চন্দনাইশে সরকারি জমিতে অনুমতি ছাড়াই চলছে বাণিজ্য মেলা

চন্দনাইশ (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ মে ২০২৫, ১৫:৫০

ছবি : বাংলাদেশের খবর
চট্টগ্রামের চন্দনাইশে সরকারি কলেজের জমি ও খাল দখল করে অনুমতি ছাড়া চলছে বাণিজ্য মেলা। উপজেলার গাছবাড়িয়া সরকারি কলেজের জায়গায় গত বৃহস্পতিবার (১ মে) এ মেলার উদ্বোধন করা হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, মেলা ঘিরে বসানো হয়েছে শতাধিক দোকান। প্রবেশে গুনতে হচ্ছে ১০ টাকা। জমজমাট বেচাকেনার পাশাপাশি মেলায় চলছে সার্কাস, লাইটিংসহ নানা বিনোদনের আয়োজন। এসব দোকান উচ্চমূল্যে ভাড়া দিয়ে আয় করছে একটি প্রভাবশালী মহল।
স্থানীয়রা জানান, মেলার প্রবেশপথ তৈরি করতে সরকারি খাল ভরাট করা হয়েছে। এতে বৃষ্টির পানি বের হতে না পারায় আশপাশের এলাকা প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তারা বলছেন, এতে জনদুর্ভোগ বাড়বে, ক্ষতিগ্রস্ত হবে ঘরবাড়ি ও কৃষিজমি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ‘পায়রা’ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে আলী ইমরান নামে এক ব্যক্তি মেলার আয়োজন করেছেন। তিনি মার্চ মাসের শুরুতে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করলেও কোনো অনুমতি পাননি। তবুও মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে এবং অনুমতি ছাড়াই তিনি মেলা চালু করেছেন। এতে তিনি লাখ টাকার অধিক আয় করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে আলী ইমরানকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘জেলা প্রশাসক অনুমতি দিয়েছেন। আপনারা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।’ তবে কোনো লিখিত অনুমতি দেখাতে পারেননি।
জনসাধারণের প্রশ্ন—একদিকে এসএসসি পরীক্ষা চলছে, অন্যদিকে রয়েছে একটি মাদ্রাসা। দুটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশেই এমন উচ্চ শব্দে মেলা বসানো আইনগতভাবেই বেআইনি। স্থানীয় সচেতন মহল দ্রুত প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।
মেলা আয়োজনে পুলিশের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুজ্জামান জানান, ‘মেলা আয়োজকরা এখন পর্যন্ত কোনো কাগজপত্র জমা দিতে পারেনি। তবে জনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
গাছবাড়িয়া সরকারি কলেজের জমি দখল বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ রনজিৎ কুমার দত্তের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি। তবে কলেজের উপাধ্যক্ষ ড. সুব্রত বরণ বড়ুয়া জানান, ‘মেলার জায়গাটি আমাদের সরকারি কলেজের জমির অংশ।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজীব হোসেন বলেন, ‘মেলা আয়োজক কমিটি জেলা প্রশাসকের কাছে অনুমতির জন্য আবেদন করেছে বলে জানিয়েছে। তবে এখনো আমাদের হাতে কোনো অফিসিয়াল কপি আসেনি। আমি বিধিমতো বিষয়টি রিপোর্ট আকারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’
এআরএস