ডাক্তার না হয়েও প্রেসক্রিপশন লেখেন জিতেন্দ্র, অন্য ভাই দেন ওষুধ

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ মে ২০২৫, ২১:২৩
-6820c0eed84d1.jpg)
টাঙ্গাইলের সখীপুরে এমবিবিএস ডাক্তার না হয়েও এবং কোনো ধরনের বৈধ লাইসেন্স না থাকা সত্ত্বেও প্রেসক্রিপশন লিখে ওষুধ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শ্রী জিতেন্দ্র বর্মন নামে এক পল্লী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে।
স্থানীয়রা বলেন, প্রায় ১৫ বছর ধরে উপজেলার মহানন্দপুর বাজারে দুই কক্ষের একটি দোকান ভাড়া নিয়ে সামনের অংশে ফার্মেসির ব্যবসা করছেন শ্রী লোকনাথ বর্মন। আর পেছনেই চেম্বার খুলে নিয়মিত রোগী দেখেন বড় ভাই শ্রী জিতেন্দ্র বর্মন। জিতেন্দ্র বর্মন প্রেসক্রিপশনে ওষুধ লিখে ছোট ভাইয়ের কাছে পাঠান, আর সেই প্রেসক্রিপশন দেখে ছোট ভাই লোকনাথ বর্মন রোগীর কাছে ওষুধ বিক্রি করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত বৃহস্পতিবার (৮ মে) উপজেলার মহানন্দপুর বাজারে সরেজমিনে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।
স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা বলছেন, জিতেন্দ্র বর্মন ডিগ্রি বা লাইসেন্সধারী কোনো চিকিৎসক না হয়েও নিজের নামে বানানো প্যাডে প্রেসক্রিপশন লেখেন। প্রেসক্রিপশনের জন্য কোনো টাকা না নেওয়ায় গ্রামের সহজ-সরল অনেক জটিল-কঠিন রোগীরা তাকে ভালো এবং মানবিক ডাক্তার মনে করে তার কাছ থেকে ওষুধ লিখে নিচ্ছেন। ডাক্তার না হয়েও এভাবে চিকিৎসা দেওয়ায় যেকোনো বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, তারা দুই ভাই উপজেলার তৈলধারা বাজারে আরও একটি ফার্মেসি খুলেছেন। সেখানেও সন্ধ্যার পরে নিয়মিত রোগী দেখেন শ্রী জিতেন্দ্র বর্মন। আর মহানন্দপুর বাজারে দেখেন প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে একাধিক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, লোকজন তাকে এমবিবিএস ডাক্তার ভাবছে। অথচ তিনি প্রকৃত চিকিৎসকই না। গ্রামের সাধারণ মানুষ বিষয়টি বুঝতেও পারছে না। মানুষের সাথে প্রতারণা করে ওষুধের ব্যবসা করছেন তারা দুই ভাই।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শ্রী জিতেন্দ্র বর্মন বলেন, আমি গ্রামের মানুষদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে থাকি। কাকে কোন ওষুধ দিচ্ছি এটা আমার মনে থাকে না। এ কারণেই মূলত প্রেসক্রিপশনে লিখে দিই। ১০ থেকে ১২ বছর ধরে এভাবে তিনি প্রেসক্রিপশন লিখে ওষুধ দিচ্ছেন বলেও স্বীকার করেন।
তিনি বলেন, আমার পল্লী চিকিৎসকের সার্টিফিকেট আছে। তবে ছোট ভাই লোকনাথ বর্মন জিতেন্দ্র বর্মনের পল্লী চিকিৎসকের সার্টিফিকেট নেই বলে জানান। তার ফার্মাসিস্টের সার্টিফিকেট আছে। তিনি বলেন, ফার্মাসিস্টরা প্রেসক্রিপশন লেখার বৈধতা রাখে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা রেহানা পারভীন বলেন, ফার্মাসিস্টের সার্টিফিকেট দিয়ে কেউ প্রেসক্রিপশন লিখতে পারে না। বিষয়টি তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এম/এমএম/বিএইচ