ভাটারা থানার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো ‘প্রতারক লিটন’কে

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭ মে ২০২৫, ১৪:০০

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনে অর্থের যোগানদাতা ও প্রতারণার দায়ে অভিযুক্ত সিকদার লিটন ওরফে টুটুলকে রাজধানীর ভাটারা থানার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এপ্রিল মাসে পুলিশের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (৭ মে) ঢাকার একটি আদালত লিটনকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে ৫ মার্চ ফরিদপুর শহর থেকে সিকদার লিটনকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরে তাকে আলফাডাঙ্গা থানায় হস্তান্তর করা হয়। ১৩ আগস্ট থানায় হওয়া বিস্ফোরক ও নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পুলিশ তাকে আদালতে পাঠায়। গত রোববার সেই মামলায় সিকদার লিটনকে জিজ্ঞাসাবাদে একদিনের রিমান্ড পেয়েছে পুলিশ।
আলফাডাঙ্গার স্থানীয় সূত্র জানায়, সিকদার লিটন ফরিদপুর-১ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি মঞ্জুর হোসেনের ক্যাডার হিসেবে পরিচিত। নিজ এলাকায় এমপি মঞ্জু ও নিজের ছবি ব্যবহার করে ব্যানার, পোস্টার লাগাতেন সিকদার লিটন। তাছাড়া সরকারি-বেসরকারি চাকরি দেওয়ার নামে টাকা আত্মসাৎ, অন্যের জমিদখল, চাঁদাদাবি, মারধরসহ নানান অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। যার সবই করতেন এমপি মঞ্জুর নাম ব্যবহার করে। এর আগে বহুবার কারাগারে যেতে হয়েছে তাকে। তবে প্রতিবারই কারাগার থেকে বেরিয়ে একই অপরাধ করেছেন। গত অক্টোবরেও একজনকে কারামুক্ত করার অজুহাতে প্রতারণার মাধ্যমে দুই লাখ টাকা ও একটি মোটরসাইকেল হাতিয়ে নেন।
আজ বুধবার আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত জুলাইয়ে কুড়িল জোয়ার সাহারা কেন্দ্রীয় মসজিদের গলির মুখে আন্দোলনরতদের ওপর সশস্ত্র হামলা হয়। হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন মারা যান। পরে শফিকুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে মামলা করেন। সেই মামলায় এজাহারনামীয় ২৭ নম্বর আসামি এই সিকদার লিটন। তাছাড়া ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আর্থিকভাবে সহায়তা করেন তিনি।
অন্যদিকে ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ৪ আগস্ট দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বছিলা ব্রিজের কাছে রাস্তার ওপর জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করে গুরুতর জখম ও হুকুম প্রদানের অপরাধ সংগঠনের অভিযোগে মোহাম্মদপুর থানায় মোছা. নাদিরা বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলায় সিকদার লিটনকে মূল পরিকল্পনাকারী ও অর্থদাতা বলে অভিযুক্ত করেছেন। সম্প্রতি সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে লিটনকে।
অভিযোগ আছে, নিজে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দমনে ভূমিকা রাখলেও পরে ভোল পাল্টে শহীদ পরিবারের পক্ষে মামলা শুরু করেন সিকদার লিটন। এতে সমাজের প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের টার্গেট করে মামলার আসামি করা হয়। আবার আসামি করার ভয় দেখিয়ে অনেকের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
নভেম্বর থেকে পরবর্তী তিন মাসে তার ব্যক্তিগত বিকাশ অ্যাকাউন্টে সাড়ে ২২ লাখ টাকার লেনদেনের তথ্য পায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সূত্র বলছে, তার বিরুদ্ধে দেড় ডজনের বেশি মামলা রয়েছে।