
চিকিৎসা সেবার জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে আসা রোগীরা যেন বড্ড অসহায়। চরম অব্যবস্থাপনা ও সেবামানের নিম্নগতির কারণে হাসপাতালটি এখন নিজেই ‘রোগী’তে পরিণত হয়েছে। হাসপাতালের প্রতিটি বিভাগে অনিয়ম ও জনবল সংকট চরমে পৌঁছেছে। এ ছাড়া বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাব ও আইসিইউ ইউনিট না থাকায় সংকট দিন দিন বেড়েই চলছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ২৫০ শয্যার এই হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক ও নার্স নেই। ফলে প্রতিদিন সেবা নিতে আসা সহস্রাধিক রোগীকে সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।
এদিকে, ২০১৬ সালে হাসপাতালের নির্মিত নতুন ভবনে আইসিইউ এবং সিসিইউ ব্যবস্থা থাকলেও আজ পর্যন্ত তা চালু হয়নি। ফলে আইসিইউ এবং সিসিইউ সেবার অভাবে জেলার অনেক রোগীকে ঢাকায় নেওয়ার পথে মৃত্যু ঘটছে।
সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, আউটডোরে চিকিৎসা নিতে রোগীদের চাপ তীব্র। এ ছাড়া টিকিট কাউন্টারেও উপচে পড়া ভিড়।
চিকিৎসা নিতে আসা রোগী সালমা বলেন, সেই সকাল ১০টায় এসেছি। অনেক ভিড়। এখন ১২টা বেজে গেছে তবু ডাক্তার দেখাতে পারিনি।
তিনি বলেন, এক বছর আগে আমার বড় বোনের হার্টের সমস্যা দেখা দিলে তাকে এই হাসপাতালে আনা হয়। এ সময় তার শ্বাসকষ্ট হলে আইসিইউ’র অভাবে ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যান। হাসপাতালের আইসিইউ ও সিসিইউ যে কতটা জরুরি, সেটা আমাদের মতো ভুক্তভোগী পরিবারগুলো বুঝতে পারে।
তিনি আরও বলেন, কোটি কোটি টাকা দিয়ে হাসপাতালের আইসিইউ এর যন্ত্রপাতি আনা হয়েছে। সেগুলো চালু না হওয়ার কারণে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। আর কতদিন আমরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত থাকব।
হাসপাতালের বিভিন্ন রোগী ও স্বজনরা বলেন, অতিরিক্ত চাপে প্রায় সময়ই রোগীদের মেঝেতে বিছানা করে থাকতে হয়। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় সময় দিতে পারেন না চিকিৎসকরা। চিকিৎসক সংকটের কারণে চেম্বারে রোগী রেখেই ভিজিটে চলে যেতে হয় তাদের। জনবল না থাকায় বেশিভাগ রোগীকেই ঢাকায় পাঠানো হয়। ফলে পথেই মারা যান অনেকে। নতুন ভবনটি চালু করে জনবল বাড়িয়ে চিকিৎসাসেবা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন বলে জানান তারা।
জনবলের অভাবে চালু হচ্ছে না আইসিইউ ইউনিট
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মুন্সীগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয় করেও শুধু জনবলের অভাবে চালু করা যাচ্ছে না আইসিইউ এবং সিসিইউ ইউনিট। অযত্ন-অবহেলায় পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকা মূল্যের যন্ত্রপাতি। এতে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে জেলার লাখ লাখ মানুষ।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বারবার আবেদন করেও প্রয়োজনীয় লোকবল পাওয়া যাচ্ছে না। ২০২৩ সালের ১৪ নভেম্বর করোনাকালীন হাসপাতালের নতুন ভবনের ৭ তলায় ১০ শয্যা বিশিষ্ট আইসিইউ ইউনিটের উদ্বোধন করা হয়। ইউনিটটির জন্য ভেন্টিলেটর, বেডসহ সব ধরনের যন্ত্রপাতি দিয়ে সাজানো হলেও কেবলমাত্র জনবলের অভাবে তা থেকে সেবা নেওয়া যাচ্ছে না।
হাসপাতালের আইসিইউ ও সিসিইউ ইউনিট ঘুরে দেখা যায়, বাইরে থেকে ধুলোবালি উড়ে ইউনিটের ভেন্টিলেটর, শয্যাসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম।
