে রাজস্ব খাতের এই নিয়োগ কার্যক্রম তার দপ্তর থেকেই পরিচালিত হচ্ছে।

সিভিল সার্জনের বিরুদ্ধে ওঠা একের পর এক অভিযোগ, বদলি ঠেকাতে রিট, অডিট আপত্তি এবং নিয়োগ সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরেও আলোচনা চলছে। সচেতন মহলের দাবি, এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

এমজে/এআরএস

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর