প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চলছে মাদক সেবন-ব্যবসা

বগুড়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭ মে ২০২৫, ১৮:২৮

ছবি : বাংলাদেশের খবর
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় হযরত শাহ সুলতান বলখী (রহ.) মাহিসাওয়ার মাজারকে কেন্দ্র করে প্রতিবছরের মতো এবারও শুরু হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে বৈশাখী মেলা ও বার্ষিক ওরস।
মেলা শুরু হওয়ার অপেক্ষায় থাকলেও ইতোমধ্যে মেলা এলাকায় শুরু হয়েছে প্রকাশ্যে মাদকসেবন ও বিক্রি। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আয়োজিত এ মেলাকে ঘিরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্ত, দর্শনার্থী ও ব্যবসায়ীরা এসে জড়ো হচ্ছেন।
বুধবার (০৭ মে) সরেজমিনে দেখা যায়, মাজারের উত্তর পাশে মালখালী (দুধ পাথর) এলাকায় একাধিক যুবক, বৃদ্ধ ও সন্ন্যাসীদের গাঁজা সেবন করতে দেখা যায়। এ সময় তাদের গাঁজা ও বাঁশি কিনতে ও দরদাম করতেও দেখা যায়। কয়েকজন শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে গাঁজা কিনতে এসে দৌড়ে পালিয়ে যায়। যারা বিক্রি করছিলেন, তারাও গাঁজা লুকিয়ে ফেলেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা রুহুল আমিন বলেন, মাজারকেন্দ্রিক মেলা আগে ছিল আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় পরিবেশে। কিন্তু এখন সেটা পরিণত হয়েছে মাদকের আসরে। গাঁজার গন্ধে পথ চলা দায়। এ অশ্লীলতা ও মাদকদ্রব্যের ব্যবহার কোনোভাবেই কাম্য নয়।
স্থানীয় শিক্ষার্থী সিরাজুল বলেন, আমরা এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছি। মেলাকে ঘিরে ইতোমধ্যেই লোকদের আনাগোনা শুরু হয়েছে। এবারও মেলার নামে যে এসব অপসংস্কৃতি চলছে, এতে আমাদের পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে। দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
এদিকে মহাস্থান মাজার এলাকায় গাঁজা বা অসামাজিক কার্যকলাপ যাতে না হয়, সেজন্য পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। হযরত শাহ সুলতানের মাজারের পবিত্রতা রক্ষার্থে বৈশাখী মেলায় কোনো প্রকার গাঁজা, মদ, লটারি, জুয়া ও মাদক সেবন ও বিক্রি করতে দেওয়া হবে না। এজন্য বুধবার মহাস্থান মাজার মসজিদ কমিটি ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে প্রশাসনের সুধী সমাবেশ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব বন্ধে প্রচারণাও চলছে।
অন্যদিকে মাজার জিয়ারতকারী মুসল্লিরা সারারাত জেগে ইবাদত-বন্দেগি করবেন। মেলাকে ঘিরে মহাস্থান মাজারের চতুর্পাশে বিচিত্র আলোকসজ্জায় সাজানো হয়েছে। এলাকাবাসী বলছেন, বৈরী আবহাওয়া না হলে মহাস্থান মাজার এলাকায় লাখো মানুষের সমাগম হবে।
শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহীনুজ্জামান বলেন, মহাস্থানগড় হযরত শাহ সুলতানের বার্ষিক ওরস উপলক্ষে মাদক, অসামাজিক কার্যকলাপ, চুরি, ছিনতাই ও জুয়া প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থাকবে সর্বাত্মক সজাগ। মেলাকে কেন্দ্র করে আগত লোকজনের নিরাপত্তায় পোশাকধারী ও সাদা পোশাকে পুলিশ, ভ্রাম্যমাণ ম্যাজিস্ট্রেট সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন। মাজার ও মসজিদ এলাকায় শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান ছাড়া অন্য কিছু হতে দেওয়া হবে না। সেজন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুরো এলাকা সিসি ক্যামেরার নজরদারিতে থাকবে।
তিনি আরও জানান, শান্তিপূর্ণভাবে বৈশাখী মেলা ও উৎসব শেষ করতে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা কন্ট্রোল রুম মহাস্থান ডাকবাংলোয় বসানো হয়েছে।
মাদক সেবন ও ব্যবসা বিষয়ে জানতে চাইলে বগুড়া জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা বলেন, আমরা দ্রুত অভিযান চালাব এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
জুয়েল হাসান/এমবি