এ বিষয়ে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মো. আরিফুজ্জামান বলেন, হাসপাতালটি সম্প্রতি ১০০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যায় রূপান্তর করা হয়েছে। আইসিইউ ও সিসিইউ খুব যত্নশীল একটি ইউনিট। এই ইউনিট শুধু চালু করে রাখলেই হয় না; এটিকে রক্ষণাবেক্ষণও করতে হয়। চালু ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে হলে আমাদের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে জনবল।
কিন্তু হাসপাতালটিতে যেই পরিমাণ জনবল থাকার কথা; সে পরিমাণ জনবল পাইনি। তাই পর্যাপ্ত জনবলের অভাবে আইসিইউ এবং সিসিইউ চালু করতে পারছি না।
দালালদের দৌরাত্ম্য
মুন্সীগঞ্জ জেলার একমাত্র সরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল। স্বল্প খরচে ভালো চিকিৎসা পাওয়ার আশায় দূর-দূরান্ত থেকে হাজারো মানুষ ছুটে আসে এখানে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে বহিরাগত দালাল সিন্ডিকেটসহ বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে প্রাইভেট চেম্বার করা মুনাফালোভী ডাক্তারদের উদাসীনতায় সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ— এমনটাই অভিযোগ হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী এবং রোগীর স্বজনদের।
সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে এবং আশপাশ এলাকায় গড়ে উঠেছে ২৫ থেকে ৩০টি প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। একশ্রেণির অর্থলোভী ডাক্তার ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সমন্বয়ে সরকারি হাসপাতালকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে এসব প্রতিষ্ঠান।
সরকারি হাসপাতালের শয্যা সংকট এবং চিকিৎসা সেবায় অব্যবস্থাপনার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নিয়োজিত দালাল চক্র নানা প্ররোচনায় রোগীদের নিয়ে যাচ্ছে বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে। এ ছাড়া হাসপাতাল এবং চেম্বার থেকে কমিশনের লোভে চিকিৎসকরাও বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পাঠাচ্ছেন গড়ে উঠা ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও প্যাথলজি ল্যাবগুলোতে। তাই রোগীরা বাধ্য হয়ে এসব প্রতিষ্ঠানে ছুটে যাচ্ছে। আর এ কাজে সহযোগিতায় রয়েছে নিয়োজিত দালাল চক্র।
এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মো. আরিফুজ্জামান বলেন, দালাল চেনা খুবই একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয়। আমরা যখন দেখছি একই ব্যক্তি এখানে বারবার আসছেন, তখন চেনা মুখ হয়ে গেলে আমরা প্রতিহত করার চেষ্টা করি। দালাল নির্মূলে আমাদের পক্ষ থেকে যতটুকু চেষ্টা করার আমরা করছি।
৩ মাস ধরে নেই জলাতঙ্কের প্রতিষেধক
মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে মিলছে না বিনামূল্যের র্যাবিস ভ্যাকসিন। জেলার এই হাসপাতালে জলাতঙ্ক টিকা নিতে প্রতিদিন ভিড় করছেন শত শত রোগী। তবে প্রায় ৩ মাস ধরে মজুদ না থাকায় বিনামূল্যের টিকা পাচ্ছেন না তারা। ফলে ফার্মেসি থেকে কিনে এই টিকা দিতে হচ্ছে তাদের। এতে বিপাকে পড়ছেন অনেকেই।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, জলাতঙ্কের প্রতিষেধকের সরবাহ নেই। তাই শত শত রোগী ফিরে যাচ্ছেন। সরকারিভাবে জেলায় শুধুমাত্র মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে বিনামূল্যে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। তাই জেলার ছয় উপজেলার মানুষজনই এই ভ্যাকসিনের জন্য ভিড় করেন হাসপাতালটিতে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মরণব্যাধি রোগটির ভ্যাকসিনের মজুদ শেষ হওয়ার আগেই সরবরাহ করা প্রয়োজন ছিল। এমন অবহেলার কারণে দরিদ্র ও নিম্নআয়ের মানুষ জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বর্তমানে অনেকের বাসা-বাড়িতে পোষা বিড়াল রয়েছে। খেলতে খেলতে অনেক সময় গায়ে আঁচড় বসিয়ে দেয় এসব প্রাণী।
জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রতিদিন গড়ে এক থেকে দেড়’শ রোগী ভ্যাকসিনের জন্য হাসপাতালে আসেন। এদের মধ্যে পোষা বিড়ালের মাধ্যমে আঁচড়ে আহত হওয়ার সংখ্যা বেশি। হাসপাতালটির (মুন্সীগঞ্জ) সহকারী পরিচালক ডা. মো. আরিফুজ্জামান বলেন, র্যাবিস ভ্যাকসিন আমাদের হাসপাতালে সাপ্লাই নেই। আশা করছি সাপ্লাইটা চলে আসবে। এটার ৫ টি ডোজ দিতে হয়। আমরা চাহিদা পাঠিয়েছি। আশা করছি শিগগিরই পেয়ে যাব।
অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও ছারপোকার আক্রমণে অতিষ্ট রোগীরা
মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের রোগী এবং তাদের স্বজনরা বর্তমানে একটি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছেন। ২৫০ শয্যার এই হাসপাতালটি ছয়টি উপজেলার রোগীদের পাশাপাশি আশপাশের কয়েকটি জেলা থেকে আগত রোগীদেও সেবা প্রদান করে। তবে অব্যবস্থাপনা এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে রোগীরা চিকিৎসা নিতে এসে সমস্যায় পড়ছেন।
মিরকাদিম থেকে পেটে ব্যথা নিয়ে ভর্তি হওয়া তাছলিমা আক্তার বলেন, অধিকাংশ ওয়ার্ডে স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ, যত্রতত্র খাবারের উচ্ছিষ্ট চোখে পড়ে। হাসপাতালের টয়লেট ও ওয়াশরুম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাবে নোংরা হয়ে উঠেছে। ওয়ার্ডের বিভিন্ন দেয়ালসহ সংরক্ষিত জিনিসপত্র রাখার জায়গাগুলোতেও তেলাপোকার উপদ্রব দেখা যাচ্ছে।
শহরের খালইস্ট এলাকা থেকে হাসপাতালে ভর্তি শিমুল নামের এক রোগী বলেন, হাসপাতালের নতুন ভবনের মর্গের সামনে ময়লার স্তূপসহ আশেপাশের ময়লার দুর্গন্ধে হাঁটা যায় না। টয়লেট অপরিষ্কার থাকে। যত্রতত্র ময়লা থাকার কারণে পরিবেশ ঠিক থাকছে না।
হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. আরিফুজ্জামান এমন পরিস্থিতির কথা স্বীকার করে বলেন, ছারপোকা বা তেলাপোকা আমরা রেগুলার বেসিসে এক একটা ওয়ার্ড ধরে পরিষ্কার করি। সব ওয়ার্ডে সবসময় রোগী থাকে। দেখা যায় ছারপোকা বা তেলাপোকার ওষুধ দেওয়ার সময় ওয়ার্ড খালি থাকে না। যে মৌসুমে রোগী কম থাকে তখন আমরা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে এই পোকার আক্রমণ প্রতিরোধ করার চেষ্টা করি। পাশাপাশি হাসপাতালকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করি।
কিডনী ডায়ালাইসিস চালুর দাবি
মুন্সীগঞ্জ ২৫০ শয্যার সরকারি জেনারেল হাসপাতালে কিডনি রোগীর চিকিৎসার জন্য নেই কোনো ডায়ালাইসিস সেন্টার। ফলে বেসরকারি সেন্টারগুলোতে প্রায় নয়গুণ বেশি ফি দিয়ে ডায়ালাইসিস করাতে হচ্ছে রোগীদের। এ অবস্থায় ডায়ালাইসিসের খরচ জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছে রোগীর পরিবার ও স্বজনরা। চিকিৎসার এই ব্যয় মেটাতে গিয়েই নিঃস্ব হচ্ছে বহু পরিবার। আবার অর্থের অভাবে ডায়ালাইসিস বন্ধের পথে অনেক রোগীর।
জেলা শহরের সিপাহী পাড়ায় মাত্র একটি বেসরকারি ডাইয়ালাইসিস সেন্টারে কিডনি রোগীদের ডাইয়ালাইসিস সেবা দেওয়া হয়। যা এখানে পর্যাপ্ত নয়। ফলে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিস করাতে বাধ্য হচ্ছেন রোগীরা। এতে বেশ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের।
হাসপাতালটিতে দ্রুত কিডনী রোগীদের কথা বিবেচনা করে ডায়ালাইসিস সেন্টার চালুর দাবি সচেতনমহলের। এ বিষয়ে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মো. আরিফুজ্জামান বলেন, ১০ বেডের একটি কিডনী ডায়ালাইসিস ইউনিট চালুর ব্যাপারে কার্যক্রম চলছে। নতুন ভবনে একটি প্রজেক্ট আকারে এই ইউনিট চালুর সম্ভাবনা রয়েছে।
জসবল সংকট কাটবে কবে?
মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। ফলে যথাযথ সেবা পাচ্ছে না রোগীরা। বাধ্য হয়ে অনেকে বেসরকারি হাসপাতাল ও জেলার বাইরে চিকিৎসা নিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়ছেন নিম্ন আয়ের মানুষজন।
২৫০ শয্যার হাসপাতালটিতে সবসময়ই রোগীতে ভরপুর থাকে। এ ছাড়া প্রতিদিন বহির্বিভাগে ১২শ থেকে ১৩শ রোগী সেবা গ্রহণ করেন। ফলে প্রতিদিন সহস্রাধিক রোগীর চিকিৎসা দিতে হিমশিম খান চিকিৎসকরা। শুধু চিকিৎসক-নার্সই নয়, হাসপাতালটির আরও বিভিন্ন বিভাগে জনবল সংকট রয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, জ্যেষ্ঠ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মধ্যে নাক-কান-গলা, মেডিসিন, চক্ষু ও সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পদ শূন্য রয়েছে। এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসাসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা নার্সের পদ শূন্য রয়েছে ৪৩টি।
হাসপাতালে সহকারী পরিচালক ডা. মো. আরিফুজ্জামান বলেন, সিনিয়র কনসালটেন্টের প্রায় সবগুলো পদই শূন্য রয়েছে। শুধু পেডিয়াট্রিক আমাদের একজন সিনিয়র ডাক্তার আছেন। জুনিয়র কনসালটেন্টের পদ সবগুলো ফিলাপ আছে। হয়তো দুই একটি খালি আছে। এই পদগুলো ফিলাপ থাকলেও তা ১০০ শয্যার অনুপাতে। ২৫০ শয্যায় যেসকল ডাক্তার থাকার কথা সেই পরিমাণ নেই।
নার্স সংকট নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের হাসপাতালে নার্সের পোস্ট আছে ৯৭টি। ফিলাপ আছে ৫৮টি। বেকেন্ড আছে ৩৯টি। ৫৮ জনের মধ্যে কেউ হয়তো উচ্চতর ডিগ্রির জন্য কোনো কোর্সে গিয়েছে, আবার কেউ হয়তো লিভে আছে। কর্মরত আছে ৩৮ অথবা ৩৯ জন নার্স।
আরিফুজ্জামান আরও বলেন, নার্স সংকটে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছেন নার্সরাই। কারণ তারা নাইট শিফট, মর্নিং শিফট করছেন। আমরা চেষ্টা করছি কীভাবে সংকট কাটিয়ে তোলা যায়। আমরা আশ্বাস পেয়েছি নার্সের সমস্যাটা সমাধান হবে।
জেলায় ‘মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল’ স্থাপনের দাবি
মুন্সীগঞ্জের ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল বর্তমানে নানা সংকটের মধ্যে রয়েছে। নামের চেয়ে শয্যা সংখ্যা কম, কারণ জনবল রয়েছে মাত্র ১০০ শয্যার মতো। ডাক্তার ও নার্সের সংকটসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত এই হাসপাতাল। এমতাবস্থায় জেলার ১৫ লাখ মানুষের জন্য আধুনিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে মুন্সীগঞ্জে একটি মেডিকেল কলেজ স্থাপনের দাবি উঠেছে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অবকাঠামোগত উন্নয়ন সংক্রান্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি দ্রুত মুন্সীগঞ্জে একটি মেডিকেল কলেজ স্থাপন করা যায় কি না। দু’এক মাসের মধ্যে কাজ শুরু করার জন্য আমরা চেষ্টা করছি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার এমন বক্তব্যের পর জেলার চিকিৎসা সেবা প্রত্যাশী মানুষের মধ্যে আশার আলো দেখা দিয়েছে। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা, কবে বাস্তবায়িত হবে এই মেডিকেল কলেজের উদ্যোগ।
- এটিআর