Logo

সারাদেশ

গাজীপুরে ছুরিকাঘাতে আহত যুবকের মৃত্যু, প্রতিপক্ষের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

Icon

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১ মে ২০২৫, ১৬:৪১

গাজীপুরে ছুরিকাঘাতে আহত যুবকের মৃত্যু, প্রতিপক্ষের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

ছুরিকাঘাতে নিহত যুবক নাজমুল। ছবি : বাংলাদেশের খবর

গাজীপুরের শ্রীপুরে ধানখেতে পানি দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই কৃষকের মধ্যে হাতাহাতির জেরে ছুরিকাঘাতে নাড়িভুঁড়ি বিচ্ছিন্ন যুবকের নয়দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার (৯ মে) রাতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ  হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (১০ মে) রাতে জানাজার নামাজ শেষে প্রতিবাদে অভিযুক্তদের তিন বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছেন উত্তেজিত জনতা। আগুনে তিন বাড়ির ১০টি কক্ষের সকল মালামাল ও ঘরে থাকা মোটরসাইকেল, অটোরিকশা ও ৩০ মণ ধান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

শনিবার রাত ১১টার দিকে উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের যোগীর সীট গ্রামের গুজারমোড় এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।

নিহত নাজমুল উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নরে জুগিরসিট গ্রামের মোছলেম উদ্দিনের ছেলে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ধানখেতে পানি ছাড়া নিয়ে দ্বন্দ্বে ছুরিকাঘাতে নাড়িভুঁড়ি বিচ্ছিন্ন যুবকের চিকিৎসাধীন অবস্থায় নয়দিন পর হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে। এর আগে,গত ১মে দুপুরে ধান ক্ষেতে পানি ছাড়া নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এ ঘটনায় ওই দিন রাতে আল আমিন ও তার সহযোগীরা নাজমুলকে ছুরিকাহত করেন। খোঁজ পেয়ে তাকে রক্ষা করতে গেলে নাজুমলের বাবা মোছলেম উদ্দিন ও মা ফেরদৌসীও ছুরিকাহত হন। ছুরির আঘাতে নাজমুলের পেটের  নাড়িভুঁড়ি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। 

গুরতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে  শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এরপর আশঙ্কাজনক অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য নাজমুল ও তার বাবাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। টানা ৯ দিন চিকিৎসা নেওয়ার পর শুক্রবার রাত ১০ টার দিকে সেখানে নাজমুলের মৃত্যু হয়। শনিবার রাতে নিহত নাজমুলের গ্রামের বাড়িতে  জানাজা শেষে উত্তেজিত জনতা অভিযুক্তদের তিনটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছেন।

নাজমুলের চাচাতো ভাই হিমেল বলেন, ‘ধান খেতে পানি ছাড়ার মতো তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আল আমিন নামের এক যুবক ধারালো ছুরি দিয়ে আমার চাচা এবং ভাই নাজমুলকে উপর্যুপরি আঘাত করে।এতে নাজমুলের পেটের নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে গেছে। ৯ দিন হাসপাতালে থাকার পর মৃত্যু হয়েছে।’

নিহত নাজমুলের স্ত্রী খাদিজা খাতুন জানান, ‘স্বামী ও তিন সন্তান নিয়ে সংসারটা ভালোই চলছিল।তার স্বামী গাজীপুর সদর উপজেলার বাঘের বাজার এলাকায় ওয়েলডান অ্যাপারেল লিমিটেড কারখানায় লিংকিং সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করতেন। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছুরিকাঘাতে নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে ৯  দিন হাসপাতালে ছিলেন। শুক্রবার (৯ মে) মারা যান। আমার স্বামীর হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’

এ ঘটনায় অভিযুক্ত আল আমিনের দাদী সায়মন নেছা কন্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার নাতি দোষ করলে তার শাস্তি হবে। কিন্তু আমার বসতঘরে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। এতে  তিনটি ঘরের ১০টি কক্ষের সকল মালামালসহ ঘরে থাকা মোটরসাইকেল, অটোরিকশা,ধান পড়ে ছাই হয়ে গেছে।’

কাওরাইদ ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড সদস্য মুমিন বলেন, ‘তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছুরিকাহত হয়ে নয়দিন পর হাসপাতালে নাজমুলের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার।’

এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মন্ডল বলেন, ‘অভিযুক্তদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের খবর পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

আতাউর রহমান সোহেল/এমআই

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর