বিএনপি নেতার নির্দেশে ৫ ভাইকে কানধরে উঠবস ও জুতা পেটা

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৬ মে ২০২৫, ১১:৪৪

সাটুরিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও বরাইদ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস খান মজলিস
জমি সংক্রান্ত পারিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে গ্রাম্য সালিশে আপন পাঁচ ভাইকে কান ধরে সাতবার উঠবস ও জুতা পেটা করানোর অভিযোগ উঠেছে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় এক প্রভাবশালী বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত নেতা সাটুরিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও বরাইদ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস খান মজলিস ওরফে মাখন।
শুক্রবার (২ মে) বিকেলে বরাইদ ইউনিয়নের সালুয়াকান্দি গ্রামে দুই শতাধিক স্থানীয় মানুষের সামনে সালিশে এই ঘটনাটি ঘটে। তবে অভিযুক্ত নেতা প্রভাবশালী হওয়ায় ভুক্তভোগীরা এখনো থানায় মামলা করতে সাহস পাননি।
ভুক্তভোগী লিটন মিয়া, ওহাব মিয়া, মগরম আলী, হারুন মিয়া ও রবিউল মিয়াসহ তাদের সন্তানরা রোববার (৪ মে) মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবে উপস্থিত হয়ে গণমাধ্যমের সামনে অভিযোগ তুলে ধরেন।
তারা জানান, তাদের প্রয়াত পিতা তাইজুদ্দিন মৃত্যুর আগে ৭৫২ শতাংশ জমি রেখে যান। জমি ভাগ নিয়ে সাত ভাইয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। একাধিক সালিশ হলেও বিষয়টির মীমাংসা হয়নি। এরমধ্যে ছোট ভাই মিনহাজ মিয়া ও ফারুক মিয়া বিষয়টি আব্দুল কুদ্দুস মজলিসের কাছে অভিযোগ করেন। এরপর সালিশের তারিখ নির্ধারিত হলেও পাঁচ ভাইকে জানানো হয়নি বলে দাবি করেন ভুক্তভোগীরা।
নির্ধারিত সময়ে সালিশে উপস্থিত না হওয়ায় স্থানীয় লোকজন দিয়ে লিটন, ওহাব, মগরম, হারুন ও রবিউল মিয়াকে ধরে আনা হয়। এরপর তাদের কোনো কথা না শুনে কান ধরে সাতবার উঠবস করানো হয় এবং একজন করে পাঁচটি করে জুতার বাড়ি দেন স্থানীয় রফাজ উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা আব্দুল কুদ্দুস খান মজলিস বলেন, ‘গ্রামবাসীর পূর্ব ঘোষিত সালিশে তারা যথাসময়ে না আসায় এবং বাবা-মায়ের কবরের যথাযথ যত্ন না নেওয়ার কারণে সামান্য শাসন দেওয়া হয়েছে। এটা গুরুতর কিছু নয়।’
বরাইদ ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. রমজান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘বাবা-মায়ের কবর অবহেলার কারণে সালিশে কান ধরানো হয়েছে। এটি শাসনের অংশ, অন্য কিছু নয়।’
তবে মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এস এ জিন্নাহ কবীর বলেন, ‘দেশে আইন থাকার পরও এমন গ্রাম্য সালিশ অনভিপ্রেত। এ ধরনের ঘটনায় আমরা নিন্দা জানাই এবং তদন্ত সাপেক্ষে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আফ্রিদি আহাম্মেদ/ওএফ