ছাত্রদল নেতার নেতৃত্বে মহাসড়কে চাঁদাবাজির অভিযোগ

চকরিয়া-পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৫, ১২:৫০

অভিযুক্ত ইব্রাহিম মানিক ও বেলাল
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের হারবাং থেকে বানিয়ারছড়া পর্যন্ত এলাকায় প্রতিদিন গভীর রাতে গাড়ি থামিয়ে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে হারবাং ইউনিয়ন ছাত্রদল সভাপতি এ.এস.এম ইব্রাহিম মানিকের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি ফাঁস হওয়া একটি ফোনালাপ ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর থেকে ছাত্রদল নেতা মানিকের নেতৃত্বে ৬-৭ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল নিয়মিতভাবে রাতে মহাসড়কে টহল দিয়ে পণ্যবাহী গাড়িগুলো ধাওয়া করে। প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে চালকদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করে। এ কাজে তার অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করছে এক বহিরাগত যুবক মো. বেলাল।
একাধিক গাড়ি চালক ও স্থানীয় ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এই চক্রের দৌরাত্ম্যে তারা জিম্মি হয়ে পড়েছেন। প্রতিবাদ করলে হুমকি-ধামকি তো রয়েছেই, পুলিশের নাম করে হয়রানির ভয়ও দেখানো হয়।
এদিকে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি কল রেকর্ডে এক ভুক্তভোগী বলেন, ৬-৭টা মোটরসাইকেল নিয়ে মানিক আর বেলালের নেতৃত্বে ১০-১২ জন আমার কাঠভর্তি গাড়ি ধাওয়া করে ইনানী রেস্টুরেন্টের মাঠে নিয়ে যায়। তারপর তারা ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে।
এ ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে বলছেন, এই চাঁদাবাজি এখন প্রকাশ্যে এবং নিয়মিত।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে ছাত্রদল সভাপতি এ.এস.এম ইব্রাহিম মানিক বলেন, ‘আমি এসবের সঙ্গে জড়িত না। বিস্তারিত জানতে চাইলে সামনে দেখা করে কথা বলুন।’ এরপর তিনি ফোন কেটে দেন।
এ বিষয়ে হারবাং ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রুবেল সিকদার বলেন, মানিকের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ পেয়েছি। ছাত্রদলের মধ্যে তার চেয়ে খারাপ ছেলে আমার জানা নেই। তাকে বারবার সতর্ক করা হলেও সে কারও কথা শুনছে না। তার কারণে আমরা ইউনিয়ন বিএনপি চরম বিব্রত।
দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে উল্লেখ করে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান বলেন, ছাত্রদল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অপকর্মে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
হারবাং ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য মো. বাবুল বলেন, সরকার পতনের পর থেকেই মানিকের নেতৃত্বে একটি চক্র এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেছে। বিএনপির নেতাদের বিষয়টি জানানো হয়েছে, তারা ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামকে এ বিষয় অবগত করলে তিনি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।
- মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম/এটিআর