বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ-গর্ভপাত, কৃষকদল নেতাসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৫, ১৯:২৯

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় ‘প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ ও গর্ভপাতের’ অভিযোগে কৃষকদল নেতাসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন এক নারী।
শনিবার (০৩ মে) দুপুরে পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সম্রাট মণ্ডল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন শৈলকুপা উপজেলা কৃষকদলের সদস্যসচিব কামরুল ইসলাম, তার ছেলে নাজমুল খন্দকার এবং আরও দুইজন।
মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী নারীর বক্তব্য অনুযায়ী, গত দুই বছর ধরে তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন নাজমুল খন্দকার। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন। সম্পর্কের বিষয়টি নাজমুলের পরিবারও জানতেন এবং শুরুতে মেনে নেন। একপর্যায়ে ওই নারী গর্ভবতী হয়ে পড়লে অভিযুক্ত পরিবার তাকে ঝিনাইদহ শহরের হামদহ এলাকার রয়েল ক্লিনিকে নিয়ে গিয়ে গর্ভপাত করান। চিকিৎসা শেষ হওয়ার আগেই তারা তাকে হাসপাতালে ফেলে পালিয়ে যান।
ভুক্তভোগীর দাবি, প্রেম ও বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার কাছ থেকে প্রায় ৭ লাখ টাকাও হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি। পরে আদালতের নির্দেশে শৈলকুপা থানায় মামলা (নং ০৪/২৫) রেকর্ড করা হয়।
ভুক্তভোগী নারী বলেন, দুই বছর ধরে নাজমুলের সঙ্গে তার সম্পর্ক। তার বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত থাকায় তার বাবা কামরুল ইসলামসহ পরিবারের সবাই বিয়ের আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু গর্ভবতী হয়ে পড়ার পর নাজমুলের পরিবারের সদস্যরা তাকে মারধর করেন। একপর্যায়ে জোরপূর্বক তার গর্ভের সন্তান নষ্ট করে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে কৃষকদল নেতার ছেলে নাজমুল খন্দকার বলেন, ওই নারীর অভিযোগ সত্য নয়। সে একজন প্রতারক। আমার নামে থানায় কোনো মামলা হয়েছে কিনা, তা জানি না।
নাজমুলের বাবা শৈলকুপা উপজেলা কৃষকদলের সদস্যসচিব কামরুল ইসলাম বলেন, অভিযোগকারী ওই নারী সম্পর্কে আমি খুব বেশি কিছু জানি না। তবে সে আমার বাড়িতে আসা-যাওয়া করত। গর্ভপাত ও হাসপাতালে ভর্তির বিষয়ে আমি কিছু জানি না। এ সময় তিনি প্রতিবেদককে নিউজটি এড়িয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানান।
শৈলকুপা থানার এসআই সম্রাট মণ্ডল বলেন, ওই নারীর অভিযোগ পেয়ে পারিপার্শ্বিকতা ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।
শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুম খান বলেন, ভুক্তভোগী নারীকে বিয়ের প্রলোভনে ফেলে নানাভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে আমরা তা জানতে পেরেছি। আদালতের আদেশ হাতে পেয়েছি এবং থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
বুরহান উদ্দীন/এমবি