সরাসরি আন্তনগর ট্রেন চালুর দাবি
লালমনিরহাটে রেল সুবিধাবঞ্চিত ১৯ লাখ মানুষ

রাহেবুল ইসলাম টিটুল, লালমনিরহাট
প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৫, ১৫:৩২

ছবি : বাংলাদেশের খবর
লালমনিরহাট জেলার চার উপজেলার প্রায় ১৯ লাখ মানুষ রেলসেবা থেকে বঞ্চিত। ২০০৪ সালে ‘লালমনি এক্সপ্রেস’ চালু হওয়ার পর থেকেই লালমনিরহাট রেলস্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে ট্রেনটি চলাচল করছে। এরপর ২০২৪ সালের ১২ মার্চ চালু হয় ‘বুড়িমারী এক্সপ্রেস’। প্রথম দিন পাটগ্রামের বুড়িমারী রেলস্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করলেও পরদিন থেকেই ট্রেনটি শুধুমাত্র লালমনিরহাট স্টেশন থেকেই চলাচল করছে।
ফলে আশায় বুক বাঁধলেও আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলার মানুষ আবারও রেলসেবা থেকে বঞ্চিতই থেকে গেছেন। জেলার এই চার উপজেলার কোনো স্টেশন থেকেই বর্তমানে আন্তনগর ট্রেনে ওঠার সুযোগ নেই। এতে করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
জানা গেছে, লালমনিরহাট জেলা ভৌগোলিকভাবে উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত। সদর থেকে উত্তরে আদিতমারী। এরপর কালীগঞ্জ, তারপর হাতীবান্ধা এবং সর্বশেষ পাটগ্রাম উপজেলা অবস্থিত। এসব এলাকার মানুষ নিকটবর্তী স্টেশন থেকেও আন্তনগর ট্রেনে উঠতে পারছেন না। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার বাংলাদেশ রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে স্মারকলিপি দেওয়া হলেও মেলেনি কোনো ইতিবাচক সাড়া।
এ নিয়ে রেল অবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছেন বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। এরপরও সমস্যার কোনো সমাধান হয়নি। সম্প্রতি ‘বুড়িমারী-ঢাকা আন্তনগর ট্রেন বাস্তবায়ন আন্দোলন পরিষদ’-এর ব্যানারে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।
পাটগ্রাম উপজেলার সীমান্তঘেঁষা বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়। এছাড়া নেপাল, ভুটান ও ভারতের সঙ্গে যাত্রী চলাচলও রয়েছে নিয়মিত। অথচ এখান থেকে সরাসরি আন্তনগর ট্রেন না থাকায় দেশি-বিদেশি যাত্রীরাও রেলসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
স্থানীয়রা জানান, রেল কর্তৃপক্ষ বুড়িমারী স্টেশনে ওয়াশ ফিডসহ অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য তিন মাস সময় চেয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে তা শেষ হতে লেগেছে প্রায় ছয় মাস। পরে কয়েক দফা প্রজ্ঞাপন ও সময়সূচি সংশোধন করেও বুড়িমারী থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রেলকর্মচারী বলেন, ‘খাতা-কলমে বুড়িমারী এক্সপ্রেস বুড়িমারী থেকেই চলছে, বাস্তবে তা হচ্ছে না।’
আন্দোলন পরিষদের সমন্বয়ক ফারুক হোসেন নিশাত বলেন, ‘বর্তমানে দুটি আন্তনগর ট্রেন চলে শুধুমাত্র লালমনিরহাট সদর থেকে। বাকি চার উপজেলার মানুষ প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।’
স্কুলশিক্ষক আবদুর রাজ্জাক রুবেল বলেন, ‘লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার মধ্যে চারটির মানুষ এবং বুড়িমারী স্থলবন্দর হয়ে যাতায়াতকারী যাত্রীরা সরাসরি আন্তনগর ট্রেনে ঢাকা যেতে পারছেন না, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।’
এআরএস