অগ্নিকাণ্ডে ঘরহারা বিধবা শাহিনুর পেলেন ‘জোনাকি’ নামে নতুন ঘর

আলফাডাঙ্গা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০১ মে ২০২৫, ১৩:০৭
-68131d973ba53.jpg)
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার বুড়াইচ ইউনিয়নের বারাংকুলা মধ্যপাড়া এলাকার মৃত আবুল খায়েরের স্ত্রী শাহিনুর বেগম। প্রায় ৬ বছর আগে স্বামী মারা গেছেন তার। এরপর থেকেই ছোট-ছোট তিন মেয়ে ও এক ছেলে নিয়ে একটি টিনের ঘর তৈরি করে বসবাস করতেন। অন্যের বাড়িতে কাজ করে চালান পাঁচ সদস্যের সংসার। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি আগুন লেগে মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুসহ সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েন অসহায় বিধবা শাহিনুরের পরিবার।
তখন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দরিদ্র ও অসহায় পরিবারটিকে একটি নতুন ঘর তৈরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসেল ইকবাল। তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী গত ১৫ মার্চ থেকে নতুন ঘরের কাজ শুরু হয়। গত এক সপ্তাহ আগে শেষ হয় রঙিন টিনের সেমিপাকা দৃষ্টিনন্দন ঘরের কাজ।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে বিধবা শাহিনুর বেগমের পরিবারকে নতুন ঘর বুঝিয়ে দেন ইউএনও রাসেল ইকবাল। পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছাও জানানো হয়।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ কে এম রায়হানুর রহমান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাগর হোসেন সৌকত ও স্থানীয় ইউপি সদস্য সোহেল ফকির প্রমুখ।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, দুই লাখ টাকা ব্যয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে উপজেলা ওয়ারী টিআর (১ম ও ২য় পর্যায়) কর্মসূচির আওতায় বিধবা শাহিনুর বেগমকে একটি ঘর তৈরি করে দেন উপজেলা প্রশাসন।
নতুন ঘর পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে বিধবা শাহিনুর বেগম বলেন, 'অনেক কষ্ট করে একটি টিনের ঘর তৈরি করে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে বসবাস করতাম। অন্যের বাড়িতে কাজ করে কিছু আসবাবপত্র কিনেছিলাম। কিন্তু গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগে আমাদের সব শেষ হয়ে যায়। নতুন একটি ঘর তৈরি করার সামর্থ্য না থাকায় অন্যের বাড়িতে বসবাস করছিলাম। তখন আমাদের বিষয়টি ইউএনও স্যার জানতে পেরে নতুন একটি ঘর তৈরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। অবশেষে তিনি আমাদের একটি নতুন ঘর তৈরি করে দিয়েছেন। বুধবার থেকে নতুন ঘরে মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়েছি। প্রশাসনের প্রতি আমরা সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকব।'
এ বিষয়ে আলফাডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাসেল ইকবাল বলেন, শাহিনুর বেগমের বসতঘরে আকস্মিক অগ্নিকাণ্ডে গরু-ছাগল, হাঁসমুরগি, টিউবওয়েলসহ ঘরের সকল মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ছুটে গিয়ে দেখি তাদের বুকফাটা আর্তনাদ আর আহাজারি। শাহিনুরের ঘর পোড়া গল্পে আমরা যুক্ত হই সরকারি অর্থে নতুন ঘর নির্মাণের প্রতিশ্রুতি নিয়ে। তার নতুন স্বপ্নের নাম দেই 'জোনাকি'। সে আজ আপন আলোয় আলোকিত। ঘরটি শাহিনুরের স্বপ্ন হয়ে জোনাকির মত মিটমিট করে জ্বলুক সেই প্রত্যাশা করি।
এমএইচএস