Logo

সারাদেশ

কুষ্টিয়ায় প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ, হাসপাতালে রোগীর চাপ

Icon

আকরামুজজামান আরিফ, কুষ্টিয়া

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৪:৩০

কুষ্টিয়ায় প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ, হাসপাতালে রোগীর চাপ

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সারা দেশের মতো কুষ্টিয়াতেও তীব্র তাপদাহ এবং ভ্যাপসা গরমের কারণে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। প্রখর রোদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভ্যাপসা গরমের প্রভাব কর্মজীবী এবং শ্রমজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের ওপর পড়ছে, যার ফলে অস্বস্তি ও ভোগান্তি সৃষ্টি হচ্ছে।

দিনের বেলায় তীব্র তাপদাহের সঙ্গে রাতেও গরমের তীব্রতা থাকছে, যা নানা ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করছে। ডাইরিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, বসন্তরোগসহ অন্যান্য রোগ-বালাইয়ের সংখ্যা বাড়ছে। এর ফলে হাসপাতালে রোগীদের ভিড় বৃদ্ধি পাচ্ছে, বিশেষ করে শিশুদের।

সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কৃষক, কৃষি-শ্রমিক, রিকশাচালক, ভ্যানচালক ও কুলি মজুররা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ছেন। তীব্র গরমের মধ্যে কাজ করতে গিয়ে তাদের শ্বাসকষ্ট, হাঁসফাঁস অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। গাছের ছায়ায় ছুটে গিয়ে তারা কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছেন, আবার কেউ কেউ মাথায় পানি ঢেলে বা পানির পরশ নিয়ে আরাম পাচ্ছেন।

ফসলের মাঠের মাটি ফেটে যাওয়ার কারণে কৃষকরা প্রতিদিন স্যালো ইঞ্জিন দিয়ে ক্ষেতে পানি সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছেন। তাদের বাড়তি খরচের বোঝা মাথায় নিয়ে পাট, ধান ও সবজি ক্ষেতের জন্য সেচকাজে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে।

নিন্ম আয়ের খেটে খাওয়া দিনমজুররা কাজের সন্ধানে বের হলেও, প্রখর রোদের কারণে কাজ না পেয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। শহরের বিভিন্ন সড়কেও যাত্রী সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণে রিকশা ও ভ্যানচালকদের দুর্ভোগ বেড়েছে।

প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুতের লোডশেডিং রয়েছে নিয়মিত, যা জনগণের দুর্ভোগ বাড়াচ্ছে। পাশাপাশি, কিছু সুযোগসন্ধানী ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায়ী গরমে ব্যবহারের জন্য বৈদ্যুতিক পাখা ও চার্জার ফ্যানের দাম দ্বিগুণ করে বিক্রি করছেন। এতে অনেকেই বাড়তি দামে এসব পণ্য কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ভিড়। ছবি : বাংলাদেশের খবর

বৃষ্টির দেখা না মেলায় গ্রামের রাস্তায় চলতে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন পথচারীরা। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা গরমের কারণে সময়মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পৌঁছাতে পারছেন না। ফলে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। গরমে ধুলাবালিতে শরীর আচ্ছন্ন হওয়ার ফলে শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন শিক্ষার্থী ও গ্রামের মানুষ।

কুষ্টিয়া জেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. হোসেন ঈমাম জানান, ‘তীব্র গরম এবং ভ্যাপসা গরমের কারণে রোগীরা নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসছেন। এর মধ্যে শিশু রোগীর সংখ্যা বেশি।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘এ ধরনের গরমে মানুষের সমস্যা হওয়া স্বাভাবিক, তবে কিছু নিয়ম মেনে চললে নিরাপদ থাকা যায়। বাইরে বের হলে, রোদে গেলে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ছাতা, ক্যাপ ব্যবহার করতে হবে। প্রচুর পানি, লেবুর শরবত, স্যালাইন ও তরল খাবার খেতে হবে। তেল-মসলাজাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে। যারা অসুস্থ, তারা খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া দিনের বেলায় বাইরে বের না হওয়াই ভালো।’

এমজে

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর