রোহিঙ্গা জন্মসনদ জালিয়াতির অভিযোগে বরখাস্ত চেয়ারম্যান

কুমিল্লা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ মে ২০২৫, ১৮:৩৯

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে রোহিঙ্গা নারীকে জন্মসনদ প্রদান করার অভিযোগে উপজেলার ১১ নম্বর চিওড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবু তাহেরকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
শুক্রবার (০২ মে) চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জামাল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ২৯ এপ্রিল স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ইউপি-১ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব তৌহিদ এলাহি স্বাক্ষরিত চিঠির মাধ্যমে এ বহিষ্কার আদেশ জারি করা হয়।
তৌহিদ এলাহি তার স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করেন, চিওড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (নিবন্ধক) মো. আবু তাহেরের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গার অনুকূলে জন্মনিবন্ধন সনদ ইস্যু, নিজের ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড অন্যের কাছে হস্তান্তর, সচেতনতার অভাব এবং দায়িত্ব পালনে অবহেলার অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। এসব অভিযোগ স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯-এর ৩৪(৪)(খ)(ঘ) ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের উপযুক্ত।
প্রজ্ঞাপনে আরও উল্লেখ করা হয়, চেয়ারম্যান আবু তাহেরের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরকার মনে করে, তার দ্বারা ইউনিয়ন পরিষদের ক্ষমতা প্রয়োগ প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণে সমীচীন নয়। তাই জনস্বার্থে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ১১ জুন ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভিয়েতনাম যাওয়ার সময় ইমিগ্রেশন পুলিশ হুমায়রা ও শারমিন আক্তার নামের দুই রোহিঙ্গা নারীকে আটক করে। পরে ১৫ জুন কুমিল্লার ডিএসবির উপপরিদর্শক ইমাম হোসেন বাদী হয়ে চৌদ্দগ্রাম থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার পর ২৭ জুন পুলিশ হুমায়রা ও শারমিনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠায়।
এরপর জানা যায়, ওই দুই রোহিঙ্গা নারী চিওড়া ইউনিয়নের ডিমাতলী গ্রামের মরহুম কাজী শামছুল হকের ছেলে কাজী খবির উদ্দিনকে তাদের পিতা হিসেবে উল্লেখ করে জন্মসনদ তৈরি করান। পরে জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট তৈরি করে ভিয়েতনাম যাওয়ার চেষ্টা করেন।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, রোহিঙ্গা নারী হুমায়রার পিতা শামসুল আলমের জন্ম ২০১০ সালের ১ জানুয়ারি। আর শারমিনের পিতার নাম নূর কামাল, জন্ম ২০০৬ সালের ১ জানুয়ারি। তাদের কথিত পিতা খবির উদ্দিন এ দুই নারীকে নিজের সন্তান পরিচয়ে জন্মসনদগুলো তৈরি করেছেন।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান আবু তাহের বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুর ঘটনাটি জন্মনিবন্ধন শাখার রেজিস্টার জেনারেল আমাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলে আমি তার সঠিক জবাব প্রদান করি। এছাড়াও জন্মসনদ গ্রহীতার কথিত পিতা কাজী খবির উদ্দিনের বিরুদ্ধে ডিএসবি মামলা দায়ের করেছিল। সেই মামলায় পুলিশ তাকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট প্রদান করে। পুলিশ চার্জশিটে আমাকে সাক্ষী করে। তারপরও আমাকে স্থানীয় সরকার ইউপি শাখা থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
সোহাইবুল ইসলাম সোহাগ/এমবি