৪২ ডিগ্রি ছুঁইছুঁই
চুয়াডাঙ্গায় খরতাপে অস্থির জনজীবন

ফেরদৌস ওয়াহিদ, চুয়াডাঙ্গা
প্রকাশ: ১১ মে ২০২৫, ১৬:৩২

ছবি : বাংলাদেশের খবর
চুয়াডাঙ্গায় চলমান তীব্র তাপপ্রবাহে নাকাল হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। রোববার (১১ মে) বিকেল ৩টায় জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে আর্দ্রতা মাত্র ২৬ শতাংশে নেমে আসায় গরমের তীব্রতা আরও বেশি অনুভূত হচ্ছে।
আবহাওয়া দপ্তরের তথ্যমতে, গত বৃহস্পতিবার (৮ মে) থেকে প্রতিদিনই চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে। শনিবার তা পৌঁছেছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা 'অতি তীব্র তাপপ্রবাহ' হিসেবে চিহ্নিত। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত এই অবস্থার তেমন পরিবর্তন নেই।
গরমে শহরের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ছন্দপতন ঘটেছে। প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। তবে খেটে খাওয়া মানুষজন জীবিকার তাগিদে রাস্তায় নামলেও পড়ছেন চরম ভোগান্তিতে। অনেকে ছায়া খুঁজে আশ্রয় নিচ্ছেন, কেউ শরবত বা ডাবের পানি খেয়ে কিছুটা স্বস্তি পাওয়ার চেষ্টা করছেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, তাপজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর চাপ বেড়েছে শিশু ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডে। শিশু ওয়ার্ডের ২৫টি শয্যার বিপরীতে ভর্তি ৪৯ জন, আর ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ৫২ জন রোগী চিকিৎসাধীন। বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে ৫০০ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।
চিকিৎসক ডা. আব্দুল কাদের বলেন, ‘ডায়রিয়া ও পানিশূন্যতার রোগী বাড়ছে। সবার প্রতি পরামর্শ—পর্যাপ্ত পানি পান করুন, স্যালাইন খেতে ভুলবেন না।’
তাপপ্রবাহের প্রভাব পড়েছে কৃষি, পশু পালন ও বাজারে। অতিরিক্ত গরমে গবাদিপশু মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। মাঠে সবজি শুকিয়ে যাচ্ছে দ্রুত, বিক্রেতারা পড়েছেন লোকসানে। বাজারে ক্রেতা কম থাকায় বিক্রিও কমে গেছে।
বেসরকারি চাকরিজীবী আবু সাঈদ বলেন, ‘প্রশাসন গাছ লাগানোর কথা বললেও কার্যকর উদ্যোগ দেখা যায় না। এ রকম পরিস্থিতি সামাল দিতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা দরকার।’
আবহাওয়া পর্যবেক্ষক আলতাফ হোসেন বলেন, ‘বৃষ্টি না হলে কয়েক দিন এই তাপপ্রবাহ চলতেই পারে।’