Logo

সারাদেশ

অদম্য মেধাবী

পা দিয়ে লিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধা তালিকায় মানিক

Icon

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১ মে ২০২৫, ২১:০৬

পা দিয়ে লিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধা তালিকায় মানিক

ছবি : সংগৃহীত

জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। নেই দুটি হাত, একটি পা অন্যটির চেয়ে খাটো। কিন্তু প্রবল ইচ্ছাশক্তি আর অধ্যবসায়ে সেই সীমাবদ্ধতাকে জয় করেছেন কুড়িগ্রামের মানিক রহমান। এসএসসি ও এইচএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পাওয়া এই শিক্ষার্থী এবার হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) ‘বি’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ১৯২তম স্থান অর্জন করেছেন।

রোববার (১১ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হলে মানিকের এ সাফল্যে পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও পাড়া–প্রতিবেশীদের মধ্যে আনন্দ-উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে।

মানিক রহমান কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার সদর ইউনিয়নের চন্দ্রখানা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি স্থানীয় জছি মিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২২ সালে এসএসসি এবং নীলফামারীর সৈয়দপুর সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে ২০২৪ সালে এইচএসসি পাস করেন। উভয় পরীক্ষায় তিনি বিজ্ঞান বিভাগ থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ অর্জন করেন।

শুধু এসএসসি-এইচএসসি নয়, মানিক এর আগে পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষাতেও গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছেন। পেয়েছেন ট্যালেন্টপুল বৃত্তিও। ছোটবেলা থেকেই পা দিয়ে লেখা শেখেন তিনি। এখন মোবাইল ব্যবহার ও কম্পিউটার টাইপিংয়েও তিনি দক্ষ।

মানিকের বাবা মিজানুর রহমান একজন ব্যবসায়ী, মা মরিয়ম বেগম সহকারী অধ্যাপক। মানিক তাদের দুই ছেলের মধ্যে বড়। ছোট ছেলে মাহীম নবম শ্রেণিতে পড়ে। মানিকের জন্মের পর থেকেই তাঁরা ছেলেকে কখনো প্রতিবন্ধী মনে করেননি, বরং তাকে আত্মনির্ভরশীল হিসেবে গড়ে তুলতে চেষ্টা করেছেন।

মানিকের মা মরিয়ম বেগম বলেন, ‘দুটি হাত নেই, এক পা ছোট হলেও আমরা মানিককে কখনো দমে যেতে দিইনি। পা দিয়ে লেখার অভ্যাস করিয়ে দিয়েছিলাম। ওর লেখাও অনেক সুন্দর। আজ সে যে জায়গায় পৌঁছেছে, তা আমাদের জন্য অনেক গর্বের।’

নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে মানিক রহমান বলেন, ‘দুটি হাত না থাকলেও আল্লাহর রহমত, বাবা-মা ও শিক্ষকদের অনুপ্রেরণায় আমি প্রতিটি পরীক্ষায় ভালো ফল করেছি। এবার হাবিপ্রবিতে মেধা তালিকায় ১৯২তম হয়েছি। সবার দোয়া চাই—আমি যেন একজন দক্ষ কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হতে পারি।’

ফজলুল করিম ফারাজী/এআরএস

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর