Logo

সারাদেশ

সখীপুরে ৪ বছরেও শেষ হয়নি ব্রিজের কাজ, দুর্ভোগে ১২ গ্রামের মানুষ

Icon

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৬:০০

সখীপুরে ৪ বছরেও শেষ হয়নি ব্রিজের কাজ, দুর্ভোগে ১২ গ্রামের মানুষ

টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার কালিদাস-করটিয়াপাড়া সড়কের কাকড়ারজোড়া নামক স্থানের ২৫ মিটার দৈর্ঘের গার্ডার ব্রিজের কাজ এক বছরে শেষ করার কথা থাকলেও শেষ হয়নি প্রায় সাড়ে চার বছরেও। ব্রিজের কাজ অসমাপ্ত রেখেই উধাও হয়েছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। বিকল্প সড়ক না থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ১২ গ্রামের মানুষ।

স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের শক্তিশালী করণ প্রকল্প উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পের আওতায় কাকড়ারজোড়ায় ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, ২ কোটি ২৮ লাখ ৭০ হাজার ৭৩১ টাকা ব্যয়ে ২৫ মিটার দৈর্ঘের পিএসসি গার্ডার ব্রিজের কাজ পায় ঢাকার ‘মাইন উদ্দিনবাসী’ নামক একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি কাজটি শুরু হয়ে ২০২২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঠিকদারি প্রতিষ্ঠান মাত্র দুই-তিন মাস কাজ করে অজ্ঞাত কারণে বাকি কাজ ফেলে রেখে উধাও হয়ে যায়। 

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) কাগজপত্রে ২৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন দেখালেও বাস্তবে ব্রিজটির কয়েকটি পিলারের পাইলিং সম্পন্ন হয়েছে। বারবার তাগিদ দিলেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজে আসছে না। এতে চার বছর দুই মাসের অধিক সময় ধরে সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে স্থানীয়রা জানান, কাকড়ারজোড়ার ব্রিজটি নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় করটিয়াপাড়া, পূর্ব চতল বাইদ (হারিঙ্গাচালা , ঝিনিয়াপাড়া, চতল বাইদ দক্ষিণপাড়া, হতেয়া-রাজাবাড়ি, কালিদাস, ঠকানিয়াপাড়া, ফুলঝুড়িপাড়াসহ অন্তত ১০-১২টি গ্রামের মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। ওই এলাকায় সখীপুর থেকে যানবাহনে কোনো মালামাল পরিবহন করে নিতে চাইলে ২০-২৫ কিলোমিটার ঘুরে নিতে হয়। এতে অর্থ ও সময় দুই-ই বেশি ব্যয় হচ্ছে।  

স্থানীয় বহুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরকার নুরে আলম মুক্তা বলেন, ব্রিজটি চার বছর ধরে ফেলে রাখায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন তারা। ওই সড়ক ব্যবহার করে ইউনিয়ন পরিষদে উপকারভোগী, বিভিন্ন সেবাপ্রার্থীদের আসা-যাওয়া করতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিকল্প সড়ক ঘুরে আসতে অনেক সময় লেগে যায়। বয়োবৃদ্ধ মানুষের কষ্টের সীমা থাকে না। তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত ব্রিজটি নির্মাণের দাবি জানান। 

চতল বাইদ করটিয়াপাড়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার আব্দুল জাব্বার বলেন, ব্রিজটির কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় ফুলঝুড়ি, ঠকানিয়া পাড়াসহ ওই এলাকার মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীরা বেশি বৃষ্টি হলে সময় মতো বিদ্যালয়ে আসতে পারে না।

চতল বাইদ করটিয়া দাখিল মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি প্রভাষক জুলহাস উদ্দিন মিয়া বলেন, ঠিকাদার চলাচলের বিকল্প সড়ক না বানিয়েই পুরাতন ব্রিজটি ভেঙে ফেলেন। এতে মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, শিক্ষক, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। 

তিনি আরও বলেন, ব্রিজের ওইস্থানে প্রায় ৬০ হাজার টাকা খরচ করে দেড় মাসে আগে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় চলাচলের জন্য কাঠ দিয়ে বিকল্প একটি সড়ক নির্মাণ করা হয়। কিন্তু ভারি বৃষ্টি হওয়ায় স্রোতে তা ভেঙে যায়। তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্রিজটি নির্মাণের দাবি করেন।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপসহকারী প্রকৌশলী ফরিদ আহমেদ জানান, বারবার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে তাগিদ দিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না। 

তিনি বলেন, কাজটি সময় মতো শেষ না করায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ঢাকা অফিস থেকে চিঠি দিয়ে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বর্ষা মৌসুম গেলে প্রাক্কলন ব্যয় নির্ধারণ করে পুনরায় টেন্ডারের মাধ্যমে অসমাপ্ত কাজ শেষ করা হবে। 

এদিকে, একই প্রকল্পের আওতায় ওই ব্রিজের দুই পাশে ১৮ ফুট প্রশস্ত করে সাড়ে ৩ কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণের কাজ অন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শেষ করেছে।

মুহাম্মদুল্লাহ/বিএইচ

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর